দেশে অর্থ পাঠাতে কাগজপত্র লাগছে না প্রবাসীদের

দেশে অর্থ পাঠাতে প্রবাসীদের আর চাকরির নিয়োগ সংক্রান্ত নথি কিংবা অন্যান্য কাগজপত্র লাগছে না। একই সঙ্গে মিলছে আড়াই শতাংশ নগদ সহায়তাও।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 May 2022, 02:35 PM
Updated : 23 May 2022, 02:41 PM

সোমবার একটি পরিপত্র জারি করে এদিন থেকেই সিদ্ধান্তটি কার্যকর করার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর আগে ৫ হাজার ডলার বা স্থানীয় মুদ্রায় ৫ লাখ টাকার বেশি দেশে পাঠাতে প্রবাসীদের চাকরির নিয়োগসহ আনুষঙ্গিক নথি জমা দিতে হতো বিদেশের এক্সচেঞ্জ প্রতিষ্ঠানে।

সেসব প্রতিষ্ঠানকে আবার নথি পাঠাতে হতো দেশীয় ব্যাংকে। সরকারের নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রবাসীদের আর সেই ঝক্কি পোহাতে হবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিপত্রে বলা হয়, “সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৈধ উপায়ে দেশে রেমিটেন্স প্রেরণের বিপরীতে রেমিটেন্স প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানে রেমিটারের কোনো ধরনের কাগজপত্রাদি ব্যতীত বিদ্যমান হারে (২.৫০%) রেমিট্যান্স প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রযোজ্য হবে।”

পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত নতুন এ সিদ্ধান্ত বলবৎ থাকবে বলে পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়।

গত অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অনুপাতে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স ছিল ৬ দশমিক ০৩ শতাংশ। রেমিটেন্সে প্রবৃদ্ধি দেখা গিয়েছিল ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ।

দেশে আসা এ পরিমাণ রেমিটেন্স দিয়ে আমদানি দায়ের ৪০ দশমিক ৮৩ পরিশোধ সম্ভব ছিল। কিন্তু বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সবচেয়ে কার্যকর এ উৎসে ছন্দ পতন ঘটেছে সম্প্রতি।

অর্থের পরিমাণ এবং প্রবৃদ্ধি দুটি ক্ষেত্রেই দেশে চলতি অর্থবছরের ১০ মাসে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় রেমিটেন্স প্রবাহ কমেছে। কিন্তু আমদানি চাপ অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাওয়ায় বৈদেশিক বাণিজ্যে বড় ধরনের ঘাটতি দেখা দেয়, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

এর প্রভাবে ডলারের বিপরীতে টাকার মানও কমতে থাকে। সর্বশেষ সোমবার ডলারের বিপরীতে টাকার মান আরও ৪০ পয়সা কমিয়ে আন্তঃব্যাংক বিনিময় হার নির্ধারণ করা হয় ৮৭ টাকা ৯০ পয়সা। যদিও কোনো কোনো ব্যাংক এখনও নগদে ৯৯ টাকায় প্রতি ডলার বিনিময় করছে।

চাহিদা বাড়ায় কাগুজে ডলারের দরও বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে। মানি এক্সচেঞ্জ থেকে ডলার কিনতে সোমবার ৯৮ দশমিক ২০ টাকা গুনতে হয়েছে ক্রেতাদের। এর আগে গত ১৭ মে খোলা বাজারে ডলারের দাম ১০২ টাকায় উঠেছিল। সংকট সামলাতে বাংলাদেশ ব্যাংক এখন পর্যন্ত ৫৫০ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে।

এমন পরিস্থিতিতে অর্থনীতিবিদ ও প্রবাসীরা প্রণোদনার হার ৪ শতাংশে উন্নীত করার পরামর্শ দিয়ে আসছেন। এসবের মধ্যে ডলার সংকট কাটাতে প্রবাসীদের রেমিটেন্স পাঠানোর প্রক্রিয়া সহজ করা হল।

চলতি মে মাসের প্রথম দুই সপ্তাহে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স এসেছে ৮৩ কোটি ৬১ লাখ ডলার; দৈনিক গড় প্রবাহ বিবেচনায় রেমিটেন্সের এ ধারা গত এপ্রিলের চেয়ে বেশি।

চলতি অর্থবছরে গত ১০ মাসে রেমিটেন্স এসেছে ১ হাজার ৭৩০ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। গত অর্থবছরে এসেছিল ২ হাজার ৪৭৭ কোটি ৭৭ লাখ ডলার। আগের ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে এসেছে ১ হাজার ৮২০ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

আরও পড়ুন