গ্লিটজ: দীর্ঘদিন ধরে অনুষ্ঠান করছেন। বিতর্কও পিছু ছাড়ছে না। কী বলবেন?
স্বপন চৌধুরী: দেখুন, আমি একজন সফল ব্যক্তি। ২৫ বছর ধরে এই কাজটা করছি। একটা মেয়ে বাংলাদেশ থেকে যাবে, বাংলাদেশের নামটা যাবে, ফ্ল্যাগ যাবে, এটাতে ভুল ভ্রান্তি থাকলেও উচিত হলো যে, কী ভুল ছিল, কী করা যায়-পজিটিভ নিউজ হওয়া। দোষটাও ধরতে হবে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে, যে, মেয়েটা চোরাকারবারি, আমিও চোরাকারবারি, দেশটা অশান্ত হয়ে গেছে এক ইস্যুতে।
গ্লিটজ: নানা ধরনের বিতর্ক চলছে। সুন্দরীদের শিবিরে কোনো সমস্যা তৈরি হয়েছে কি? তাদের নিয়ে ওয়ার্ল্ড ট্যুরের কথা। কী ধরনের গ্রুমিং চলছে?
স্বপন চৌধুরী: গ্রুমিং হয়নি। মিডিয়া থেকে নানা ফোন যাচ্ছে। তারা একটু বিভ্রান্ত আছে। পরিস্থিতি শান্ত হলে তারপর শুরু হবে।
গ্লিটজ: মূল প্রতিযোগী চীন কবে যাচ্ছে?
স্বপন চৌধুরী: নভেম্বরে তো প্রতিযোগিতা, গ্রুমিং সেশন শেষ করে তার ১৫ থেকে ২০ দিন আগে গেলেই হবে।
গ্লিটজ: মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আপনার যোগাযোগটা কীভাবে হচ্ছে? কার সঙ্গে আপনি যোগাযোগ রাখছেন?
স্বপন চৌধুরী: আমার যোগাযোগ সরাসরি মিস ওয়ার্ল্ড চেয়ারম্যান জুলি মোরল্যের সঙ্গে।
গ্লিটজ: বাংলাদেশে এই প্রতিযোগিতা নিয়ে বিতর্ক উঠেছে- এ প্রসঙ্গে তাদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য এসেছে?
গ্লিটজ: আপনাদের বাছাই প্রক্রিয়ায় কোনো ভুল ছিল বলে মনে করেন?
স্বপন চৌধুরী: বাছাই প্রক্রিয়ায় আসলে যেসব শর্ত আছে সেসব শর্ত মেনেই তাদের কাছে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তারা যে তথ্য দিয়েছে সে যোগ্যতার ভিত্তিতেই আমরা তাদের অ্যালাও করেছি। তারপর তো নানা পর্যায়ের বিচারকরাই তাদের বের করে আনলেন। এ পর্যন্ত আসলো বিষয়টা।
এখন দেখুন, মিস ওয়ার্ল্ডে যেসব বিষয় চাওয়া হয়েছে আমরা সেসব বিষয়ই যাচাই করব। শর্তের বাইরে গিয়ে একটা মেয়ে মাস্টার্স পাস লিখেছে, সেটা আমরা যাচাই করতে যাব না। ওদের হাইট ঠিক আছে কি না,ওদের ওয়েট ঠিক আছে কি না, ওদের যে মিনিমাম ট্যালেন্ট, তা ঠিক আছে কি না, আমরা জানতে চাইব। আর পেপার ওয়ার্কস যেগুলো, সেগুলো যাচাই করতে গেলে কিন্তু আমরা পারব না। এগুলো অপ্রয়োজনীয়। যেসব শর্ত ছিল, সেসব শর্তগুলো আমরা যাচাই-বাছাই করেছি।
গ্লিটজ: এখন যে শোনা যাচ্ছে ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ’ জান্নাতুল সুমাইয়া এভ্রিল বিবাহিত ছিলেন। তার বৈবাহিক অবস্থা আপনারা যাচাই করেছিলেন কি?
স্বপন চৌধুরী: আমরা এখন যে পর্যায়ে চলে এসেছি, ও তো এখন বিজয়ী হয়ে গেছে। ওর বাইরে যাওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এখন যদি নেগেটিভ কিছু আসে, যেমন-মেয়েটা চোরাকারবারির সাথে জড়িত, মেয়েটা বিবাহিত, মেয়েটা নেশায় আসক্ত। এগুলো আসলে ওদের আওতার মধ্যে চলে গেছে। আমার আগ পর্যন্ত এগুলো আসেনি। না আমি জানতাম, না কোনো মিডিয়া জানতো। এখন ওর টোটাল গ্রুমিং, টোটাল বিচার বিবেচনা দেখবে মিস ওয়ার্ল্ড কর্তৃপক্ষ। আমার কাছে এখনও ওর বিয়ে সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ হাতে আসেনি। যখন আসবে তখন সেটা যাচাই করে দেখব যে, ওর বৈবাহিক অবস্থান কোন বিবেচনায় ধরা দেবে মূল প্রতিযোগিতায়। তার যদি ডিভোর্স হয় তাহলে সে মিস বিবেচিত হবে কি না। যদি বিবেচিত হয়, তাহলে তার বাচ্চা আছে কি না। এসবও মিলিয়ে দেখার ব্যাপার আছে।
গ্লিটজ: এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
স্বপন চৌধুরী: ওদের সাথে কথা বলব। সারাদেশে এখন একটাই আলোচনা। যেখানে যাচ্ছি সেখানেই মিস ওয়ার্ল্ড। জটিলতাটা অনেক বড় হয়ে গেছে।আমাদের টার্গেট এখন এটার সমাপনী। বিচারকরা কি ভুল বলেছেন, না মিডিয়া ছড়িয়েছে, নাকি ওই উপস্থাপিকাই ভুল বলেছে, সেসব নিয়ে সবাই যেদিন একসাথে হব, সেদিনই ঠিক হয়ে যাবে। ঠিক করার পর বিবেচনা হবে, যে এই মেয়ে কি মিস ওয়ার্ল্ডের যোগ্য? মিস ওয়ার্ল্ডে যাচ্ছে? আমরা তো বলছি এই মেয়েটা মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ। মিস ওয়ার্ল্ডে যাবে কি যাবে না, এটা হল পরবর্তী ইতিহাস।
গ্লিটজ: কী পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন সামনে?
গ্লিটজ: বিচারকদের রায়ের গড় থেকে যদি মূল প্রতিযোগী নির্ধারণ করা হয়ে থাকে, স্বচ্ছতার প্রশ্নে রেজাল্ট শিটগুলো সবার সামনে উন্মুক্ত করবেন কি?
স্বপন চৌধুরী: আমি তর্কের শেষ করতে চাই। বিচারকদের অভিযোগ বলা হচ্ছে। আসলে এটা হবে একজন বিচারকের অভিযোগ। একজন মেইন ভূমিকায়, আরেকজন মাঝে মাঝে কিছু বলেন। দেখুন, রায়ের শিট আমাদের কাছে আছে, জাজদের কাছেও আছে পাবলিকের কাছেও আছে। এখানে বিতর্কের কিছু নেই। জাজরা সবাই সবার বন্ধু। দু’একজনের মার্কশিট পাবলিকলি প্রকাশিত হয়েছে। শম্পা আপারটা খুঁজেই পাওয়া যাচ্ছে না। আমার কথা হলো, তারা একসঙ্গে বসলে নতুন করেও কেউ আসতে পারে। আমি আসলে তর্কের শেষ করতে চাই।
গ্লিটজ: বিচারকদের সঙ্গে একসঙ্গে বসার প্রক্রিয়াটা কীভাবে হতে পারে?
স্বপন চৌধুরী: দেখুন, উনারা সবাই প্রচণ্ড ব্যস্ত মানুষ। আমি সবার সঙ্গেই কথা বলছি, তাদের সময় মেলানো টাফ হয়ে যাচ্ছে। আমি অপেক্ষা করছি। তাদেরকে তো এভাবে হুট করে পাওয়া যায় না। আর বিষয়টা এমন না যে, আমি বললাম, বলে দাও ওমুক চ্যাম্পিয়ন। মেয়েটা আমার তো কেউ না। আমার প্রেমিকা তো না। আমাদের দেশে এমনটাই হয়, কিছু একটা ঘটলেই দেশ ভেঙে পড়ে যাচ্ছে।
গ্লিটজ: প্রতিযোগীর বৈবাহিক অবস্থান নিয়ে জটিলতা তৈরি হলে বিকল্প কী সিদ্ধান্ত হতে পারে বলে মনে করছেন?
স্বপন চৌধুরী: দেখুন, আমি আগে তার কাছে জানতে চাইব, তুমি নিজেকে যে অবিবাহিত বলেছ তার প্রমাণ দেখাও। তার পাশাপাশি আমি দেখব, এমন জটিলতায় কেন্দ্রের কী ধরনের নিয়মগুলো আছে। এমনও হতে পারে তারা বলতে পারে, এ বছর প্রতিযোগী পাঠিও না। আগামী বছর পাঠাও। প্রথমবারের মতো আয়োজন, আমরা শিখছি..