মহামারীতে কাজ হারিয়ে ফিরেছেন ৫ লাখ প্রবাসী: মন্ত্রী

কোভিড মহামারী দেশের বিদেশি মুদ্রা সঞ্চয়নে যে বড় ধাক্কা দিয়েছে, তা ফুটে উঠল প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমেদের সংসদে দেওয়া তথ্যে।

সংসদ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 June 2022, 03:26 PM
Updated : 23 June 2022, 05:19 PM

তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বৃহস্পতিবার সংসদে জানিয়েছেন, আড়াই বছর আগে মহামারী শুরুর পর পাঁচ লক্ষাধিক বাংলাদেশি কর্মী কাজ হারিয়ে বিদেশ থেকে বাংলাদেশে ফিরেছেন।

দেশের বৈদেশিক মুদ্রা বা ডলার সঞ্চয়নে রপ্তানির পাশাপাশি রেমিটেন্স রাখে প্রধান ভূমিকা। এই রেমিটেন্স পাঠান বিদেশে থাকা দেশের কর্মীরা।

মহামারী শুরুর পর বহু বাংলাদেশি কাজ হারিয়ে দেশে ফেরায় রেমিটেন্স এখন কমতে থাকায় তা ডলার সঞ্চয়নেও প্রভাব ফেলছে।

তবে জনশক্তি রপ্তানিকে গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি তুলে ধরে আরেক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী ইমরান বলেন, বর্তমান সরকারের নানামুখী কুটনীতিক তৎপরতায় ২০২২ সালের মে পর্যন্ত ৫ লাখ ৩ হাজার ৯৭৯ জন কর্মী বিদেশে কাজ পেয়েছে।

তিনি জানান, বর্তমানে বিশ্বে ৮৪টি দেশে মোট ১০ লাখ ৫০ হাজার ৮১৯ জন বাংলাদেশে নারী শ্রমিক কাজ করছে। নারীকর্মীদের নিরাপত্তা রক্ষায় বাংলাদেশ মিশনগুলো নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সংসদে বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘কার্যকর পদক্ষেপ’ গ্রহণের ফলে ভোজ্য তেলসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ‘স্থিতিশীল ও সহনীয় পর্যায়ে’ রয়েছে।

তিনি বলেন, “নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য আন্তর্জাতিক বাজারে যখন বাড়ে, তখন দেশে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অধিক পরিমাণে বাড়ানো হয়, যখন কমে তখন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে সমপরিমাণ কমানো হয় না- এই বক্তব্য ঠিক নয়।”

কিছু দিন আগে সয়াবিন তেল মজুদ করে বাজারে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে জনসাধারণকে দাঁড় করানোর অপচেষ্টা হয়েছিল বলে দাবি করেন টিপু মুনশি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী জানান, ২০২০-২১ অর্থবছরে বিশ্বের ২০৩টি দেশে ৭৫১টি পণ্য রপ্তানি করা হয়েছে। পণ্য রপ্তানি করে এই সময়ে বাংলাদেশ ৩৮ দশমিক ৭৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেছে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন মজুমদার সংসদে দাবি করেছেন, এখন দেশে খাদ্য ঘাটতি নেই।

তিনি বলেন, “২০২০-২১ অর্থবছরে দেশের মোট জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৯৩ লাখ ধরলে মোট খাদ্যশস্যের প্রয়োজন হয় ২৩৯ দশমিক ১৪ লাখ মেট্রিক টন (চাল ২২৬ দশমিক ৯০ লাখ মেট্রিক টন এবং গম ১২ দশমিক ২৪ লাখ মেট্রিক টন), যা ২০২০-২১ অর্থ-বছরের খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদনের তুলনায় কম।

“আবার দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১ দশমিক ৩৭ বিবেচনায় ২০২২ সালের ১ জানুয়ারিতে দেশের মোট জনসংখ্যা দাঁড়ায় ১৭ কোটি ১৫ লাখ। সে হিসেবে ২০২১-২২ অর্থবছরের দেশে খাদ্যশস্যের মোট চাহিদা হবে ২৪২ দশমিক ৩০ লাখ মেট্রিক টন। তাও অর্থছরে খাদ্যশস্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম। সুতরাং চাহিদা অনুযায়ী দেশে খাদ্যশস্যের ঘাটতি নেই।”

খাদ্যমন্ত্রী জানান, সরকারি খাদ্য গুদামগুলোতে এখন ১৫ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্য মজুদ রয়েছে।