মুক্তি প্রতিক্ষীত চার সিনেমা হল: ‘মাইক’, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’, 'এমআর-নাইন: ডু অর ডাই' এবং ‘আম কাঁঠালের ছুটি’।
Published : 03 Aug 2023, 03:41 PM
কোরবানির ঈদে মুক্তি পাওয়া পাঁচটির মধ্যে দুটি এখনও ‘মাতিয়ে’ রেখেছে প্রেক্ষাগৃহ; সেই দুই সিনেমা ‘সুড়ঙ্গ’ এবং ‘প্রিয়তমা’ দেখতে হলে হলে দর্শক জোয়ারের মধ্যেই চলতি মাসে আসছে আরও চারটি সিনেমা।
এরমধ্যে দুটি মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত, একটি থ্রিলার চরিত্র ‘মাসুদ রানা’কে নিয়ে আর চতুর্থ সিনেমায় ফুটিয়ে তোলা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের শৈশব-কৈশোর।
মুক্তি প্রতিক্ষীত চার সিনেমা হল: ‘মাইক’, ‘১৯৭১ সেই সব দিন’, 'এমআর-নাইন: ডু অর ডাই' এবং ‘আম কাঁঠালের ছুটি’।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণকে উপজীব্য করে সরকারি অনুদানে নির্মিত শিশুতোষ সিনেমা ‘মাইক’ পরিচালনা করেছেন এফ এম শাহীন ও হাসান জাফরুল বিপুল।
‘মাইক’ প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাবে ১১ অগাস্ট। এই সিনেমায় অভিনয় করেছেন চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও তানভীন সুইটি।
হৃদি হক পরিচালিত ‘১৯৭১ সেই সব দিন’ হলে আসছে ১৮ অগাস্ট। লাকী ইনামের প্রযোজনায় মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে নির্মিত হয়েছে সরকারি অনুদানের এ সিনেমা। সাংস্কৃতিক আন্দোলন ও ১৯৭১ সালের একটি পরিবার এবং সেই সময়ের ঘটনার গল্প বোনা হয়েছে সিনেমার কাহিনীতে।
অভিনেত্রী-পরিচালক হৃদি হক গ্লিটজকে বলেন, “সিনেমাটি মুক্তিযুদ্ধের বিস্মৃত পরিসরে নির্মিত হয়েছে। বেশ যত্ন নিয়ে সিনেমার কাজ শেষ করেছি। এখন দর্শকের সামনে নিয়ে আসার অপেক্ষা।”
‘১৯৭১ সেই সব দিন’ সিনেমার শুটিংয়ের বেশির ভাগটাই সারা হয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ে। তবে ঢাকা, সাভার, গাজীপুর, রাজেন্দ্রপুর, মানিকগঞ্জসহ, পঞ্চগড়েও শুটিং করা হয়।
হৃদি হক বলেন, “এই সিনেমার গল্পটা ঢাকার হলেও মূলত গল্পের প্রয়োজনেই আমরা বেশিরভাগ অংশের শুটিং করেছি ঠাকুরগাঁওয়ে। সেখানে সেট বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়টাকে তুলে আনতে চেষ্টা করেছি। আমাদের সিনেমার প্রয়োজনে মুখোমুখি দোতলা বাড়ি দরকার ছিল। একাত্তরে ঢাকার যে পরিবেশ ছিল, সেটা আনার জন্য ওখানেই সেট বানিয়েছি।“
পরিচালনার পাশাপাশি সিনেমায় অভিনয়ও করছেন হৃদি হক। আরও অভিনয় করেছেন মামুনুর রশীদ, জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, মুনমুন আহমেদ, শিল্পী সরকার অপু, ফেরদৌস, তারিন, লিটু আনাম, সজল, সাজু খাদেম, সানজিদা প্রীতিসহ আরও অনেকে।
সংগীত পরিচালনা করেছেন কলকাতার দেবজ্যোতি মিশ্র; শিল্প নির্দেশনায় আছেন লিটু আনাম, সম্পাদনা করেছেন কামরুজ্জামান রনি।
বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের দুর্দান্ত, দুঃসাহসী স্পাই মাসুদ রানাকে বইয়ের পাতার পর এবার নতুন করে পাওয়া যাবে 'এমআর-নাইন: ডু অর ডাই' সিনেমার পর্দায়।
কাজী আনোয়ার হোসেনের লেখা গোয়েন্দা চরিত্র 'মাসুদ রানা' সিরিজের 'ধ্বংস পাহাড়' অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে এ সিনেমা, যে বইটি পাঠকের হাতে এসেছিল ১৯৬৬ সালে।
নির্মাতা আসিফ আকবরের পরিচালনায়, ঢালিউড ও হলিউডের যৌথ প্রযোজনার এ সিনেমায় মাসুদ রানা হয়েছেন এবিএম সুমন।
হলিউডি অভিনেতাদের মধ্যে ফ্র্যাংক গ্রিলো, মাইকেল জাই হোয়াইট, নিকো ফস্টার এবং ভারতের ওমি বৈদ্য আছেন অভিনয়ে। সুমন ছাড়াও বাংলাদেশি অভিনেতাদের মধ্যে শহীদুল আলম সাচ্চু, আনিসুর রহমান মিলন, জেসিয়া ইসলাম ও টাইগার রবি অভিনয় করেছেন।
সিনেমার চিত্রনাট্য করেছেন পরিচালক আসিফ আকবর, আব্দুল আজিজ ও নাজিম উদ দৌলা। বাংলাদেশের প্রযোজনা সংস্থা জাজ মাল্টিমিডিয়া এবং লস অ্যাঞ্জেলেসভিত্তিক, দ্য ফিল্ম পোস্ট, আল ব্রাভো ফিল্মস এবং এমআর-নাইন ফিল্মস ছবিটি প্রযোজনা করেছে।
দেশ-বিদেশে ২৫ অগাস্ট মুক্তি পাবে ‘এমআরনাইন: ডু অর ডাই’ সিনেমাটি।
এছাড়া আগামী ৬ অগাস্ট সন্ধ্যা ৭টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে উদ্বোধনী প্রদর্শনী হবে ‘আম-কাঁঠালের ছুটি’ সিনেমার।
শিশুতোষ ঘরানার এ সিনেমার নির্মাতা মোহাম্মদ নূরুজ্জামান। শরীফ উদ্দিন সবুজের ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে আম-কাঁঠালের ছুটি।
নুরুজ্জামান বলেন, “কারও সাথে মিশতে না পারা আট বছর বয়সী একটি শহুরে ছেলে গ্রীষ্মের ছুটিতে গ্রামে বেড়াতে এসে কীভাবে নতুন এক জগৎ আবিষ্কার করে, খুঁজে পায় বন্ধুত্ব আর রোমাঞ্চের স্বাদ, তারই আখ্যান এই পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র।”
এ সিনেমার মাধ্যমে হারিয়ে যাওয়া কিংবা হারাতে বসা প্রাকৃতিক পরিবেশ আর বাংলাদেশের নিজস্ব লোকজ সংস্কৃতির সঙ্গে নতুন প্রজন্মের শিশু-কিশোররা পরিচিত হতে পারবে বলেও নুরুজ্জামান আশা প্রকাশ করেন।
নির্মাতা বলেন, “চলচ্চিত্রটির আন্তর্জাতিক সংস্করণের নামকরণ করা হয়েছে সামার হলিডে।"
প্রযোজনা ও পরিচালনার পাশাপাশি চিত্রনাট্য ও সংলাপ রচনা, চিত্রগ্রহণ, সম্পাদনা এবং সাউন্ড ডিজাইন করেছেন মোহাম্মদ নূরুজ্জামান নিজেই।
এ সিনেমার প্রধান সহকারী পরিচালক ছিলেন ‘আদিম’ খ্যাত নির্মাতা যুবরাজ শামীম। বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জুবায়ের, লিয়ন, আরিফ, হালিমা, তানজিল, ফাতেমা এবং কামরুজ্জামান কামরুল।
আরও পড়ুন
সিনেমায় মাসুদ রানা: ‘এমআর৯’ কি পারবে সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে?