“আমাকে যদি প্রশ্ন করেন জুলাই অভ্যুত্থানের পরে দেশে নানা সংস্কার চলছে। তবে চলচ্চিত্রের কোনো সংস্কারের বিষয়ে ঠিকঠাক কাজ করা হয়েছে কিনা; আমার স্বীকারোক্তি হবে, না,” বলেন তিনি।
Published : 29 Jan 2025, 11:41 PM
অন্তর্বর্তী সরকারে দেশে নানা সংস্কার কাজ চললেও চলচ্চিত্রের কোনো সংস্কারের বিষয়ে এখনও ‘ঠিকঠাক কাজ’ হয়নি বলে মনে করেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী।
কারণ হিসেবে তিনি বলেছেন, “কাজ না করতে পারার অন্যতম কারণ আমরা এখনও রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্যে আছি। এর আগেও চলচ্চিত্র সংস্কারের অনেক প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু এগুলো বাস্তবায়ন করা হয়নি। এর ব্যর্থতা সরকারের এবং আমরা যারা সরকারে আছি তাদের।”
এ অবস্থায় চলচ্চিত্রের সংকট সমাধানে শিল্পী-কলাকুশলী বা অংশীজনদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “সংকটের সমাধান নিয়ে রাস্তায় নামেন, আমাদের ঘেরাও করে কাজ করতে বাধ্য করেন। চলচ্চিত্রের সকল অংশীজনকে নিয়ে আওয়াজ তুলে সবগুলো দাবি বাস্তবায়ন করেন।
“এ ছাড়া সমাধান আসবে না। এখন পর্যন্ত চলচ্চিত্র জগতে বাংলাদেশে যা হচ্ছে, তা ব্যক্তি উদ্যোগে হচ্ছে। রাষ্ট্র কখনও কিছু দিতে পারেনি।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বুধবার রাতে বাংলাদেশ ফিল্ম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএসএ) জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলনে একথা বলেন নির্মাতা ফারুকী।
সম্মেলনে চলচ্চিত্র বিষয়ক স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় গঠনের দাবিসহ চলচ্চিত্রের সংস্কারের ১৮টি প্রস্তাব তুলে ধরে বিএফএসএ।
স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “স্বতন্ত্র মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। তবে আমরা চলে যাওয়ার আগে সংস্কৃতির সবকিছুকে এক ছাতার নিচে একত্রিত করে যাব এবং মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে কিছু সুপারিশ করে যাব। যাতে ভবিষ্যতে যেকোনো সরকার সঠিকভাবে কাজ করতে পারে।”
তিনি বলেন, “যে দেশে এত মানুষ চায় চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিটা দাঁড়াক, সে দেশে যদি ইন্ডাস্ট্রি এখনও না দাঁড়ায় বা আমরা যারা নীতিনির্ধারক পর্যায়ে আছি তারা যদি ঠিকমত কাজ না করি, তাহলে এটি লজ্জার বিষয়। আমাদের সকলের জন্যই লজ্জার বিষয়।
“আমি ঘটনাচক্রে সংস্কৃতি উপদেষ্টা। কিন্তু আসলে তো আমি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা। আমি ক্ষুদ্র সময়ের জন্য এখানে আছি, দুইদিন পরে আবার চলচ্চিত্র নির্মাণে চলে যাব। আমাকে যদি প্রশ্ন করেন জুলাই অভ্যুত্থানের পরে দেশে নানা সংস্কার চলছে। তবে চলচ্চিত্রের কোনো সংস্কারের বিষয়ে ঠিকঠাক কাজ করা হয়েছে কিনা; আমার স্বীকারোক্তি হবে, না।”
বাংলাদেশের মন্ত্রণালয়ের বণ্টনও সঠিকভাবে হয়নি বলে মনে করেন ফারুকী।
উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “তথ্য মন্ত্রণালয় সংস্কৃতি বা চলচ্চিত্র দেখার জন্য তৈরি হয়নি। তারপরও তথ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে এগুলোকে রাখা হয়েছে।
“পৃথিবীর সব জায়গায় চলচ্চিত্র ও পর্যটন মন্ত্রণালয়কে একত্রে রাখা হলেও আমাদের দেশে তা করা হয়নি। চলচ্চিত্র জগতের সকল ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য এখন পর্যন্ত এক জায়গায় নেই। ফলে এ বিষয়ে সমন্বিত কোনো উদ্যোগও নেওয়া যাচ্ছে না।”