আজ ৩১ জুলাই ‘হ্যারি পটারের জন্মদিন’।
Published : 31 Jul 2023, 05:29 PM
তোমাদের খুব প্রিয় একটি চরিত্র হ্যারি পটার। আর এই চরিত্রটির স্রষ্টা ব্রিটিশ কল্পকাহিনি লেখক জে. কে. রাওলিং। কিন্তু, তোমরা কি জানো কীভাবে তিনি এই চরিত্রটির ধারণা পেয়েছিলেন!
একবার রাওলিং ট্রেনে চড়ে লন্ডনে যাচ্ছিলেন, ওই দিনই প্রথমবার হ্যারি পটারের ধারণা তার মাথায় ঢুকে যায়। কিন্তু অবাক করা তথ্য হলো- রাওলিং ট্রেনে বসে হ্যারি পটারের কথা ভাবলেন, সেই ভাবনা লিখবেন- অথচ তার সঙ্গে কলম ছিল না!
জে. কে. রাওলিং একবার এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “১৯৯০ সালে আমি ও আমার বন্ধু একটি ফ্ল্যাট কিনে ম্যানচেস্টারে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা মাঝে মাঝে ঘুরতে যেতাম। ফ্ল্যাট কেনার পরের সপ্তাহে আমি ট্রেনে লন্ডনে ফিরে আসি। তখন হ্যারি পটারের ধারণাটি আমার মাথায় ঢুকে যায়।”
রাওলিংয়ের ওই সাক্ষাৎকারটি ছাপা হয়েছিল আর্বানেট ম্যাগাজিনে। সেখানে তিনি বলেন, “কাকতালীয়ভাবে আমার কাছে কোনো কলম ছিল না। ট্রেনে কারও কাছে কলম চাইতে খুব লজ্জা পাচ্ছিলাম। তাই নিজেই নিজের কাণ্ডে হতাশ হলাম। কিন্তু লিখতে না পারলেও সেই দিনটি আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, পুরো চার ঘণ্টার ট্রেন ভ্রমণে আমি পুরো বইটি নিয়ে ভেবেছি।”
তারপর বাসায় ফিরে সেদিন সন্ধ্যায় রাওলিং হ্যারির গল্প লিখতে কাগজ ও কলম নিলেন। কিন্তু কিছুই লিখতে পারছিলেন না। রাগ করে কয়েকবার কলম ছুড়ে ফেলে দেন। পরে হ্যারি পটারের গল্প লিখতে তার অনেক সময় লেগেছিল।
১৯৯০ সালে রাওলিংয়ের মা মারা যান। রাওলিং যুক্তরাজ্য থেকে পর্তুগালে চলে যান। সেখান থেকে মেয়ে জেসিকা ইসাবেলকে নিয়ে স্কটল্যান্ডের এডিনবরা ফিরে আসেন।
অবশেষে ১৯৯৫ সালে ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার’স স্টোন’ নামে পাণ্ডুলিপিটি লেখা শেষ করেন রাওলিং। তারপর প্রকাশকদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। কিন্তু কোনো প্রকাশকই তাকে পাত্তা দিচ্ছিলো না। রাওলিং আর্বানেট ম্যাগাজিনকে বলেন, “প্রথম যে প্রকাশককে তিনটি অধ্যায় পাঠিয়েছিলাম, তিনি পাণ্ডুলিপিটি খুব দ্রুত ফেরত পাঠিয়ে দেন।”
কিন্তু ১৯৯৬ সালের অগাস্টে প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান ‘ব্লুমসবারি’ থেকে সম্ভাবনা দেখতে পান রাওলিং। ওই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাকে একটি প্রস্তাব দেয়। তখন ব্লুমসবারিতে কাজ করতেন ব্যারি কানিংহ্যাম। ২০০৫ সালে স্কটিশ দৈনিক ‘দ্য স্কটসম্যানকে’ কানিংহ্যাম বলেন, “আমি ভেবেছিলাম হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার’স স্টোন একটি বাজে শিরোনাম। তবে গল্প ও চরিত্র ভালো লেগেছিল। এর তিনটি প্রধান চরিত্রের বন্ধুত্ব আমি পছন্দ করেছিলাম।”
কানিংহ্যামের চেষ্টায় অবশেষে আলোর মুখ দেখে জে. কে. রাওলিংয়ের ‘হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্য ফিলোসফার’স স্টোন’। ১৯৯৭ সালের জুনে যুক্তরাজ্যে বইটি প্রকাশিত হয়। আর সেখান থেকে হ্যারি পটার যুগের সূচনা। বইটি যুক্তরাজ্য ও পরে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যাপক সাফল্য পায়। একসময় অর্থকষ্টে থাকা রাওলিং কয়েক বছরের মধ্যে বিশ্বের ‘সেরা ধনী লেখক’ হয়ে ওঠেন।
১৯৬৫ সালের ৩১ জুলাই যুক্তরাজ্যের গ্লুচেস্টারশায়ারের ইয়েটে শহরে জন্মগ্রহণ করেন জে. কে. রাওলিং। প্রতি বছর এদিনটি ‘হ্যারি পটারের জন্মদিন’ হিসেবে উদযাপন করে তার ভক্তরা।