পশ্চিমাঞ্চলের ১১০ কিলোমিটার দুই লেনের সড়ককে চার লেনের মহাসড়কে উন্নীত করার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের একাধিক ধাপের যে ১৪০ কোটি ডলারে কর্মসূচি রয়েছে, এই প্রকল্প তার প্রথম ধাপ বলে বুধবার এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে।
কর্মসূচির প্রথম ধাপে যশোর ও ঝিনাইদহের মধ্যে ৪৮ কিমি মহাসড়কের এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে উত্সাহিত করতে ৬০০ কিমি গ্রামীণ সংযোগ সড়ক ও ৩২টি গ্রামীণ বাজারের উন্নয়ন হবে।
সড়কে নিরাপত্তার উন্নয়নে ধীর গতিসম্পন্ন যানবাহনের জন্য আলাদা লেন ও যানবাহনগুলোর চলাচল আলাদা করার জন্য মাঝারি সড়ক বিভাজক বসানো হবে।
বিশ্ব ব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, “বাংলাদেশের পশ্চিমাঞ্চল অনেক কৃষি ও প্রাকৃতিক দ্রব্য উত্পাদনে সমৃদ্ধ এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের প্রবেশদ্বার হওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনাময়।
“খামারগুলিকে বাজারের সঙ্গে, পশ্চিমাঞ্চলের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশগুলিকে ঢাকার সঙ্গে যুক্ত করে এবং ফলে করিডোর বরাবর বাণিজ্য, ট্রানজিট এবং সরবরাহ ব্যবস্থা জোরদার করে জেলাগুলোর অর্থনীতিতে উদ্দীপনা সৃষ্টির মাধ্যমে প্রকল্পটি এই অঞ্চলের সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন করবে।”
বিশ্ব ব্যাংক বলছে, ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নপূরণে দেশকে সহায়তা করতে ইন্টারনেট সুবিধা সহজলভ্য করতে প্রকল্পটি মহাসড়ক বরাবর ফাইবার অপটিক কেবল স্থাপন করবে। এর ফলে কোভিড-১৯ মহামারীর মতো সংকটে জরুরি সেবা ও ব্যবসা চালু রাখা সহজ হবে।
বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ পরিবহন বিশেষজ্ঞ রাজেশ রোহাতগি বলেন, “কোভিড ১৯ মহামারীর চাকরি ও আয় হারিয়ে দরিদ্ররা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে সহায়তার জন্য শ্রমঘন পুর কর্মকাণ্ডে যুক্ত করার মাধ্যমে ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে তাত্ক্ষণিকভাবে সামাজিক সুরক্ষা এবং জীবিকার ব্যবস্থা করবে। এমনকি মহামারী পরবর্তী সময়েও পুর কর্মকাণ্ডে এবং গ্রামীণ সড়ক ও বাজার সংযোগের প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে।
“এটি ভবিষ্যতে যে কোনও মহামারী বা সংকটের জন্য জরুরি প্রস্তুতির জন্য দেশের দুটি মূল পরিবহন সংস্থা - সড়ক ও জনপথ বিভাগ এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগকেও সহায়তা করবে।”
স্বল্প সময়ে ও কম খরচে উৎপাদিত পণ্য বাজারে পরিবহন নিশ্চিত করার মাধ্যমে পশ্চিম অঞ্চলে কৃষি সরবরাহ ব্যবস্থাকে দক্ষ করে তুলবে এই প্রকল্প। কৃষি উত্পাদনের উপর নির্ভরশীল প্রায় ৫৭ শতাংশ জনসংখ্যার খুলনা বিভাগে প্রকল্পটি করিডোর বরাবর স্টোরেজ সুবিধা উন্নত করবে যা কৃষকদের বর্জ্য হ্রাস, বিক্রয় বৃদ্ধি ও বেশি উপার্জনে সহায়তা করবে।
সহজ শর্তে অর্থায়ন সরবরাহকারী বিশ্বব্যাংকের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থার (আইডিএ) এই ঋণ চার বছরের গ্রেস পিরিওডসহ ৩৪ বছরের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে।
এই ঋণসহ ২০১৯-২০ অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের মোট প্রতিশ্রুত ঋণের পরিমাণ দাঁড়াল ২২৭ কোটি ডলারে।