৬৭২০ এমএমসিএফ এলএনজি কেনা হচ্ছে

গ্যাস সংকট নিরসনে স্পট মার্কেট থেকে ৬৭ লাখ ২০ হাজার এমএম বিটিইউ এলএনজি কিনছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Feb 2021, 03:45 PM
Updated : 17 Feb 2021, 03:45 PM

বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় দুই ধাপে সিঙ্গাপুরের কোম্পানি ভিটল এশিয়া থেকে এলএনজি আমদানির প্রস্তাব তোলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সভায় এই প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয় বলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন। 

দেশে দৈনিক এক হাজার (৫০০+৫০০) এমএমসিএফডি এলএনজি সরবরাহে (ইনটেক) সক্ষম দুটি ভাসমান টার্মিনাল ও পুনঃগ্যাসে রূপান্তরকরণ ইউনিট বা এফএসআরইউ রয়েছে। এসব এফএসআরইউ থেকে দৈনিক ৭২০ এমএমসিএফডি এলএনজি আসতে থাকলেও সম্প্রতি সঙ্কটের কারণে তা ৪০০ এমএমসিএফডিতে নেমে আসে।

ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উত্থাপিত প্রস্তাবে এলএনজির পরিমাণ ৬৭২০ এমএমসিএফ (৬৭ লাখ ২০ হাজার এমএমবিটিইউ)।

পেট্রো বাংলার একজন কর্মকর্তা জানান, সাধারণ সময়ে এলএনজির দাম প্রতি ইউনিট ৪-৫ ডলারের মধ্যে থাকলেও সম্প্রতি তা বেড়ে প্রায় ৩২ ডলারে উন্নীত হয়েছে।

দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে বিশ্ব বাজার থেকে (স্পট মার্কেট) এলএনজি কেনা বন্ধ রাখে সরকার। দেশে গ্যাসের সঙ্কটও দেখা দেয়।

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব আবু সালেহ মোস্তফা কামাল জানান, সিঙ্গাপুরের ভিটল এশিয়া থেকে এলএনজি কেনার প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। ৬ষ্ঠ এলএনজির কার্গোতে ইউনিট প্রতি দাম পড়ছে ৯ দশমিক ৩১২৩ ডলার। আর ৭ম এলএনজি কার্গোর দাম পড়ছে ৯ দশমিক ৩৬১১ ডলার। দুই কার্গো মিলিয়ে মোট ব্যয় হবে ৬২৩ কোটি ৬৪ লাখ ১৭ হাজার ৪৬৭ টাকা।

ভিটল এশিয়া বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কালো তালিকাভূক্ত হয়ে আছে বলে একজন সাংবাদিক অর্থমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি বলেন, “অন্যান্য দেশে ব্ল্যাক লিস্টেড হলেও আমাদের দেশে ব্ল্যাক লিস্টেড নেই। আমাদের দেশে তো আগে কাজই করে নাই, ব্ল্যাক লিস্টেড হবে কীভাবে? যে কোনো প্রকিউরমেন্টের ক্ষেত্রে আমাদেরকে প্রটেক্ট করার জন্য যা যা প্রয়োজন তা আমরা রাখি।

“তারা ব্ল্যাক লিস্টেড হলে আমাদের তো ক্ষতি হচ্ছে না। সরবরাহ যখন করবে তখন লেটার অব ক্রেডিটের বিপরীতে যেটা আছে সেটা তারা পাবে। এই কেনাকাটায় কোনো অ্যাডভান্স পেমেন্ট নেই। তাহলে আমাদের ক্ষতি হচ্ছে না। এর পরেও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে বিষয়টি আমরা অবহিত করব। পরবর্তীতে জানানো হবে।”

ক্রয় সংক্রান্ত কমিটির সভায় গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়।

‘র্যাব ফোর্সেস সদর দপ্তর নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় র্যাব সদর দপ্তরে ১২তলা ব্যাচেলার অফিসার্স কোয়ার্টার্স, ১০ তলা ফোর্স ব্যারাক এবং ৮ তলা ডিএডি মেস কাম এমটি সেড নির্মাণ কাজ দেওয়া হয়েছে মজিদ সন্স কনস্ট্রাকশনকে। ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে ১৯২ কোটি ৪ লাখ ৩২ হাজার ৩২৬ টাকা।

আরেকটি প্রস্তাবনায় ‘বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে বাংলাদেশ পুলিশের জন্য ৯টি আবাসিক টাওয়ার ভবন নির্মাণ’ প্রকল্পের আওতায় সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্স এলাকায় একটি ১৫ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ কাজ জয়েন্ট ভেঞ্চারের ভিত্তিতে বাংলা বিল্ডার্স ও আইজেএলকে দেওয়া হয়েছে। ব্যয় অনুমোদন করা হয়েছে ৫৯ কোটি ৬৩ লাখ ১৩ হাজার ৩৮৭ টাকা।

গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তৃতীয় প্রস্তাবে ঢাকার আজিমপুর সরকারি কলোনির অভ্যন্তরে সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য দুটি ২০তলা আবাসিক ভবন নির্মাণসহ আনুসঙ্গিক পূর্ত কাজ দেওয়া হয়েছে পদ্মা অ্যাসোসিয়েটস অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংকে। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭৬ কোটি ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ৩৩২ টাকা।

খাদ্য চাহিদা ২৪ লাখ টন

২০২০-২১ অর্থবছরে খাদ্য শস্যের চাহিদা সংশোধন করে ২৪ লাখ ৫৫ হাজার ৭ মেট্রিক টন ধরেছে খাদ্য অধিদপ্তর। তার মধ্যে চাল ১৮ লাখ ৬৪ হাজার ৮২৯ মেট্রিক টন এবং গম ৫ লাখ ৯০ হাজার ১৭৮ টন।

১ ফেব্রুয়ারির পর্যন্ত চালের মজুদ ছিল ৫ লাখ ১৯ হাজার ৬১ টন এবং গমের মজুদ ছিল এক লাখ ৪৬ হাজার ৭৭২ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরে আনুমানিক আরও ১৪ লাখ ৪৯ হাজার ৫২৯ টন খাদ্যশস্য সংগ্রহ করতে হবে।

খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিষয়টি অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে উত্থাপন করা হয়।

এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “উনাদের চাহিদা আমাদের জানিয়েছে। আগামী জুন পর্যন্ত চাহিদা ও মজুদ। এটা এই কমিটিকে অবহিত করার বিষয় নয়। খাদ্য শস্য যেটা কেনা হবে, সেই সংক্রান্ত কোনো বিষয় থাকলে সেটা আমাদেরকে জানাতে হবে।

“নীতিগত কোনো প্রস্তাব অনুমোদনের প্রয়োজন হলে সেটা নিয়ে আসা যায়। আমরা বিষয়টি অবহিত হলাম। তবে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি।”