প্রথম ‘ভার্চুয়াল’ এনইসিতে অনুমোদন পাচ্ছে ২ লাখ কোটি টাকার এডিপি

করোনাভাইরাস সঙ্কটের কারণে বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদ (এনইসি) বৈঠক হবে ‘ভার্চুয়ালি’।

জাফর আহমেদ জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2020, 02:08 PM
Updated : 18 May 2020, 02:08 PM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও সচিবরা এনইসি সম্মেলন কেন্দ্র থেকে এই বৈঠকে যোগ দেবেন।

ওই বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য আগামী ২০২০-২১ অর্থবছরের ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৪ কোটি ৭৯ লাখ টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) চূড়ান্ত হয়েছে বলে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে ইতিহাসে প্রথমবার এভাবে ভার্চুয়াল বৈঠক করতে বাধ্য হচ্ছি আমরা।”

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং তিনি গণভবন থেকে এই বৈঠকে যোগ দেবেন। অন্য মন্ত্রী ও সচিবরা শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কেন্দ্র থেকে বৈঠকে অংশ নেবেন।

অন্যান্য বছর এনইসি সম্মেলন কক্ষে সব মন্ত্রী ও সচিবদের উপস্থিতিতে এই বৈঠক হলেও এবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে মাত্র ১০ জন মন্ত্রী ও সচিব উপস্থিত থাকবেন বলে জানান মান্নান।

চলতি অর্থবছরের মুল এডিপির আকার ছিল ২ লাখ ২ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। তবে গত মার্চ মাসে তা সংশোধন করে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২১ কোটি টাকায় নামিয়ে আনা হয়।

করোনাভাইরাস সঙ্কটে বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার পদধ্বনির মধ্যে আগামী অর্থবছরের জন্য যে এডিপির আকার গ্রহণ করা হচ্ছে, তা চলতি অর্থবছরের সংশোধিত এডিপির তুলনায় ৬ দশমিক ৩৪ শতাংশ বেশি।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, আগামী অর্থবছরের জন্য যে এডিপি প্রস্তাব করা হয়েছে তাতে সর্বোচ্চ ৫২ হাজার ১৮৩ কোটি ৪৩ লাখ টাকা বা মোট বরাদ্দের ২৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ রাখা হয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার জন্য।

দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৫ হাজার ৯৮৪ কোটি ৮৭ লাখ টাকা প্রস্তাব করা হয়েছে ভৌত পরিকল্পনা, পানি সরবরাহ ও গৃহায়ণ খাতের জন্য। এ খাতের বরাদ্দ মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ৫৭ শতাংশ।

তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৮০৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা বা মোট বরাদ্দের ১২ দশমিক ০৯ শতাংশ দেওয়া হয়েছে বিদ্যুৎ খাতের জন্য।

চতুর্থ সর্বোচ্চ প্রায় ২৩ হাজার ৩৯০ কোটি টাকা বা ১১ দশমিক ৪০ শতাংশ বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে শিক্ষা ও ধর্ম খাতের জন্য।

পঞ্চম সর্বোচ্চ বরাদ্দ ১৮ হাজার ৪৪৭ কোটি ৫৭ রাখ টাকার বরাদ্দ প্রস্তাব করা হয়েছে বিজ্ঞান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের জন্য। এটি মোট বরাদ্দের প্রায় ৯ শতাংশ।

ষষ্ট সর্বোচ্চ প্রায় ১৫ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা বা ৭ দশমিক ৫৮ ভাগ বরাদ্দ রাখা হচ্ছে পল্লী উন্নয়ন ও পল্লী প্রতিষ্ঠান খাতের জন্য।

সপ্তম সর্বোচ্চ ১৩ হাজার ৩২ কোটি ৬০ লাখ টাকা বা মোট বরাদ্দের ৬ দশমিক ৩৫ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য পুষ্টি ও জনসংখ্যা খাতের জন্য।

অষ্টম সর্বোচ্চ ৮ হাজার ৩৮২ কোটি টাকা বা মোট বরাদ্দের ৪ দশমিক ০৯ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে কৃষি খাতের জন্য।

নবম সর্বোচ্চ ৫ হাজার ৫২৭ কোটি ৩৭ লাখ টাকা বা মোট বরাদ্দের প্রায় ২ দশমিক ৬৯ শতাংশ বরাদ্দ থাকছে প্রাণিসম্পদ খাতের জন্য।

দশম সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৪৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বা ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে জন প্রশাসন খাতের জন্য।