অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে সানেমের আট দফা

নভেল করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে সৃষ্ট অভিঘাত সামালে দুই বছরব্যাপী একটি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকনোমিক মডেলিং-সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 2 April 2020, 03:52 PM
Updated : 2 April 2020, 03:57 PM

এই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনে ২০২১ সাল থেকে শুরু হতে যাওয়া অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনাকে দুই বছর পিছিয়ে দিয়ে এতে বেশ কিছু সংস্কার আনার দাবিও জানিয়েছেন তিনি।

গত জানুয়ারি মাসে চীনের উহান শহরে শুরু হওয়া প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। সব ধরনের কাজ বন্ধ রেখে ঘরবন্দি হয়ে আছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষ।

বাংলাদেশেও ১৪ দিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও আত্মরক্ষার স্বার্থে সব শ্রেণি ও পেশার মানুষকে ঘরে অবস্থানের নির্দেশ দিয়েছে সরকার।

দেশের রেল, সড়ক, নদী, সমুদ্র ও আকাশ পথেও সব ধরনের যোগাযোগ প্রায় বন্ধ রয়েছে। আমদানি-রপ্তানিও মুখ থুবড়ে পড়েছে।

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় সেলিম রায়হান সঙ্কট থেকে উত্তরণে আটটি সুপারিশ তুলে ধরেন।

প্রথম দফা: দুই বছর মেয়াদি পুনরুদ্ধার পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য হবে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া।

দ্বিতীয় দফা: অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রারম্ভিক সময় দুই বছর পিছিয়ে ২০২২ সালে নিয়ে যাওয়া। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা নতুনভাবে লেখা প্রয়োজন, এই পরিকল্পনার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রাসঙ্গিকতা হারিয়েছে।

তৃতীয় দফা: তৈরি পোশাক খাতসহ অন্যান্য রপ্তানিমুখী শিল্প এবং অভ্যন্তরীণ বাজার-নির্ভর খাত ও এসএমই খাতে সহায়তা প্রদানের জন্য রাজস্ব উদ্দীপক (ফিসক্যাল স্টিমুলাস) প্যাকেজ ও মুদ্রাবিষয়ক নীতি প্রণয়ন করা।

চতুর্থ দফা: দরিদ্র, অতি দরিদ্র, প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে আকস্মিকভাবে অসহায় হয়ে পড়া মানুষদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির আওতা ও পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করা।

পঞ্চম দফা: বাণিজ্য, কর কাঠামো এবং ব্যাংকিং সেক্টরে ‘রাজনৈতিকভাবে বাস্তবায়নযোগ্য’ কিছু নীতি সংশোধন (পলিসি রিফর্ম) করা।

ষষ্ঠ দফা: রাজস্ব উদ্দীপনা (সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি ও কর কমানো) বাস্তবায়ন এবং মুদ্রাবিষয়ক নীতিকে সহজ করার জন্য অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উৎস থেকে অর্থ সংগ্রহের উপায় বের করা।

সপ্তম দফা: কমপক্ষে তিন বছরের জন্য এলডিসি থেকে উত্তরণের সময়কাল বিলম্বিত করা।

অষ্টম দফা: টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সময়কাল ২০৩০ থেকে ২০৩৫ এ নিয়ে যাওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক মহলে জোর প্রচেষ্টা চালানো।