বছরখানেকের চেষ্টায় সফল নির্মাতা, ‘যাপিত জীবন’ এ নূরের আবৃত্তি

হাবিব বলেন, “রেকর্ডিংয়ের পর যখন স্টুডিওতে কবিতাটা সিনেমার দৃশ্যের সঙ্গে যুক্ত করছিলাম তখন কবিতাটা শুনে মনে হচ্ছিল গল্পের সঙ্গে চমৎকারভাবে কবিতাটির কথা, মর্ম মিলে যাচ্ছে।“

গ্লিটজ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 March 2024, 03:37 PM
Updated : 24 March 2024, 03:37 PM

দেশ ভাগ ও ভাষা আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে ‘যাপিত জীবন’ নামের সিনেমার কাজ শুরু হয়েছিল দুবছর আগে। শুটিং, ডাবিংসহ সিনেমা তৈরির মূল কাজ শেষ হয়েছে অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূরের একটি আবৃত্তি রেকর্ডের মধ্য দিয়ে।

‘যাপিত জীবন’ পরিচালনা করেছেন নির্মাতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব।

গ্লিটজকে তিনি বলেছেন, শনিবার রাজধানীর একটি স্টুডিওতে আসাদুজ্জামান নূরের কণ্ঠে আবু জাফর ওবায়দুল্লাহর ‘কোনো এক মাকে’ এই কবিতাটি ধারণ করা হয়।

তিনি বলেন, “এই কবিতাটি দিয়েই শেষ হল সিনেমার মূল পর্বের কাজ। শুরুতেই আমাদের ভাবনা ছিল সিনেমার বিশেষ জায়গায় আমরা একটি কবিতা ব্যবহার করব এবং কবিতাটি আসাদুজ্জামান নূর ভাইয়ের কণ্ঠে হলে ভালো হয়। সেজন্য নূর ভাইয়ের পেছনে প্রায় বছর খানেক লেগে ছিলাম।”   

নূরকে এই কাজের প্রস্তাব দেওয়ার পর তিনি রাজি হলেও কবিতাটি রেকর্ড করে উঠতে দীর্ঘসময় লেগে যায় জানিয়ে নির্মাতা হাবিব বলেন, “নূর ভাই তো অনেক ব্যস্ত মানুষ, রাজনীতির মানুষ। সময়-সুযোগ করে উনাকে পাওয়া খুবই কষ্টের। তারপরও আমরা যখন সিনেমায় যুক্ত হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলাম উনি শুনেই রাজি হলেন৷

“আমাকে আশ্বস্ত করলেন, সময়-সুযোগ দেখে কাজটি করে দেবেন। তারপর মাঝেমধ্যেই যোগাযোগ করেছি। অনেকদিন লেগে থাকার পর শনিবার অবশেষে আমরা কাজটি করতে পেরেছি। প্রায় বছরখানেক আলাপ-আলোচনা করে কাজটি করা হল।”

কাজটি কেমন হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কবিতাটা নূর ভাইয়ের কণ্ঠে চমৎকার হয়েছে। দর্শকেরও ভালো লাগবে, আশা রাখি। কাজটি শেষ হওয়ার পর আমারও খুব খুশি।” 

রেকর্ডিং সময়ের অভিজ্ঞতা জানিয়ে এই নির্মাতা বলেন, “নূর ভাই খুব চমৎকারভাবে পড়েছেন। বই নিয়ে এসেছিলেন। খুব ভালো একটা প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিলেন নূর ভাই। এই রেকর্ডিংটা কিছুদিন আগে হওয়ার কথা ছিল কিন্তু তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘আমি একটু প্রস্তুতি নিয়ে পড়তে চাই। এটা যেহেতু সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনের সিনেমা আর অনেক গুণী শিল্পীরা অভিনয় করেছেন এবং অনেক ভালো একটা কাজ করেছ তোমরা, সেক্ষেত্রে আমিও প্রস্তুতি নিয়েই পড়তে চাই’।”

Also Read: ‘যাপিত জীবনে’ আফজাল হোসেনে মুগ্ধ রোকেয়া প্রাচী

কথায় সন্তুষ্টি ঝরিয়ে হাবিব বলেন, “তারপর শনিবার বই নিয়ে এসে দেখে দেখে কয়েকবার করে দুই রকমভাবে কণ্ঠ দিয়েছেন, যেটা সত্যিই খুব চমৎকার। আমিও উনার কবিতা খুব মুগ্ধ হয়ে শুনছিলাম। রেকর্ডিংয়ের পর যখন স্টুডিওতে কবিতাটা সিনেমার দৃশ্যের সঙ্গে যুক্ত করছিলাম তখন কবিতাটা শুনে মনে হচ্ছিল গল্পের সঙ্গে চমৎকারভাবে কবিতাটির কথা, মর্ম মিলে যাচ্ছে। যেটা সিনেমায় খুব প্রয়োজন ছিল। প্রেক্ষাগৃহেও দর্শকের মনে দারুণ একটি পরিবেশ তৈরি হবে বলে মনে করি।”

‘যাপিত জীবন’ সিনেমার কাজ শেষের দিকে জানিয়ে হাবিব বলেন, সাউন্ডের কাজ শেষ করে চলছে মাস্টারিং প্যানেলের কাজ। ঈদের আগে সিনেমাটি জমা দেওয়া হবে মন্ত্রণালয়ে। সেখানকার নিয়মকানুন শেষ করে সেন্সরে জমা দেওয়া হবে।

সেন্সর বোর্ডের ছাড়পত্র পেলে ভালো দিনক্ষণ দেখে সিনেমা মুক্তির পরিকল্পনা করা হবে বলে হাবিব জানান।

২০২১-২২ অর্থবছরে ৬০ লাখ টাকা সরকারি অনুদান পাওয়া ‘যাপিত জীবন’ সিনেমায় প্রথমবারের মতো জুটিবদ্ধ হয়েছেন আফজাল হোসেন ও রোকেয়া প্রাচী।

সেলিনা হোসেনের উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমাটির চিত্রনাট্য করেছেন অনিমেষ আইচ ও ইশতিয়াক আহমেদ।

সিনেমার অন্যান্য চরিত্রে অভিনয় করছেন রওনক হাসান, আশনা হাবিব ভাবনা, মৌসুমী হামিদ, গাজী রাকায়েত, আজাদ আবুল কালাম, মামুনুর রশীদ, কাজী হায়াত, সমাপ্তি, ডলি জহুরসহ অনেকে।