বই নিয়ে যে মেলা তাই বইমেলা। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারিতে চলছে বইমেলা। মেলায় গেলে আমরা দেখতে পাবো নানা রকম বই। সে বইয়ের মলাট খুলে দেখতে পাবো পৃষ্ঠায় পৃষ্ঠায় লেখা আছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের কথা, আছে মজার মজার গল্প কাহিনী ছড়া।
এবারের বইমেলায় শিশুদের জন্য প্রকাশিত হয়েছে অনেক ভালো ভালো বই। এরমকম কিছু বইয়ের খবর-
ছোট্ট রাজপুত্র
মূল লেখক: আতিয়ঁ দে সাঁ এক্সোপেরি, অনুবাদক: আসাদ চৌধুরী, প্রকাশনী: বাংলাপ্রকাশ, ক্যাটাগরি: নভেলা, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: আতিয়ঁ দে সাঁ এক্সোপেরি, মূল্য: ৩৫০ টাকা
দ্য লিটল প্রিন্স বা ছোট্ট রাজপুত্র, পৃথিবীর সর্বাধিক অনুদিত বইয়ের একটি।শিশুদের জন্য এ নভেলা লিখেছেন ফরাসি লেখক আতিয়ঁ দে সাঁ এক্সোপেরি।
গোলাপের সঙ্গে অভিমান করে নিজের গ্রহ ছেড়ে পৃথিবীতে চলে আসে ছোট্ট রাজপুত্র। পথে দেখা হয় বহু রকম মানুষের সঙ্গে। এক বণিকের সঙ্গে দেখা হলো যে খালি আকাশের তারা গুনে চলে। সেই নাকি ওই তারাগুলোর মালিক। দেখা হলো এক রাজার সঙ্গে, তার নির্দেশ পালন না করলে ভীষণ রাগ করে। পাওয়া গেলো এক ভূগোলবিদকে। ক্ষণস্থায়ী কোনকিছুর গুরুত্ব নেই তার কাছে।
পৃথিবীতে এসে রাজপুত্রের দেখা হলো আরও পাঁচ হাজার গোলাপের।তখন সে বুঝলো তার ফেলে আসা গোলাপ ফুলটি অনন্য।তারপর দেখা হলো এক শেয়ালের সঙ্গে, যে তাকে শেখায় পোষ মানাবার যাদুকরী বিদ্যা।
ছোট্ট রাজপুত্রের সঙ্গে আরও দেখা হলো এক হাঁটুরের, যে বেচে তৃষ্ণামেটানো বড়ি। দেখা হলো শেকড়হীন মানুষদের সঙ্গে যারা ছুটে চলে, যারা খালি যায় আর আসে। দেখা হলো সাপের সঙ্গে যার তীব্র বিষ তাকে আবার পৌঁছে দিতে পারে তার নিজের গ্রহতে, তার গোলাপের কাছে।
মিহিরুণের বন্ধুরা
লেখক: সেলিনা হোসেন, প্রকাশনী: শামীম পাবলিশার্স, ক্যাটাগরি: শিশুতোষ উপন্যাস,
প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: দেলোয়ার রিপন, মূল্য: ৩০০ টাকা
মিহিরুণ একটি অসাধারণ মেয়ে। সবাই তাকে ডাকে ‘মিহি’ বলে। মিহি মানে মসৃণ। প্রকৃতিকে সে দেখতে পায় স্বপ্নের আলোয়। মিহিরুণের অসাধারণ ক্ষমতা। বন্ধুদের সহায়তায় সে সুন্দরবনের ওপর দিয়ে উড়ে বেড়াতে পারে। সুন্দরবনের বাঘ মিহির বাবাকে খেয়ে ফেললেও বাঘের বাচ্চা মারা গেলে সে কষ্ট পায়। বড়ভাই সুরুজদিকে সুন্দরবনের ডাকাতরা ধরে নিয়ে গেলে সে তার বন্ধুদের নিয়ে তাকে উদ্ধার করে। ছোট্ট মিহি কারখানার কাজ বন্ধ করে দাবি আদায় করে। হাড়গোড় কাকুর জাদুঘর মেরামত করে দেয় সে। মিহিরুণের এমন নানা ঘটনা নিয়ে সাজানো হয়েছে উপন্যাসটি।
গুপ্তধন পেলে
লেখক: মঈনুল আহসান সাবের, প্রকাশনী: পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, ক্যাটাগরি: গল্প, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: মোস্তাফিজ কারিগর ও হিরন্ময় চন্দ, মূল্য: ১৫০ টাকা
‘গুপ্তধন পেলে’ কয়েকটি গল্পের সংকলন। গল্পগুলোতে রয়েছে শিশু-কিশোদের দেশপ্রেম, ন্যায়বোধ ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার দৃঢ়তা।
লেখক মঈনুল আহসান সাবের বইটি উৎসর্গ করেছেন তার পোষা বেড়ালকে। তিনি লিখেছেন, “পুটুশ নামের একটা বেড়াল আমাদের সঙ্গে পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ছিলো। ও ছিলো খুব সুন্দর আর খুব বুদ্ধিমান।... সেই বেড়ালটা যে আমাদেরই একজন ছিলো, কিছুদিন আগে মারা গেলো। আমরা জানি, ওর কথা আমরা কোনদিন ভুলবো না।”
জলপাই রঙের একটি হেলমেট আর একজোড়া বুট
লেখক: মিনার মনসুর, প্রকাশনী: পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, ক্যাটাগরি: গল্প, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: কাজল চৌধুরী, মূল্য: ১৫০ টাকা
বইটিতে রয়েছে ছয়টি গল্প- ‘মা ও ময়না’, ‘একটি শামুকের গল্প’, ‘সাপটার মুখে হাসি ফুটল’, ‘যদি রোজাটা ভেঙে যায়!’, ‘শিল্পী, যাস নে’ ও ‘জলপাই রঙের একটি হেলমেট আর একজোড়া বুট’
গল্পগুলোতে মিলু, অনন্ত, শিল্পী, খোকন, মিনু, দীপু, অন্তু আর সবুজ নামের যে শিশু-কিশোরদের ছবি রয়েছে তা বিশেষ কোন শিশু-কিশোরের নয়। সেগুলো আবহমান বাংলার সব শিশু-কিশোর ও তাদের ছেলেবেলা। শহরের শিশুরা যে ইটের দেয়ালে আটকে থাকে তাদের একটু গ্রামে ঘুরিয়ে নিয়ে আসার জন্য এ বই, যেন একটু নিঃশ্বাস।
মায়াবী সেই ভূতকন্যা
লেখক: মুস্তাফিজ শফি, প্রকাশনী: পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স, ক্যাটাগরি: গল্প, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: রজত, মূল্য: ১৫০ টাকা
শিশুটি পাখি হয়ে উড়তে চাইত। ফুল হয়ে উড়তে চাইত। পৃথিবীর সব আনন্দকে বুকে নিয়ে মন খুলে হাসতে চাইত। এরকম একটি শিশু অসুস্থ হয়ে মারা যাবে এটা মানতে রাজি নয় মায়াবী ভূতকন্যা টুনটুন। সে তার জীবন দিয়ে শিশুটিকে বাঁচাতে চায়। এই বইয়ের ভূতগুলো এরকমই। ভূত হলেও তারা ভয়ঙ্কর নয়, বরং বন্ধু হিসেবে হাজির হয় শিশুদের সামনে।
খালি হাসি পায়
লেখক: তাপস রায়, প্রকাশনী: কালান্তর, ক্যাটাগরি: শিশুদের উপযোগী কৌতুক, প্রচ্ছদ ও অলঙ্করণ: মামুন হোসাইন, মূল্য: ১২০ টাকা
হাসতে সবাই ভালোবাসে। বিশেষ করে শিশুদের মুখে আমরা সব সময় হাসি দেখতে চাই। ওরা হাসলে আকাশের চাঁদ হাসে, বাগানে ফুল ফোটে, পাখি ডাকে, আনন্দে ভরে ওঠে চারপাশ। শিশুদের উপযোগী এমন নানা হাসির কৌতুক নিয়ে সাজানো হয়েছে এ বইটি।
বইয়ের একটি কৌতুক এমন-
আমার বাড়িতে ইঁদুরের খুব উৎপাত শুরু হয়ে গেছে।
একটা ইঁদুর মারার কল কিনে ফেল।
আমার কাছে টাকা নেই।
ঠিক আছে, আমারটা তোকে দেবো। তুই রাতে এক টুকরো মাংস দিয়ে রেখে দিবি।
কিন্তু আমার বাড়িতে মাংস নেই।
তাহলে রুটি রেখে দিবি।
আমার বাড়িতে রুটিও নেই।
তাহলে তোর বাড়িতে ইঁদুরটা করছেটা কী!