আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে তিনি ১১টি দেশে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমের তদারক করবেন, যেখানে প্রায় ২০০ কোটি মানুষের বসবাস।
Published : 02 Feb 2024, 10:09 AM
আগামী পাঁচ বছরের জন্য বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলের (এসইএআরও) পরিচালক হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ সায়মা ওয়াজেদ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদই প্রথম বাংলাদেশি, যিনি ডব্লিউএইচওর এই পদে অধিষ্ঠিত হলেন। আঞ্চলিক পরিচালক হিসেবে তিনি ১১টি দেশে আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য কার্যক্রমের তদারক করবেন, যেখানে প্রায় ২০০ কোটি মানুষের বসবাস।
এসইএআরও সোশাল মিডিয়ায় এক বার্তায় জানিয়েছে, সায়মা ওয়াজেদ বৃহস্পতিবার পরিচালক হিসেবে তার দায়িত্ব বুঝে নেন এবং তার ওপর আস্থা রাখায় সদস্য দেশগুলোকে ধন্যবাদ জানান।
মানসিক স্বাস্থ্য, নারী ও শিশুদের জন্য স্বাস্থ্য সেবা এবং স্বাস্থ্য খাতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মত বিষয়গুলো অগ্রাধিকারে রাখার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
সায়মা ওয়াজেদ এসইএআরও এর পরিচালক হিসেবে পুনম ক্ষেত্রপাল সিংয়ের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
.@drSaimaWazed today took charge as Regional Director, @WHOSEARO. In her acceptance speech at #EB154, she thanked countries for their trust in her and listed some of her top priorities that include #mentalhealth, interventions for women and children, and optimizing technology for… pic.twitter.com/fY9lcUdMUN
— World Health Organization South-East Asia (@WHOSEARO) February 1, 2024
এসইএআরও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ছয়টি আঞ্চলিক অফিসের একটি; সদস্য দেশগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে এ অফিস গঠিত। বাংলাদেশ, ভুটান, উত্তর কোরিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, থাইল্যান্ড, তিমুর-লেস্তে এবং মিয়ানমার এ অফিসের সদস্য।
গত বছর পহেলা নভেম্বর ভারতের নয়া দিল্লিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আঞ্চলিক কমিটির ৭৬তম অধিবেশনে পরিচালক পদে নির্বাচিত হন সায়মা ওয়াজেদ।
ওই পদের জন্য সায়মা ওয়াজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন নেপালের ড. শম্ভু প্রসাদ আচার্য। সদস্য দেশগুলোর সরাসরি ৮-২ ভোটে নির্বাচিত হন তিনি।
এরপর ২৩ জানুয়ারি সুইজারল্যান্ডের জেনিভায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর দপ্তরে সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভায় তার মনোনয়ন অনুমোদন করা হয়।
অটিজম ও নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিসঅর্ডার বিষয়ক বাংলাদেশ জাতীয় উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারপারসন সায়মা ওয়াজেদ এর আগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক বিশেষজ্ঞ উপদেষ্টা প্যানেলের সদস্য ছিলেন।
বাংলাদেশে অটিজম-আক্রান্ত ব্যক্তিদের মুখপাত্র হিসেবে উদ্ভাবনী কাজের জন্য ডব্লিউএইচওর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া অঞ্চলে ‘অটিজম-বিষয়ক শুভেচ্ছা দূত’ হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করছেন।
সায়মা ওয়াজেদ ১৯৯৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মনোবিজ্ঞানে স্নাতক এবং ২০০২ সালে ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিতে স্নাতকোত্তর করেন। ২০০৪ সালে স্কুল সাইকোলজির ওপর বিশেষজ্ঞ ডিগ্রি পান।
ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সায়মা ওয়াজেদ বাংলাদেশের নারীদের উন্নয়নের ওপর গবেষণা করেন। তার সেই গবেষণাকর্ম ফ্লোরিডার একাডেমি অব সায়েন্সস থেকে ‘শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক উপস্থাপনা’ হিসেবে স্বীকৃতি পায়।
২০০৮ সাল থেকে শিশুদের অটিজম এবং স্নায়বিক জটিলতা নিয়ে কাজ করছেন সায়মা ওয়াজেদ। ২০১১ সালে ঢাকায় অটিজমবিষয়ক প্রথম দক্ষিণ এশীয় সম্মেলন আয়োজনের মূল ভূমিকায় ছিলেন তিনি।
সায়মা ওয়াজেদ ২০১৩ সাল থেকে ডব্লিউএইচওতে মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শক হিসেবে কাজ করছেন। ২০১৪ সালে সংস্থাটি তাকে ডব্লিউএইচও এক্সিলেন্স পুরস্কারে ভূষিত করে।
গত অগাস্টে চ্যাথাম হাউসের গ্লোবাল হেলথ প্রোগ্রামের একজন সহযোগী ফেলো হিসেবে যোগ দেন সায়মা ওয়াজেদ। ২০২২ সাল থেকে তিনি সেখানে ইউনিভার্সাল হেলথ কমিশনার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।