কমনওয়েলথে আন্তঃবাণিজ্য বাড়াতে জোর অর্থমন্ত্রীর

মহামারীর ধাক্কা সামলে উঠতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোকে পারস্পরিক বাণিজ্য বাড়াতে নতুন নতুন পথ উন্মোচনের আহ্বান জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Sept 2021, 06:59 PM
Updated : 13 Sept 2021, 06:59 PM

সোমবার কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২১ এর এক ভার্চুয়াল আলোচনা পর্বে অংশ নিয়ে এই আহ্বান জানান তিনি।

মুস্তফা কামাল বলেন, পুরো বিশ্ব এখন একটি ক্রান্তিকাল পার করছে। কোভিডের অপ্রতাশিত অভিঘাতের প্রভাবে সারা বিশ্বের অর্থনীতি হুমকির সম্মুখীন, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোও এর ব্যতিক্রম নয়।”

কমনওয়েলথ ট্রেড রিভিউর তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে এই জোটের দেশগুলোর বাণিজ্যে ক্ষতির পরিমাণ ৩৪৫ বিলিয়ন ডলার। আর এর মধ্যে জোটের ৫৪টি দেশের আন্তঃবাণিজ্যে ক্ষতি হয়েছে ৬০ বিলিয়ন ডলার।

মহামারীতে বৈশ্বিক অর্থনীতির সঙ্কোচনের চিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত বছর বিশ্বের অর্থনীতি ৩ শতাংশ সঙ্কুচিত হয়েছে, কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর অর্থনীতি সঙ্কুচিত হয়েছে প্রায় ১০ শতাংশ।

আঙ্কটাডের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে তিনি বলেন, ২০২০ সালে বিশ্বে সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ ৪২ শতাংশ কমেছে। আর এশিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কমনওয়েলথ অর্থনীতি ৫০ শতাংশের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ উভয় ক্ষেত্রেই একটি শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের পথ খুঁজে বের করার বিকল্প নেই বলে মনে করেন মুস্তফা কামাল।

তিনি বলেন, “আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে আন্তঃকমনওয়েলথ বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ বাড়িয়ে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করার মাধ্যমে আমরা কমনওয়েলথের গৌরবময় অতীত ফিরে পেতে পারি।”

কমনওয়েলথ বাণিজ্যের বিভিন্ন সূচকের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বিশ্বের জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ হওয়া সত্ত্বেও বিশ্ব অর্থনীতিতে কমনওয়েলথ দেশগুলোর ভূমিকা মাত্র ১৩ শতাংশ, বৈশ্বিক এফডিআইয়ের মাত্র ২০ শতাংশ এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের ১৪ শতাংশের অংশীদার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলো।

মুস্তফা কামাল বলেন, এই পরিসংখ্যানগুলো ইঙ্গিত দেয় যে বাণিজ্য সম্পর্কিত কমনওয়েলথের বিদ্যমান নীতি এবং কৌশলগুলো কমনওয়েলথ দেশগুলোর জন্য সন্তোষজনক নয়।

সভায় কমনওয়েলথ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কাউন্সিলের চেয়ারম্যান লর্ড মারল্যান্ড এবং যুক্তরাজ্যের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যবিষয়কমন্ত্রী এবং বাণিজ্য বোর্ডের সভাপতি এলিজাবেথ ট্রাস বক্তব্য রাখেন।

এবারের সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ‘কমনওয়েলথ ট্রেড: দ্য লিভার ফর ফিউচার প্রসপারিটি’।

সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীরা কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোতে বাণিজ্য ও বিনোয়োগ বৃদ্ধি করে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতির পুনরুদ্ধারের উপায় এবং পথ খুঁজে বের করতে একসাথে কাজ করার আশা প্রকাশ করেন।