এস এম সোলায়মান প্রণোদনা পেয়েছেন পালাকার সায়িক সিদ্দিকী ও অভিনয়শিল্পী মহসিনা আক্তার; আর পাঁচ নাট্যজনকে দেওয়া হয়েছে প্রথমবারের মত চালু 'মানব হিতৈষী সম্মাননা'।
শুক্রবার থিয়েটার আর্ট ইউনিট প্রবর্তিত এ সম্মাননা ২০২০ ও ২০২২ সালের জন্য পান সায়িক ও মহসিনা।
এদিন করোনাভাইরাস মহামারীকালীন সাহসী ভূমিকার জন্য পাঁচ নাট্যজনকে দেওয়া হয় 'মানব হিতৈষী সম্মাননা', যা এবারই প্রথম দেওয়া হয়।
তারা হলেন আলোক মাহমুদ, রজত কান্তি গুপ্ত, কামাল উল্লাহ সরকার, শাহীন আহম্মেদ ও সানোয়ার আলম খান দুলু।
জাতীয় নাট্যশালার পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তনে প্রণোদনা ও সম্মাননা স্মারক তুলে দেওয়ার এ অনুষ্ঠানে এস এম সোলায়মান স্মারক বক্তৃতা প্রদান করেন খন্দকার তাজমি নূর। অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক ছিলেন অধ্যাপক শফি আহমেদ এবং প্রধান অতিথি ছিলেন তারিক আনাম খান।
২০০৫ সাল থেকে থিয়েটার আর্ট ইউনিট প্রতিবছর একজন তরুণ মেধাবী নাট্যশিল্পী অথবা নাট্য সংগঠনকে এস এম সোলায়মান প্রণোদনা দিয়ে আসছে। তবে 'মানব হিতৈষী সম্মাননা' এবারই প্রথম দেওয়া হয়েছে।
২০২১ সালে করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এস এম সোলায়মান প্রণোদনা দেওয়া সম্ভব হয়নি বলে জানায় থিয়েটার আর্ট ইউনিট।
প্রণোদনা গ্রহণের পর অনুভূতি প্রকাশ করে সায়িক সিদ্দিকী বলেন, "পালার সাথেই আমার বসবাস। আমার স্ত্রী এখানে আছেন, সেও জানে যে পালা আমার দ্বিতীয় সংসার। আমি মনে করি, এই বাংলায় যাদের জন্ম তারা সবাই পালাকার। কারণ আমাদের মায়েরা জন্মের পর থেকেই সন্তানকে গল্প করে করে ঘুম পাড়ান। গল্প করতে গিয়ে মায়েরা একেকটা চরিত্রকে ধারণ করেন। সেভাবেই তিনি পালাকার হয়ে উঠেন।
“যে সন্তান গল্প শুনতে শুনতে বড় হয়ে উঠেন, সেও পালার মধ্য দিয়েই বড় হয়ে উঠেন।“
মহসিনা আক্তার বলেন, "এই প্রণোদনা আমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ এজন্য, যার নামে এই প্রণোদনা তার কাজ বাংলাদেশের থিয়েটারকে নতুন মাত্রা দিয়েছিল। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই আমাকে এই সম্মান দেওয়ার জন্য। আমি থিয়েটার করি, কারণ থিয়েটার আমাকে জীবনবোধ শেখায়।"
অনুষ্ঠানের শুরুতে এস এম সোলায়মানের লেখা ও সুর করা গান গেয়ে শোনান থিয়েটার আর্ট ইউনিটের নাট্যশিল্পীরা।
পরে থিয়েটার আর্ট ইউনিট প্রযোজিত নাটক 'মাধব মালঞ্চী' মঞ্চে পরিবেশন করা হয়। বিভাস চক্রবর্তীর লেখা নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন রোকেয়া রফিক বেবী।
১৯৫৩ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণকারী এস এম সোলায়মান ২০০১ সালের ২২ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে পাড়ি জমান। ৪৮ বছরের জীবনে তিনি ৩০টিরও বেশি নাটক রূপান্তর ও নির্দেশনা দিয়েছেন। একাধিক নাট্যদলের প্রতিষ্ঠাতা তিনি। গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশানেরও সম্পাদক হিসেবেও নাট্যাঙ্গনে নেতৃত্ব দিয়েছেন।
এর আগে এস এম সোলায়মান প্রণোদনা পেয়েছিলেন আমিনুর রহমান মুকুল, সাইদুর রহমান লিপন, শাহাদাত হোসেন, আনোয়ারুল হক, কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন, ত্রপা মজুমদার, সুদীপ চক্রবর্তী, সামিনা লুৎফা, রামিজ রাজু, বাকার বকুল, পাবনা চাটমোহরের সমন্বয় থিয়েটার, মৌলভীবাজার কমলগঞ্জের মণিপুরি থিয়েটার ও হবিগঞ্জের প্রতীক থিয়েটার।