গ্যাস-বিদ্যুতের প্রি-পেইড গ্রাহকদের জন্য বিকল্প উদ্যোগ

করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে সবার ঘরবন্দি হওয়ার মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের প্রি-পেইড গ্রাহকদের জন্য নির্বিঘ্ন সেবা নিশ্চিত করতে কোম্পানিভিত্তিক পৃথক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ফয়সাল আতিক নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2020, 05:32 PM
Updated : 27 March 2020, 05:32 PM

এই দুই সেবাখাতের পোস্ট পেইড গ্রাহকদের বিল পরিশোধে ৩/৪ মাসের শিথিলতার কথা আগেই ঘোষণা করা হয়। সে অনুযায়ী মে মাসের আগে বিদ্যুতের বকেয়া না দিলেও সংযোগ সচল থাকবে। আর গ্যাসের বিল পরিশোধে জুন মাস পর্যন্ত সময় পাচ্ছেন গ্রাহকরা।

দেশের গ্যাস চাহিদার ৫০ শতাংশ সরবরাহকারী তিতাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলি আল মামুন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আগে প্রি-পেইড গ্রাহকরা ২০০ টাকার ইমার্জেন্সি ব্যালেন্স ধার করতে পারতেন। এখন এর সীমা দুই হাজার টাকা করা হয়েছে। এছাড়া ১০ জন কর্মকর্তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে যেকোনো সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান দিতে। কারও মিটারে সমস্যা দেখা দিলে টেকনেশিয়ানরা বাসায় গিয়ে সমাধান করে আসবেন। কারণ ‘লক ডাউন’ পরিস্থিতির কারণে আনেক রিচার্স সেন্টার বন্ধ রয়েছে।

ঢাকায় তিতাসের প্রি-পেইড গ্রাহক রয়েছেন প্রায় এক লাখ।

তিতাস গ্যাসের প্রিপেইড গ্যাস মিটার ব্যবহারকারী গ্রাহকরা প্রয়োজনে আব্দুল বাকী (০১৭২১৭৯৩২৩২), মেহরাজ মিয়া (০১৭৫৪৬৭৩৩৩৪), মনির হোসেন (০১৯১৪৭৬৪২৪৪), আব্দুর নুর (০১৬১১৭৭৭৪৫৩) জুনাল মিয়া (০১৭২১১৮০৭৯৯), আশরাফুল আলম (০১৬৪২৪৯১৩৫৮), সৈয়দ দিদারুল ইসলাম (০১৭৮১৪৮৪২৩১), সান্তনু কুমার বসাক (০১৭০৬২৫৯৩৪৪), মাহমুদুল হাসান (০১৬১২৭৪৫১৭৪) ও আশীষ কুমার নাথ (০১৮৪২৬১৩৬৪৯) এর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।

এছাড়া (২৪ ঘন্টা) হট লাইন নম্বর-১৭০৩৭২৯৩৮৯, ০১৭০৩৭২৯৪৫১ ও ০১৭০৩৭২৯৫০৫ চালু থাকবে।

চট্টগ্রাম অঞ্চলের গ্যাস বিতরণের নিয়োজিত কর্ণফুলি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খায়েজ আহমেদ মজুমদার জানান, চট্টগ্রাম শহরে তাদের ৬০ হাজার প্রি-পেইড মিটারের গ্রাহক রয়েছেন। এসব মিটার রিচার্জের জন্য আগের সবগুলো ব্যাংকবুধ ও কর্ণফুলির কার্যালয়ের ১৫টি পজ মেশিন রয়েছে। এর পাশাপাশি ইমার্জেন্সি ব্যালেন্সের ২০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে এক হাজার টাকা করা হয়েছে।

ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক (প্রশাসন ও মানবসম্পদ) জয়ন্ত কুমার সিকদার বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে গ্রাহকদেরকে ডিপিডিসির অফিসে এসে ভিড় না করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ডিপিসির গ্রাহকদের এক সপ্তাহ আগেই মিটার রিচার্জ করতে এসএমএস এর মাধ্যমে বলে দেওয়া হয়েছিল। এর পরেও বর্তমান পরিস্থিতিতে কারও যদি রিচার্জের প্রয়োজন হয় তাহলে ফোন করে জানাতে পারবেন। ভেন্ডররা বাসায় গিয়ে রিচার্জ করে দিয়ে আসবে।

এছাড়া গ্রাহকদের জন্য হ্যাপি আওয়ার পদ্ধতিটাও চালু রয়েছে। অর্থাৎ শুক্র শনিবার অফিস বন্ধ থাকার সময় কারও যদি মিটারের ব্যালেন্স শেষ হয়ে যায় তাহলে অফিস খোলা আগ পর্যন্ত মিটার সচল থাকছে।

ঢাকার আরেক বিতরণ সংস্থা ডেসকোর প্রধান প্রকৌশলী (ইস্ট জোন) একেএম মহিউদ্দিন জানান, তাদের মোট ২ লাখ ৯২ হাজার গ্রাহকের মধ্যে ২ লাখ গ্রাহকের প্রি-পেইড স্মার্ট মিটার রয়েছে। এসব মিটারে আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত টাকা শেষ হয়ে গেলেও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হবে না এমন পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বাকি ৭৫ হাজার প্রি-পেইড মিটারের রিচার্জের জন্য ভেন্ডর সেন্টার ও ব্যাংকের বুথগুলো এখনও চালু রয়েছে। এছাড়া যদি কোনো গ্রাহক বাসা থেকে বের হতে না চান তাহলে ভেন্ডররা বাসয় গিয়ে রিচার্জ করে দিয়ে আসবেন, সেই ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এছাড়া উত্তরাঞ্চলের গ্রাহকদের জন্য নেসকো, খুলনা অঞ্চলের গ্রাহকদের জন্য ওজোপাডিকোসহ অন্যান্য বিতরণ কোম্পানিগুলোও একই ধরনের বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছে। এসব উদ্যোগ ওয়েবসাইটে ও বিভিন্ন পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে। অনেক কোম্পানি গ্রাহকদের কাছে এসএমএস দিয়েও বিষয়গুলো জানাচ্ছেন বলে জানা গেছে।