কোভিড-১৯: উন্নয়নকাজে অগ্রগতি ৬ বছরের সর্বনিম্ন

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আওতায় চলতি অর্থবছরের বরাদ্দের মাত্র ৪২ শতাংশ অর্থ নয় মাসে ব্যয় করতে পেরেছে সরকার।

জাফর আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 April 2021, 04:13 PM
Updated : 22 April 2021, 04:13 PM

উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন পরীবিক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগের (আইএমইডি) হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, ২০২০-২১ অর্থবছরের ৮৭ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার উন্নয়নকাজ হয়েছে।

অর্থবছরের প্রথম নয় মাসের এই ব্যয় আনুপাতিক হারের দিক দিয়ে বিগত ছয় বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

এর আগে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে মাত্র ৪১ শতাংশ এডিপি বাস্তবায়িত হয়েছিল।

এ বিষয়ে আইএমইডি সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চলতি অর্থবছরের এ পর্যন্ত টানা কোভিড-১৯ মহামারী কবলে থাকায় উন্নয়ন কাজের কিছুটা ব্যঘাত ঘটেছে বলেই এমনটা হয়েছে।

“বিশেষ করে কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে উন্নয়নকাজ বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত বেশি হয়েছে।”

‘পিছিয়ে পড়া’ প্রায় ৭০টি প্রকল্পের দুর্বলতা কাটিয়ে উঠার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাগাদা দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

প্রদীপ রঞ্জন বলেন, “লকডাউন উঠিয়ে নেওয়ার পর যেটুকু সময় পাওয়া যাবে সেসময় প্রকল্প বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে আমরা আরও কার্যক্রম জোরদার করব। শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়ন পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হবে।”

আইএমইডির হালনাগাদ তথ্যে দেখা যায়, গত জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত অর্থবছরের প্রথম নয় মাসে মাত্র ৮৭ হাজার ৭৩৫ কোটি টাকার উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন হয়েছে, যা সংশোধিত এডিপি বরাদ্দের ৪১ দশমিক ৯২ শতাংশ।

এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৫৫ হাজার ৭৭৫ কোটি টাকা বা বরাদ্দের ৪১ দশমিক ৪২ শতাংশ বাস্তবায়ন করা হয়েছে। আর বৈদেশিক সহায়তা বা প্রকল্প সহায়তার খাত থেকে ৪৬ দশমিক ৮২ শতাংশ বা ২৯ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকা ব্যয় করা সম্ভব হয়েছে।

চলতি অর্থবছরের মুল এডিপি‘র আকার ছিল ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকা। তবে গত মার্চ মাসে চলতি অর্থবছরের মুল বরাদ্দ থেকে ৭ হাজার ৫০২ কোটি টাকা কমিয়ে সরকার ১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকায় নামিয়ে আনে।

আইএমইডির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অর্থব্ছরের প্রথম নয় মাসে বরাদ্দের দিক দিয়ে বড় ১৫ মন্ত্রণালয় ও বিভাগের গড় বাস্তবায়ন জাতীয় বাস্তবায়নের চাইতে কিছুটা বেশি ৪২ দশমিক ৩২ শতাংশ। এই ১৫টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে মোট বরাদ্দে প্রায় ৮৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৫৪ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫১ দশমিক ৬১ শতাংশ বরাদ্দ ব্যয় করেছে বিদ্যুৎ বিভাগ। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫১ দশমিক ১৩ শতাংশ বরাদ্দ ব্যয় করেছে সেতু বিভাগ।

এরপর ৪৯ দশমিক ৭৬ শতাংশ বরাদ্দ ব্যয় করেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। রেলপথ মন্ত্রণালয় বাস্তবায়ন করেছে ৪৯ দশমিক ৬১ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ব্যয় করেছে বরাদ্দের ৪৮ শতাংশ এবং স্থানীয় সরকার বিভাগ ৪৪ দশমিক ১৪ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে।

এছাড়াও সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ ৩৮ দশমিক ৬১ শতাংশ, শিল্প মন্ত্রণালয় ৩৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ, বেসামরিক বিমান পরিবহণ ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ৩৮ দশমিক ১৬ শতাংশ, পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় ৩৬ দশমিক ৮১ শতাংশ, প্রাথমিক ও গণ শিক্ষা মন্ত্রণালয় ৩৬ দশমিক ২২ শতাংশ, নৌ পরিবহণ মন্ত্রণালয় ৩২ দশমিক ৮৫ শতাংশ, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় প্রায় ২৮ শতাংশ  এবং স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ মাত্র ২১ শতাংশ বরাদ্দ বাস্তবায়ন করেছে।