অর্থবছর শেষে সরকারি খাতে ঋণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৭ দশমিক ৯ শতাংশ, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার ২০২২-২৩ অর্থবছরের মুদ্রানীতি ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব তথ্য জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলনে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির চাপের মধ্যে থাকায় সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে ‘সংকোচনমুখী’ নতুন মুদ্রানীতি নেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৪ দশমিক ১ শতাংশ, যা বিদায়ী অর্থবছরে ছিল ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। আর সরকারি ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ, যা বিদায়ী ২০২১-২২ অর্থবছরে ৩৬ দশমিক ৬ শতাংশ ছিল।
নতুন অর্থবছরে সব মিলিয়ে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে ১৮ দশমিক ২ শতাংশ, বিদায়ী অর্থবছরে এই লক্ষ্য ছিল ১৭ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি। আর ২০২১-২২ অর্থবছর শেষে মোট অভ্যন্তরীণ ঋণে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ।
অবশ্য ২০২১-২২ অর্থবছরের পুরো সময়ে ঋণ প্রবাহে ধীর গতি দেখে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রক্ষেপন করেছিল অভ্যন্তরীণ ঋণ প্রবৃদ্ধি শেষ পর্যন্ত ১৭ দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। কিন্তু তা থেকেও ঋণ বিতরণের হার বেড়েছে অনেক কম।
বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবাহ সম্পর্কে গভর্নর বলেন, ‘‘করোনার বিরূপ প্রভাব কাটিয়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড ও আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় বেসরকারি খাতে প্রদত্ত ঋণের প্রবৃদিধ ভালো হয়েছে। প্রবৃদিধর লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি পৌঁছেছে।’’
ব্যাংকিং খাতে তারল্যের পরিমাণ কমে যাওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম দিকে ব্যাংকিং খাতে অস্বাভাবিক মাত্রায় অতিরিক্ত তারল্য বিদ্যমান থাকলেও বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদিধ বেড়ে যাওয়ায় এবং টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখতে বাজারে বৈদেশিক মুদ্রা বিক্রি করায় অতিরিক্ত তারল্য কমে এসেছে।’’
মূল্যস্ফীতি বিবেচনায় ব্যাংক ঋণের সুদহার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে ফজলে কবির বলেন, “২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ নির্ধারণ করেছি, যেটা আলোচনায় ছিল ২০১৭ সাল থেকে। কিন্তু ২০২০ সালে আমরা দেখেছি এখন ৯ শতাংশ সুদহার বাস্তবায়ন যোগ্য, তখন বাস্তবায়ন করেছি।
‘‘এখন যদি প্রয়োজন হয় সেখানে রিভিউ করা হতে পারে, আমি বলছি না যে, ৯ শতাংশ সুদহার তুলে নেওয়া হবে। রিভিউ তো করে দেখবে বাংলাদেশ ব্যাংক।’’
অর্থনীতিতে বিদ্যমান চ্যালেঞ্জের মধ্যে টাকার বিনিময় হার, মূল্যস্ফীতির এমন চাপ, মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ধরে রেখে ঋণ প্রবাহ বৃদ্ধি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদা বজায় রাখার মধ্যে ঘোষিত মুদ্রানীতির কৌশল কতটুকু বাস্তবায়নযোগ্য- এমন প্রশ্নে গভর্নর বলেন, ‘‘আগামী অক্টোবর-নভেম্বরে মুদ্রানীতি রিভিউ করে দেখা যেতে পারে, কোনো জায়গায় সংযোজন-পরিমার্জনের প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে কি না।“
কর্মসংস্থান তৈরিতে চলমান অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার কার্যক্রমে সমর্থন অব্যাহত রাখার কথাও জানান তিনি।