‘মুক্ত’ ব্রিটনি ছাড়লেন হাঁফ; বললেন, ‘আজ আমি কাঁদব’

জীবনটা নিজের হলেও ১৩ বছর ধরে চলছিল বাবার নিয়ন্ত্রণে, তা থেকে মুক্ত হয়ে এখন যেন উড়ছেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Nov 2021, 04:50 AM
Updated : 13 Nov 2021, 05:06 AM

বাবার কর্তৃত্বের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটার পর ৩৯ বছর বয়সী এই পপ তারকা তার উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন এভাবে- “আমার মনে হয়, আজ আমি সারাদিন কাঁদব।”

শুক্রবার নিজের ইনস্টাগ্রামে এই পোস্ট দেওয়ার ঠিক আগেই যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলেসের এক বিচারক ব্রিটনির উপর তার বাবা জেমির কর্তৃত্বের অবসান ঘটানোর আদেশ দেন।

বিবিসি জানিয়েছে, ওই সময় আদালত প্রাঙ্গণে ছিল এই পপ তারকার অনুরাগীদের ভিড়, যারা ‘ফ্রি ব্রিটনি স্পিয়ার্স’ আন্দোলনে নেমেছিল সোশাল মিডিয়ায়।

কৈশোরেই তারকা বনে যাওয়া ব্রিটনির দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর একের পর এক কাণ্ডে তার মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে উদ্বেগ থেকে ২০০৮ সালে আদালতের এক আদেশেই মেয়ের বিষয়ে সব সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার পেয়েছিলেন জেমি। তখন ব্রিটনির বয়স ছিল ২৬ বছর।

নিজের দ্বিতীয় বিয়ে ভেঙে যাওয়ার পর আদালতের আদেশে বাবার ‘খবরদারিতে’ হাঁফিয়ে উঠেছিলেন ব্রিটনি। এক পর্যায়ে আদালতের দ্বারস্ত হন তিনি।

গত ২৩ জুন মাসে ভার্চুয়ালি বিচারকের সামনে হাজির হয়ে ব্রিটনি বলেছিলেন, তিনি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন।

দুই সন্তানের মা এই তারকা শিল্পী বলেন, আরও সন্তান নেওয়ার অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে; ইচ্ছার বিরুদ্ধে দেওয়া হয়েছে সাইকিয়াট্রিক ড্রাগ লিথিয়াম।

দিনের পর দিন কেঁদেছেন জানিয়ে ব্রিটনি বলেন, “আমি আমার জীবন ফিরে পেতে চাই।”

তার আবেগঘন ওই বক্তব্য বিচারককেও স্পর্শ করে, যার ধারাবাহিকতায় মুক্ত জীবনে ফিরলেন ব্রিটনি।

কোনো মানুষের যখন নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ থাকে দুর্বল, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার সামর্থ্য থাকে না, যুক্তরাষ্ট্রে তখন আদালত ভিন্ন ব্যক্তিকে তার উপর নিয়ন্ত্রণের কর্তৃত্ব দিয়ে থাকে। ব্রিটনির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল।

জেমি মনে করছেন, ২০০৮ সালে তার মেয়ের যে অবস্থা ছিল, তাতে তার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার কাজটি সঠিকই ছিল। তবে এখন ব্রিটনির জীবনের ভার তারই নেওয়া উচিৎ।

আর তাই ব্রিটনির অনুরোধে অভিভাবকত্বের অবসান ঘটাতে আদালতে আবেদন জমা দিয়েছিলেন জেমি।

ব্রিটনির বেলায় দুটি ক্ষেত্রে বাবার কর্তৃত্ব ছিল, একটি তার ব্যক্তিগত জীবনের উপর, আরেকটি তার আর্থিক বিষয়াদির উপর।

২০১৯ সালে জেমি নিজের অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে মেয়ের ব্যক্তিগত বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্র থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছিলেন। এখন আর্থিক বিষয়েও জেমির কর্তৃত্বের অবসান ঘটল।

আর্থিক বিষয়ে দেখভাল করার দায়িত্ব ব্রিটনির পছন্দের যে অন্য একজনকে সম্প্রতি দিয়েছিল আদালত। সাময়িকভাবে তিনি কিছু ক্ষেত্রে এই নিয়ন্ত্রণ চালিয়ে যাবেন বলে শুক্রবারের দেওয়া আদেশে বলা হয়েছে।

স্যামকে পাশে নিয়ে নিজের ডান হাতের অনামিকায় পরা আংটির ভিডিও ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করে ভক্তদের এ সুখবর দেন ব্রিটনি স্পিয়ার্স।

নতুন জীবন নতুন জীবনসঙ্গীকে নিয়ে শুরু করতে যাচ্ছেন ব্রিটনি। সম্প্রতি তিনি ২৭ বছর বয়সী অভিনেতা ও ফিটনেস ট্রেইনার স্যাম আসগারির সঙ্গে বাগদানের ঘোষণা দেন।

২০১৬ সালে একটি মিউজিক ভিডিওর সেটে পরিচয় হয় তাদের। পরিচয় থেকে সেই সম্পর্ক প্রণয়ে রূপ পায়; যা এখন পরিণয়ের অপেক্ষায় রয়েছে।

ইরানের তেহরানে জন্ম নেওয়া আসগারি ১২ বছর বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে থিতু হন।

ব্রিটনি এর আগে ২০০৪ সালে ছোটবেলার বন্ধু জেমস আলেকজান্ডারকে বিয়ে করেছিলেন। সে বিষয়ে টেকেনি।

পরে নৃত্যশিল্পী কেভিন ফেডারলিনের সঙ্গে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন এই পপ তারকা। তাদের সংসারে দুই সন্তান আসে। ২০০৭ সালে কেভিনের সঙ্গে দাম্পত্যজীবনের ইতি টানেন ব্রিটনি।