কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে বাংলাদেশের প্রস্তাব জাতিসংঘে গৃহীত

পাবলিক-প্রাইভেট অংশিদারিত্বে সারা দেশে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।

কমিউনিটি ভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা বিষয়ে জাতিসংঘে প্রথমবারের মত একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন বলছে, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে বাংলাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অসামান্য উদ্ভাবনী নেতৃত্ব এই প্রস্তাব পাসের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেল। 

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত মঙ্গলবার সাধারণ পরিষদে ‘কমিউনিটি ভিত্তিক প্রাথমিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা: সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনের লক্ষ্যে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক পদ্ধতি’ শিরোনামের ওই প্রস্তাব উত্থাপন করেন। জাতিসংঘের ৭০টি সদস্য রাষ্ট্র প্রস্তাবে ‘কো-স্পন্সর’ করে।

স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “বাংলাদেশ কর্তৃক প্রস্তাবিত রেজুল্যুশনটিতে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফল উদ্ভাবনী উদ্যোগের ব্যাপক স্বীকৃতি দিয়ে এই উদ্যোগকে ‘দ্য শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ’ হিসেবে উল্লেখ করে। এটি জনগণের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়ন এবং বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সেবায় সাম্য আনয়নে বাংলাদেশের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিকে প্রতিফলিত করে।”

রাষ্ট্রদূত মুহিত তার বক্তব্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা অর্জনে এই প্রস্তাবের ইতিবাচক প্রভাব তুলে ধরেন। তিনি এই প্রস্তাব অনুমোদনকে ২০৩০ সালের মধ্যে সার্বজনীন স্বাস্থ্য সেবা অর্জনের বৈশ্বিক প্রচেষ্টায় ‘এক অবিস্মরণীয় মাইলফলক’ হিসেবে বর্ণনা করেন। 

তিনি বলেন, “প্রস্তাবটির সফল বাস্তবায়ন কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষের স্বাস্থ্য সেবার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।”

সার্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং জাতিসংঘ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতেও এ প্রস্তাব সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রদূত।

তিনি বলেন, সদস্য দেশগুলোতে, বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক মডেল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রবর্তন ও বাস্তবায়নে যথাযথ কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতা দিতে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বহুপক্ষীয় এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন ব্যাংক এবং দাতাদের উৎসাহ যোগাবে এই প্রস্তাব।  

বাংলাদেশের সকল মানুষকে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৮ সালে দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক ভিত্তিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা চালু করেন, যা সারাদেশের তৃণমূল পর্যায়ে মানুষের দোরগোড়ায় সরকারের প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিতে বিপ্লব ঘটিয়েছে। সারা দেশে পাবলিক-প্রাইভেট অংশিদারিত্বে এ পর্যন্ত ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক প্রতিষ্ঠা করেছে সরকার।