প্লাস্টিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে আইনের কঠোর প্রয়োগ চায় টিআইবি

বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে হয়ে থাকে বলে বিবৃতিতে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 June 2023, 07:35 PM
Updated : 4 June 2023, 07:35 PM

বাংলাদেশে ২০০২ সালে পলিথিন শপিং ব্যাগ নিষিদ্ধ হলেও ‘পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫’ এ ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ ও ‘লেমিনেটেড প্লাস্টিকে’র ব্যবহার নিষিদ্ধ না হওয়ায় প্লাস্টিক দূষণ অব্যাহত আছে, যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে রোববার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ জানিয়ে আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিবৃতিতে অনতিবিলম্বে প্লাস্টিকের বেআইনি উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও ব্যবহার রোধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫-এর ৬(ক) ধারা সংশোধন, দূষণ-কর আরোপ এবং প্লাস্টিক দূষণের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ও প্রকল্পের জবাবদিহির লক্ষ্যে পরিবেশ আইনের কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছে তারা।

বৈশ্বিক মোট প্লাস্টিক দূষণের ২ দশমিক ৪৭ শতাংশ বাংলাদেশে হয়ে থাকে উল্লেখ করে বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও, কার্যকর প্রয়োগের অভাবে প্লাস্টিক থেকে পরিবেশ দূষণ শুধু অব্যাহতই নয় বরং উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

“প্লাস্টিক বর্জ্যসহ ব্যাপকভাবে বর্জ্য ফেলার কারণে বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা ও কর্ণফুলী নদী বাংলাদেশের অন্যতম দূষিত নদীতে পরিণত হয়েছে। প্লাস্টিক দূষণের কারণে আমাদের বাস্তুতন্ত্র ও ভূমির ব্যাপক দূষণ ঘটায় গাছপালা ও অন্যান্য প্রাণীর অস্তিত্ব আজ হুমকির সম্মুখীন।

“এ ছাড়া জৈব রাসায়নিক সারে প্রচুর পরিমাণে মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকায়, তা কৃষিকাজে ব্যবহারের ফলে স্থায়ীভাবে মাটি দূষিত হচ্ছে।”

ইফতেখারুজ্জামান বলেন, “পরিবেশ দূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদন ও ব্যবহার হ্রাস এবং প্লাস্টিক বর্জ্যরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য প্লাস্টিক দূষণসংক্রান্ত বিধিমালা অবিলম্বে প্রণয়ন করতে হবে।”

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় বিশ্ব ব্যাংক প্রণীত একটি ‘অ্যাকশন প্ল্যান’ (কর্ম পরিকল্পনা) নীতিগতভাবে গ্রহণের পাশাপাশি জেলা কার্যালয় ও প্রতিষ্ঠানসমূহে ‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ ব্যবহার বর্জনের যে নির্দেশনা প্রদান করেছে, তা যেন শুধু কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ না থাকে, সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্টদের আন্তরিক হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

একইসঙ্গে প্লাস্টিক দূষণ মোকাবেলায় গৃহীত সব কর্মকাণ্ডে সাধারণ জনগণসহ সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের অর্থবহ সচেতনতা ও কার্যকর অংশগ্রহণ এবং প্লাস্টিক দূষণ রোধে ব্যবহৃত তহবিলসহ সার্বিকভাবে পরিবেশ সুরক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিতেরও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।