মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ডিপিডিসির আওতাধীন এলাকায় উপকেন্দ্র নির্মাণ ও পুনর্বাসন, বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় ক্যাপাসিটর ব্যাংক স্থাপন এবং স্মার্ট গ্রিড ব্যবস্থার প্রবর্তন’ শীর্ষক এই প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে গণভবন থেকে বৈঠকে যোগ দেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান। অন্যরা শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষ থেকে এই ভার্চুয়াল বৈঠকে অংশ নেন।
বৈঠক শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, এই প্রকল্পে মোট ব্যয় হবে ১ হাজার ৪৫৪ কোটি টাকা। এর মধ্যে ফরাসি উন্নয়ন সংস্থা-এএফডি থেকে ঋণ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের অনুদান হিসেবে ১ হাজার ২ কোটি টাকা আসবে। এছাড়া ডিপিডিসির নিজস্ব অর্থায়ন হিসেবে ৮২ কোটি ৬০ লাখ এবং বাকি ৩৬৯ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে যোগান দেওয়া হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় বলা হয়, ডিপিডিসির বর্তমান সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ চাহিদা ১ হাজার ৬৭০ মেগাওয়াট। ডিপিডিসির আওতাধীন ১৩২/৩৩ কেভি এবং ১৩২/১১ কেভি সাবস্টেশনের সংখ্যা ১৪টি। এগুলোর সক্ষমতা ২ হাজার ৪১৮ এমভিএ। অন্যদিকে ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনের সংখ্যা ৪৮টি। এসব সাবস্টেশনের সক্ষমতা ৩ হাজার ১০ এমভিএ।
ডিপিডিসি এলাকার বিদ্যুৎ চাহিদা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাওয়ায় বিদ্যমান সিস্টেমের উপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। ২০২৫ সালে এই এলাকার বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ৩ হাজার ২৮৫ মেগাওয়াট।
এই প্রকল্পের আওতায় মোহাম্মদী স্টিল কমপ্লেক্স, শিমরাইল ও পাগলার শ্যামপুরে ১৩২/৩৩ কেভি ও ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন এবং কামরাঙ্গীর চর, কল্যাণপুর, লালবাগ ও মাদারটেকে চারটি ৩৩/১১ কেভির সাবস্টেশন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
এছাড়া ডেমরা, তালতলা ও কুমারটুলিতে বিদ্যমান ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন আধুনিকায়ন করা হবে। কামরাঙ্গীরচর, লালমাটিয়া, গ্রিন রোড, খানপুর ও খিলগাঁও সাব স্টেশনগুলোর এআইএস ব্রেকারগুলো জিআইএস ব্রেকারের মাধ্যমে প্রতিস্থাপন করা হবে।
প্রকল্প প্রস্তাবনায় আরও বলা হয়, এ প্রকল্পের আওতায় ডিপিডিসির আওতাধীন জিগাতলা, লালমাটিয়া, আসাদগেট, সাত মসজিদ এবং গ্রিনরোডে মোট ৫টি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশনে পাইলটভিত্তিক স্মার্ট গ্রিড সিস্টেমে চালু করা হবে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, বৈঠকে এ প্রকল্পসহ ২ হাজার ৫৭০ কোটি টাকা ব্যয়ের ৫টি প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রকল্পে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৪৮৫ কোটি টাকা, সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৮২ কোটি ৬০ লাখ এবং ঋণ ও অনুদান থেকে ১ হাজার ২ কোটি টাকার যোগান দেওয়া হবে।
বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্যান্য প্রকল্পগুলো হল-
>> কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও ভ্রুণ স্থানান্তর প্রযুক্তি বাস্তবায়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ২০৬ কোটি টাকা।
>> মহিষ গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্প। এর ব্যয় ৬৩ কোটি টাকা।
>> গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে প্রচার কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। এর ব্যয় ৪৭ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।
>> শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপন (১১টি) প্রকল্প। এর ব্যয় ৭৯৮ কোটি ৯১ লাখ টাকা।