“আজ এই বৃদ্ধ বয়সে যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি ইট পাথরের দালান কোঠা। চোখের আরাম হয় এমন সবুজের দেখা পাই না।”
Published : 09 Jan 2024, 06:31 PM
পরিবেশ ও প্রকৃতিকে রক্ষা করতে পারলেই জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব রোধ করা যাবে। কিন্তু আমরা কতটা সচেতন এই বিষয়ে?
আগে কেমন ছিল আমাদের রাজধানী ঢাকা, সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করেছিলাম আমার এক পরিচিত জনের কাছে। বাদশা মিঞা নামের এই ব্যক্তি ৫০ বছর আগে ঢাকা এসে যোগ দিয়েছিলেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে।
তিনি জানালেন, সে সময় ঢাকা ছিল খাল বিল আর সবুজে ঢাকা একটি শহর। আক্ষেপের সুরে তিনি বলেন, “আজ এই বৃদ্ধ বয়সে যেদিকে তাকাই সেদিকেই দেখি ইট পাথরের দালান কোঠা। চোখের আরাম হয় এমন সবুজের দেখা পাই না।”
পত্রিকায় প্রকাশিত কয়েকটি প্রতিবেদনের তথ্য উল্লেখ করলে ঢাকাসহ দেশের পরিবেশ ও প্রকৃতি বিষয়ক বাস্তব চিত্র পাওয়া যাবে। বুয়েটের নগর ও আঞ্চলিক পরিকল্পনা বিভাগের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, রাজধানীর অন্তত ২০ শতাংশ অঞ্চল সবুজ হওয়া প্রয়োজন। অথচ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের একটি সমীক্ষা বলছে যে, ঢাকা শহরের মাত্র দুই শতাংশ এলাকায় এখন বনভূমি রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাবে মানুষের জীবন কতখানি কঠিন হয়ে উঠেছে তার একটি চিত্র দেওয়া যাক।
শুভ হাজং বাস করে নেত্রকোণা জেলার সুসং দূর্গাপুরের পাহাড়ি এক গাঁয়ে। তার বাড়ি থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তাকে খাবার পানির সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিনিয়ত ঝর্ণার পানি কমতে থাকায় খাবার পানির সংকটে পড়তে হচ্ছে সেখানকার বাসিন্দাদের। চাষাবাদের জন্য যে খাল বিল নদী-নালার উপর তারা ছিল নির্ভরশীল তা পানিশূন্য হয়ে পড়েছে।
গ্লাসগো সামিট ২০২১-এ বাংলাদেশ প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ২০৩০ সালের মধ্যে বায়ুমন্ডলে কার্বন নিঃসরণের মাত্রা ২২ ভাগ কমিয়ে আনবে। কিন্তু জলবায়ু নিয়ে আমাদের দেশের যে চিত্র, তাতে বাংলাদেশ কি পারবে তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে?
আমরা এখন পর্যন্ত দেশের কতভাগ মানুষকে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সচেতন করতে পেরেছি, কিংবা সম্পৃক্ত করতে পেরেছি বা কতজন মানুষকে? বাদশাহ মিঞার দুশ্চিন্তা দূর করতে কিংবা শুভর মতো দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বন্যা কিংবা খরার মতো জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে রক্ষা করতে হলে এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে।
প্রতিবেদকের বয়স: ১৫। জেলা: ঢাকা।