‘অর্থপাচারকারীদের’ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না অর্থমন্ত্রী

বিদেশে অর্থপাচার নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে বাংলাদেশিদের নাম আসা প্রসঙ্গে এ মুহূর্তে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন অর্থমন্ত্রী আ. হ. ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Dec 2021, 04:43 PM
Updated : 8 Dec 2021, 04:43 PM

অর্থপাচারের বিষয়টি সর্বোচ্চ আদালতে বিচারাধীন থাকায় নিজের এমন অবস্থানের কথা জানান তিনি।

বুধবার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন তিনি।

এ প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমার পক্ষে কোনো মতামত দেওয়া যুক্তিযুক্ত হবে না। আমি মনে করি যেহেতু বিষয়টি একটা মামলার আওতায় চলে গেছে এবং প্রক্রিয়াধীন আছে। আমার মনে হয় মতামত দেওয়া ঠিক হবে না।“

বিশ্বজুড়ে আলোচনার ঝড় তোলা প্যান্ডোরা পেপার্স গত সোমবার আবারও নতুন তালিকা প্রকাশ করে; যাতে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত আট ব্যক্তির নাম রয়েছে।

তারা সবাই ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ডে কোম্পানি নিবন্ধন করেছেন বলে তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে সংযুক্ত নামের তালিকায় থাকা ব্যক্তিরা হলেন- নিহাদ কবির, মোহাম্মদ ভাই, ইসলাম মঞ্জুরুল, সাইদুল হুদা চৌধুরী, অনিতা রানী ভৌমিক, সাকিনা মিরালি, ওয়াল্টার পোলাক ও ড্যানিয়েল আর্নেস্টো আইউবাত্তি।

তাদের বিষয়ে ইঙ্গিত করে পত্রিকায় নতুন করে নাম আসার উল্লেখ করলে অর্থমন্ত্রী বলেন, নতুন এ বিষয়গুলো আপনাদের পত্রিকায় যেভাবে আসে, সেটাকে বিশ্লেষণ করে, ‘ফারদার ইনভেস্টিগেশেন’ করে যেটা দুদক মনে করে যে এটা হাই কোর্টে যাওয়া দরকার, বিচার শুরু করা দরকার। সেই কাজটি তারা করে যাচ্ছে।

“আর মনে হয় এ মুহূর্তে কোনো মতামত দিলে তাদের কাজ বাধাগ্রস্ত হবে। এ কারণে আমি মতামত দেব না। আপনারা অপেক্ষা করুন। আপনারা চাইলে সংক্ষিপ্ত আপডেট দেওয়া যাবে।“

যে ৪৩ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের নাম এসেছে সেই তালিকাটি হাই কোর্টে দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “পরবর্তীতে যেটা এসেছে বা আসছে সেগুলোও পর্যায়ক্রমে দেওয়া হবে। আমরা বিশ্বাস করি সেখানে ন্যায় বিচার পাবো।”

গত সপ্তাহে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত বৈঠক শেষেও অর্থমন্ত্রীকে প্রশ্ন করা হয়েছিল অর্থপাচার নিয়ে।

বিদেশি গণমাধ্যম ছাড়া অর্থপাচারকারীদের চিহ্নিত করতে সরকারি কী ‘মেকানিজম’ বা রক্ষাকবচ রয়েছে প্রশ্ন করা হলে তখন অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সুনির্দিষ্ট কোনো মেকানিজম নেই। বিভিন্ন উৎস থেকে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে থাকে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

বাংলাদেশের কে কত টাকা পাচার করেছে- হাই কোর্ট জানতে চাওয়ার নয় মাস পর কর ফাঁকি সংক্রান্ত পানামা ও প্যারাডাইস কেলেঙ্কারিতে উঠে আসা দেশের ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নামের তালিকা দিয়ে আপাতত কাজ সেরেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

গত রোববার দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান হাইকোর্ট বেঞ্চের বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের আদালতে যে প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছেন তাতে এই ৪৩ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৪টি নাম এসেছিল ‘পানামা পেপার্সে’। আর ‘প্যারাডাইস পেপার্সে’ এসেছিল ২৯ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের নাম।