এবার ৬৪ উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে বোরো সংগ্রহ

অ্যাপের মাধ্যমে ১৬ উপজেলার কৃষকদের কাছ থেকে আমন ধান সংগ্রহে সফলতা আসায় এবার সব জেলার একটি করে অর্থাৎ দেশের ৬৪ উপজেলায় একই প্রক্রিয়ায় বোরো সংগ্রহ করবে সরকার।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 March 2020, 06:37 AM
Updated : 11 March 2020, 06:39 AM

আমন সংগ্রহ নিয়ে বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার এ তথ্য জানান। কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাকও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এবার ৬ লাখ ২৬ হাজার ৯৯১ মেট্রিকটন আমন ধান, ৩ লাখ ৩৭ হাজার ৬১৮ টন সিদ্ধ চাল এবং ৪৩ হাজার ৯০০ টন আতপ আমন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল সরকারের। সেজন্য কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে তালিকা সংগ্রহ করা হয়।

“সর্বপ্রথম এবার ৬ লাখ ২৭ হাজার টন আমন ধান সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। কৃষকদের নায্যমূল্য দেওয়ার জন্য আমাদের এই প্রয়াস।”

খাদ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃত কৃষক যেন ধান দিতে পারে এবং কোনো মধ্যস্বত্বভোগী যেন এর মধ্যে আসতে না পারে সেজন্য লটারি করে কৃষক নির্বাচন করা হয়েছে।

“১৬ উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান কেনা হয়েছে। অ্যাপের মাধ্যমে ওই ১৬ উপজেলায় এবার বোরো ধান কেনা হবে। এছাড়া বাকি ৪৮ জেলার সদর উপজেলা থেকেও অ্যাপের মাধ্যমে বোরো ধান কেনা হবে।”

স্বচ্ছতার সঙ্গে আমন ধান সংগ্রহের চেষ্টার কথা তুলে ধরে সাধন চন্দ্র বলেন, “কিছু ভুলক্রটি থাকতেই পারে। তবে কৃষি এবং খাদ্য মন্ত্রণালয় একসাথে কাজ করলে ভালো কিছু করা যায় এটা তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।”

কৃষকের অ্যাপ

অ্যাপে ধান বিক্রি করতে একজন কৃষককে তার ফোনে ‘কৃষকের অ্যাপ’ নামে একটি অ্যাপ ডাউনলোড করে নিতে হবে।

তারপর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর ও মোবাইল নম্বর দিয়ে নিবন্ধন করতে হবে।

কৃষকের স্মার্টফোন না থাকলে ইউনিয়ন তথ্যসেবাকেন্দ্রে গিয়ে তিনি এ সেবা নিতে পারবেন।

ধানের নাম, জমির পরিমাণ, কী পরিমাণ ধান বিক্রি করতে চান- এসব তথ্য জানিয়ে ওই অ্যাপের মাধ্যমে সরকারের কাছে ধান বিক্রির আবেদন করবেন কৃষক।

এরপর নিবন্ধন, বরাদ্দের আদেশ ও দাম পরিশোধের সনদসহ তথ্য এবং ধান বিক্রির জন্য কবে কোন গুদামে যেতে হবে, সেসব তথ্য এসএমএসে কৃষককে জানিয়ে দেওয়া হবে।

আবেদনকারী বেশি হলে লটারির মাধ্যমে কৃষক নির্বাচন করে ধান কেনা হবে।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় কৃষকরা ফসলের নায্যমূল্য পান না। ফলে তারা তাদের প্রয়োজনগুলো কীভাবে মেটাবে সেই প্রশ্ন থেকে যায়।

“আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম সরাসরি প্রান্তিক এবং ক্ষুদ্র চাষীদের কাছ থেকে ধান কিনব। লটারির মাধ্যমে নির্বাচন করে যাদের কাছ থেকে আমন কেনা হয়েছে বোরো কেনার সময় তাদের নাম দেওয়া হবে না।”

এবার ধান সংগ্রহ নিয়ে ‘নেতিবাচক’ কোনো খবর প্রকাশ না হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেন কৃষিমন্ত্রী।

তিনি বলেন, “আমরা আশাবাদী, আগামী বোরো মৌসুমে সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ করতে পারব এবং এর ইতিবাচক প্রভাব বাজারে পড়বে।”

খাদ্য সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম বলেন, এবার সব জেলার একটি করে উপজেলায় পাইলট ভিত্তিতে অ্যাপের মাধ্যমে বোরো ধান কেনা হবে। আর যে ১৬ উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে আমন ধান কেনা হয়েছে সেসব উপজেলায় অ্যাপের মাধ্যমে মিলারদের কাছ থেকে বোরো চাল কেনা হবে।

কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান ছাড়াও উভয় মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।