পদ্মায় বিলীন এক স্কুল ও তার শিক্ষকের গল্প

কুষ্টিয়া সদর থানার হাটশহরিপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই চরভবানীপুর গ্রাম। শিক্ষার উপকরণ বলতে তখন এখানে মাত্র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল যার নাম ‘চরভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়’।

মো. ইয়াকুব আলীমো. ইয়াকুব আলী
Published : 6 Oct 2022, 07:46 AM
Updated : 6 Oct 2022, 07:46 AM

চরভবানীপুর। নামটার মধ্যেই এলাকার একটা পরিচয় পাওয়া যায়। প্রমত্তা পদ্মা নদী কুষ্টিয়া এবং পাবনাকে আলাদা করে পশ্চিম থেকে পুবে বয়ে চলেছে।

যাওয়ার পথে যখন গতি পরিবর্তন করে তখন এক পাড় ভাঙে আর অন্যপাড়ে চর জেগে উঠে। ঠিক এমনই অনেকগুলো চরের সমাহারে এই পলিবিধৌত এলাকাগুলো গঠিত। পাশেই আছে চররঘুনাথপুর, চরঘোষপুরের মতো আরও কিছু চর। সরকারি মৌজা অনুযায়ী এলাকাগুলো কুষ্টিয়া সদরের অন্তর্গত হলেও এগুলো পদ্মা নদীর অপর পাড়ে পাবনার দিকে অবস্থিত। দৈনন্দিন কাজের কেন্দ্রবিন্দু পাবনা হলেও প্রশাসনিক সব কাজকর্ম এখনও কুষ্টিয়া থেকেই পরিচালিত হয়। 

কুষ্টিয়া সদর থানার হাটশহরিপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই চরভবানীপুর গ্রাম। শিক্ষার উপকরণ বলতে তখন এখানে মাত্র একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল যার নাম ‘চরভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়’। সেখানে মাত্র তিনজন শিক্ষক মোট পাঁচটি ক্লাসের পাঠ পরিচালনা করেন। চরভবানীপুরেরই আফসার উদ্দিন এবং নজরুল ইসলাম স্থায়ী শিক্ষক হিসেবে আছেন। এর বাইরে বিভিন্ন সময় কুষ্টিয়া থেকে বিভিন্ন শিক্ষক পাঠানো হলেও কেউই বেশিদিন থাকেন না। কারণ কুষ্টিয়া শহর থেকে গড়াই নদী নৌকায় পার হতে হয়। তারপর হরিপুরের দীর্ঘ রাস্তায় রিকশা-ভ্যানই তখন পর্যন্ত একমাত্র বাহন, কিন্তু ভাড়া বাঁচাতে সবাই হেঁটেই পার হয়ে যান।

প্রতি বছর কুষ্টিয়া থেকে একজন করে হেডস্যার নিয়োগ পেয়ে আসেন আর কিছুদিন থেকে অন্য কোথাও বদলি নিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। এই প্রান্তিক চরের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। চাষার ছেলেমেয়েরা চাষাই হবে এটাই যেন অমোঘ নিয়তি।

হরিপুর পার হয়ে পথে পড়ে প্রমত্তা পদ্মা নদী। বর্ষার মৌসুমে পদ্মার ঢেউয়ের গর্জন দূর দূরান্ত থেকে শোনা যায়। স্থানীয় লোকেদের অভিমত- তখন পদ্মা বলতে থাকে, আমি এখন বেসামাল তোমরা সাবধান হও! এসময় খেয়া পারাপার কমে যায়। নিতান্ত দরকার না হলে কেউই নদী পার হন না। আর অন্যান্য সময়ে পদ্মার বুক জুড়ে থাকে ধুধু বালির চর। তখন পদ্মা নদী পাড়ি দেওয়া আরেক কষ্টের ব্যাপার। বালির মধ্যে হেঁটে যাওয়া ছাড়া আর উপায় থাকে না। এমনকি তখন সাইকেলে নিয়ে গেলেও সাইকেল ঠেলার বাড়তি ভোগান্তি সহ্য করতে হয়।

চরের মানুষ হেঁটেই পার হয়ে যায়। তখন পর্যন্ত জুতো ব্যবহারের চল সেইভাবে গড়ে উঠেনি। বেশিরভাগ মানুষই হাট থেকে গাড়ির টায়ারের তৈরি এক ধরণের ইলাস্টিক স্যান্ডেল কিনে পরেন, কারণ এই স্যান্ডেল সহজে ছেঁড়ে না। আর একটু স্বচ্ছলরা প্লাস্টিকের ফিতাওয়ালা স্পঞ্জের স্যান্ডেল পরেন। কিন্তু চর পার হওয়ার সময় স্যান্ডেল খুলে বগলে নিয়ে হাঁটতে হয়। কারণ তা না হলে হেঁটে এগুনো যায় না। বালিতে সামনের পা দিয়ে পেছনের পা এগিয়ে আনতে আনতে সামনের পা কিছুটা পিছিয়ে যায়। এভাবে হাঁটার গতি শ্লথ হয়ে আসে। পায়ে স্যান্ডেল থাকলে হাঁটতে তাই অসুবিধা হয়। আর পা ফেলতে একটু এদিক ওদিক হলেই স্যান্ডেলের ফিতা ছিঁড়ে যাওয়ার উপক্রম হয়।

রোদের দিনে বালির মধ্যে এভাবে হাঁটতে গেলে বালির গরমে পায়ের পাতা পুড়ে কালো হয়ে যায়। বড়রা এই পুড়ে যাওয়া সহ্য করতে পারলেও ছোটদের ভীষণ কষ্ট হয়। তাই ছোটরা সাধারণত মায়ের কোলে বা বাবার কাঁধে চড়ে এই বালির পথ পার হয়। বালির ফাঁকে ফাঁকে একটু শক্ত মাটির জায়গা পেলে তখন বাবা-মায়েরা শিশুদের একটু নামিয়ে বিশ্রাম নিয়ে নেন। কেউই বিলাসিতা করে ছাতা ব্যবহার করেন না, কারণ তাতে একটা হাত জোড়া হয়ে যায়। আর চরে হঠাৎ দমকা হাওয়ায় বয়, যা ছাতা উড়িয়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। হরিপুরের সীমান্তে পদ্মার পারেই আছে জোড়া বটগাছ। চর পার হয়ে এসে সবাই সেই বটগাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেয় আর আশপাশের বাড়ি থেকে পানি চেয়ে নিয়ে খেয়ে তৃষ্ণা মেটায়।  

চরভবানীপুরে তখনও বিদ্যুতের ছোঁয়া লাগেনি। সন্ধ্যা হলেই ঘরে ঘরে কুপি বাতি আর হারিকেন জলে উঠে। অমাবশ্যার দিনগুলোতে রাতের বেলা তেমন খেলাধুলা না হলেও চাঁদ রাতগুলোতে পাড়ার মোড়ে মোড়ে আড্ডা এবং খেলাধুলা জমে উঠে। এখানকার ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে তেমন একটা উদ্বিগ্ন মনে হয় না অভিভাবকদের। কারণ গ্রামে আছে মাত্র একটা প্রাথমিক বিদ্যালয়। সেখানে আছে একটা চার চালা টিনশেডের ঘর যার বেড়াও টিনের। সেই ঘরে ক্লাস হয় প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির। মাঝে একটা টিনের বেড়া দেওয়া। নিচে বালির মেঝে। দরজা জানালার জায়গায় ফ্রেমগুলো আছে, কিন্তু কোন এক অজানা কারণে পাল্লাগুলো লাগানো হয়নি। পড়া না পারলে বা দুষ্টামি করলে স্যারেরা যখনই ছাত্রছাত্রীদের তাড়া দেন তারা বইগুলো হাতে নিয়ে জানালার ফাঁক গলে বেরিয়ে যায়। সেদিনের মতো আর ক্লাসে ফিরে আসে না।

দ্বিতীয় ভবনটা একটা লম্বা দোচালা টিনশেডের ঘর,কিন্তু ইটের দেয়াল দেওয়া। সেখানে মাঝে তিনটা কাঠের দেয়াল দিয়ে চারটা কক্ষে ভাগ করা। এক কোণার ছোট কক্ষটি অফিস কক্ষ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। অন্য তিনটিতে তৃতীয়, চতুর্থ এবং পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হয়। সর্বমোট তিনজন শিক্ষক আর পাঁচটা ক্লাস। তবে প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাস আগেই শেষ হয়ে যায়। তাই শিক্ষকরা তিনজন ভাগাভাগি করে তিন ক্লাসের দায়িত্ব নিতে পারেন। এভাবে কোনমতে জোড়াতালি দিয়ে পাঠ্যক্রম চালিয়ে নেওয়া হয়। প্রতি বছর কুষ্টিয়া থেকে একজন করে হেডস্যার নিয়োগ পেয়ে আসেন আর কিছুদিন থেকেই অন্য কোথাও বদলি নিয়ে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন। এই প্রান্তিক চরের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে তাদের কোন মাথাব্যথা নেই। চাষার ছেলেমেয়েরা চাষাই হবে এটাই যেন অমোঘ নিয়তি।

পাঠ্যবইয়ের বাইরে যে গল্পের বই বলে কিছু বই আছে পৃথিবীর বুকে সেটাও তারা জানতে পারলো বাগচী স্যারের কল্যাণে। স্যার শহরে গিয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিয়ে আসলেন একগাদা গল্পের বই। কি চমৎকার বাহারি রঙের সেই বইগুলো! বইয়ের ভেতরে চমকপ্রদ সব গল্প!

এমনই একবার হেডস্যার হিসেবে নিয়োগ পেয়ে একজন স্যার আসলেন। এই মানুষটার গাত্রবর্ণ গ্রামের লোকের ভাষায় যেন দুধে-আলতা। কারণ তখন পর্যন্ত গ্রামের মানুষদের কেউই এমন ফর্সা মানুষ দেখেনি। জন্মের সময় চরের কেউ কেউ এমন ফর্সা থাকলেও বড় হয়ে উঠার সাথে সাথে রোদে পুড়ে আর বৃষ্টিতে ভিজে সবার গায়ের রঙই মোটামুটি তামাটে একটা রূপ পায়। সেই নতুন স্যারের নাম রতন কুমার বাগচী। স্বাস্থ্যও একটু ভালো। গ্রামের স্কুলে পড়াতে এসে উনি গ্রামেই থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। কারণ উনার নিজের বাড়ি শৈলকুপাতে, যেটা ঝিনাইদহ জেলাতে অবস্থিত। 

গ্রামের একটা বাড়িতে একটা ঘর ভাড়া নিয়ে তিনি থাকা শুরু করলেন। তখন পর্যন্ত এই মানুষটা কুমার ছিলেন, তাই হয়তোবা খুব বেশি ঘরের টান অনুভব করেননি। অথবা চরের মানুষের অকৃত্রিম ভালোবাসায় আটকা পড়ে গেলেন। গ্রামের পাঠশালাতে তখন পর্যন্ত বই বলতে বোর্ডের বইগুলোই ছিল সম্বল। প্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিতে মাত্র একটা বই। তার মধ্যেই বাংলা ইংরেজি এবং গণিতের প্রাথমিক পাঠ। তৃতীয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ছয়টা বই। বাংলা বইয়ের নাম ‘আমার বই’। ইংরেজি বইয়ের নাম ‘ইংলিশ ফর টুডে’। গণিত বইয়ের নাম ছিল ‘গণিত’। সাথে ছিল পরিবেশ পরিচিতি সমাজ আর বিজ্ঞান। ধর্ম বইয়ের নাম ছিল ‘ইসলাম ধর্ম শিক্ষা’।

বোর্ডের নির্ধারিত বইয়ের বাইরে যে পৃথিবীতে আর কোন বই থাকতে পারে এমন ধারণাই চরভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ছিল না। বাংলা ব্যাকরণ, ইংরেজি গ্রামারের নাম তখনও তারা শুনেনি। স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ বা ভাউয়েল কনসোনেন্টের সামান্যতম ধারণাও তাদের ছিল না। ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের নামের ইংরেজি বানান পর্যন্ত জানতো না। এমন একটা পরিবেশের যোগদান করলেন শিক্ষক রতন কুমার বাগচী। এরপর থেকে অবস্থা বদলে যেতে শুরু করলো। প্রত্যেক ছাত্র তাদের নামের ইংরেজি বানান শিখে গেলো বাগচী স্যারের কাছ থেকে।

পাঠ্যবইয়ের বাইরে যে গল্পের বই বলেও কিছু বই আছে পৃথিবীর বুকে সেটাও তারা জানতে পারলো বাগচী স্যারের কল্যাণে। স্যার শহরে গিয়ে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিয়ে আসলেন একগাদা গল্পের বই। কি চমৎকার বাহারি রঙের সেই বইগুলো! বইয়ের ভেতরে চমকপ্রদ সব গল্প! চরভবানিপুরের ছাত্রছাত্রীরা ছোটবেলা থেকে দাদা-দাদি, নানা-নানি আত্মীয়স্বজনের কাছে কিসসা, শ্লোক (ধাঁধাঁ) শুনে শুনে বড় হয়েছে। তারা দেখলো গল্পের বইয়েও ঠিক তেমনই সব গল্প আছে। আবার গল্পের সাথে সামঞ্জস্য রেখে আঁকা আছে রঙিন ছবি। আবার কোন কোন বইয়ের চরিত্রের পাশে বক্তব্য লেখা। কি তাজ্জব ব্যপার! দেখে মনে হয় এই চরিত্রগুল যেন এখনই বইয়ের পাতা ফুঁড়ে বের হয়ে এসে চলাফেরা শুরু করবে।

তখনকার দিনে পঞ্চম শ্রেণির পরীক্ষা নিজেদের স্কুলেই হতো। হঠাৎ এক বছর নিয়ম হলো সেবার থেকে বোর্ড পরীক্ষা হবে। সবাইকে ইউনিয়নের ঠিক করে দেওয়া কেন্দ্রে গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে। সব ছাত্রছাত্রী দলবেঁধে হাটশহরিপুর রওয়ানা হয়ে গেলো। সেই প্রথম তাদের নিজেদের গ্রামের বাইরে যাওয়া। এক ধরণের উত্তেজনায় তাদের মন ছেয়ে গেলো। কিন্তু যখন শহরের ছাত্রছাত্রীদের সাথে তাদের কথা হলো তারা বুঝতে পারলো তারা অনেক পিছিয়ে আছে, বিশেষ করে বাংলা এবং ইংরেজিতে। কারণ বাংলা ব্যাকরণ এবং ইংরেজি গ্রামারের তারা কিছুই জানে না। গ্রামে তাদের বাবা-মা তাদেরকে স্কুলে আসতে দেয়, কারণ প্রাথমিক শিক্ষা অবৈতনিক আর বইতো সরকার থেকেই দেয়। এর বাইরে আলাদাভাবে বই কিনতে হলে আর ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাতেই চাইবে না। যাই হোক, পরীক্ষার হলে এই বিষয়গুলোর উত্তর বাগচী স্যার সময়ে সময়ে এসে বলে দিয়ে যাচ্ছিলেন।

এমন পরিস্থিতিতেই একটা ব্যাচ পাশ করে বেরিয়ে গেলো স্কুল থেকে। আমি নিজে সেই ব্যাচের একজন অত্যন্ত সৌভাগ্যবান ছাত্র যে বাগচী স্যারের অকৃত্রিম স্নেহ পেয়েছিলো। আমার নামের ইংরেজি বানানও স্যারের ঠিক করে দেওয়া। ‘ইয়াকুব’ এর ইংরেজি বানান যেখানে সবাই ওয়াই এ কে ইউ বি লিখে স্যার বললেন তোমার নামের বানান হবে ওয়াই এ কিউ ইউ বি। এখন পর্যন্ত আমার নামের এই বানান অক্ষয় হয়ে আছে। পরবর্তীতে জগতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) সবখানেই এই বানান ব্যাবহার করা হয়েছে। এমনকি বাংলাদেশের পাসপোর্ট, এমনকি এখনকার অস্ট্রেলিয়ান পাসপোর্টেও বাগচী স্যারের এই বানান অক্ষত আছে। তাই বাগচী স্যার জড়িয়ে আছেন আমার জীবনের প্রতিটি পাতায় পাতায়। স্যারই আমাদের জীবন বদলে দেওয়ার প্রথম কারিগর।

সেই ১৯৯০ সালে চরভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পাশ করে বেরিয়ে জীবনের প্রবহময়তায় এখন আমি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে স্থায়ীভাবে বাস করছি। কিন্তু মনে মনে খুঁজে ফিরছিলাম বাগচী স্যারকে। আমার শুধু স্যারের নাম জানা ছিল আর স্যারের বাড়ি যে শৈলকুপাতে সেটা জানা ছিলো। হঠাৎই একদিন ফেইসবুকে চোখে পড়ে ‘শোলকুপো আঞ্চলিক কতা কওয়া গুষ্টি’ গ্রুপটা। সাথে সাথে সেটাতে যোগ দিয়ে স্যারের নাম দিয়ে স্যারকে খোঁজ করছি এই মর্মে একটা পোস্ট দিলাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই অনেকগুলো উত্তর পেলাম কমেন্টে। একজন স্যারের ভাইয়ের নম্বর দিলেন। আমি উনাকে কল দিয়ে বাগচী স্যারের নম্বরটা নিলাম। এরপর স্যারের নম্বরে ডায়াল করে দুরুদুরু বুকে অপেক্ষা করছিলাম যে ইনি কি আসলেই আমাদের বাগচী স্যার কিনা? কারণ একই নামের অনেক ব্যক্তিই থাকতে পারেন। বাগচী স্যারের একটা 'হ্যালো' শুনেই আমার ধড়ে প্রাণ ফিরে এলো। সেই ভরাট কণ্ঠস্বর আবারও শুনলাম দীর্ঘ ৩২ বছর পর।

চরভবানীপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যে ভবনে আমরা পড়তাম সেটা ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। সেই সাথে বিলীন হয়ে গেছে বহু মানুষের ঘরবাড়ি। পরবর্তীতে স্থান পরিবর্তন করে আবারও নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। গত বছর দেশে বেড়াতে গিয়ে প্রথমে তাই স্কুলটা দেখতে গিয়েছিলাম।

কিডজ ম্যাগাজিনে বড়দের সঙ্গে শিশু-কিশোররাও লিখতে পারো। নিজের লেখা ছড়া-কবিতা, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি, মজার অভিজ্ঞতা, আঁকা ছবি, সম্প্রতি পড়া কোনো বই, বিজ্ঞান, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা ও নিজ স্কুল-কলেজের সাংস্কৃতিক খবর যতো ইচ্ছে পাঠাও। ঠিকানা kidz@bdnews24.com সঙ্গে নিজের নাম-ঠিকানা ও ছবি দিতে ভুলো না!