ঢাকায় সাবওয়ে নির্মাণে পরামর্শক খরচ বাড়লো

ঢাকাবাসীকে যানজটের সমস্যা থেকে মুক্তি দিতে আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের ব্যাপ্তি বাড়ায় সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা এবং প্রাথমিক নকশা প্রণয়নের ব্যয় বাড়ছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 March 2020, 04:30 PM
Updated : 4 March 2020, 04:30 PM

এ কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্পেনের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান টেকনিকা ওয়াই প্রয়েক্টস, এস এ ব্যয় বাড়িয়ে ৩১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা করার যে প্রস্তাব দিয়েছিল, তা বুধবার ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন পেয়েছে।

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নাছিমা বেগম জানান, আগের পরিকল্পনায় মোট ৯০ কিলোমিটার সাবওয়ে নির্মাণের কথা ছিল। এখন তা ১৪৮ কিলোমিটার বাড়িয়ে ২৩৮ কিলোমিটার করা হচ্ছে। 

জাপানের ওসাকার আদলে ঢাকায় সাবওয়ে নির্মাণের পরিকল্পনা হচ্ছে

এ প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই সমীক্ষা এবং প্রাথমিক নকশা প্রণয়নের জন্য ২০১৮ সালের অগাস্টে টেকনিকা ওয়াই প্রয়েক্টসের সঙ্গে ২১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার চুক্তি হয়েছিল। সেই খরচ এখন ৯৮ কোটি ৫০ লাখ টাকা বাড়িয়ে ৩১৭ কোটি ৯৪ লাখ টাকা করা হয়েছে বলে জানান নাছিমা।

২০১৮ সালে করা চুক্তি অনুযায়ী ঢাকা মহানগরীতে চারটি রুটে আন্ডারগ্রাউন্ড সাবওয়ে নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাই করার কথা ছিল টেকনিকা ওয়াই প্রয়েক্টসের। সেই পরিকল্পনায় এখন পরিবর্তন আসছে।

সাবওয়ে হলে ভূ-পৃষ্ঠ থেকে ২০-৩০ মিটার নিচ দিয়ে চলবে যাত্রীবাহী ট্রেন। এতে মহানগরীর প্রায় চল্লিশ লাখ যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে এবং যানজটের সমস্যা অনেকাংশে মিটে যাবে বলে সরকার আশা করছে।

নাছিমা বেগম জানান, এদিন বৈঠকে মোট ছয়টি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে ৬০৫ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ের চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। বাকি দুটি প্রকল্পের মধ্য একটি ফেরত পাঠানো হয় এবং অন্যটিতে পুণঃদরপত্রের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের অধীনে জিসিবি এলাকায় বার্থ নম্বর-৪ ও ৮ এ কার্গো হ্যান্ডলিং অব্যাহত রাখতে ৫ বছরের জন্য বার্থ অপারেটর (কার্গো) নিয়োগে ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন পেয়েছে এদিন।

এতে মোট ব্যয় হবে  ৫৬ কোটি ৮২ লাখ ৩৪ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২৮ কোটি ৪২ লাখ ৫৭ হাজার টাকায় ১ ও ২ নম্বরে লটের কাজ পেয়েছে মেসার্স ইউনাইটেড ট্রেডিং কোম্পানি। আর বার্থ-৮ এর কাজ করতে মেসার্স পঞ্চরাগ উদয়ন সংস্থা লিমিটেড নেবে ২৮ কোটি ৩৯ লাখ ৭৭ হাজার টাকা।

কিশোরগঞ্জ-করিমগঞ্জ-চামড়াঘাট জেলা মহাসড়ক যথাযথ মানে উন্নীতকরণসহ ছয়না-যশোদল-চৌদ্দশত বাজার সংযোগ সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের পূর্ত কাজের ক্রয় প্রস্তাব এদিন অনুমোদন পেয়েছে।

তাহের ব্রাদার্স লিমিটেড, রানা বিল্ডার্স প্রাইভেট লিমেটেড এবং মোজাহার এন্টারপ্রাইজ প্রাইভেট লিমিটেড ১৮১ কোটি ৮০ লাখ ৫ হাজার ৩৬১ টাকায় এ কাজ করবে।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের অধীনে ‘আরবান ইফ্রেস্ট্রাকচার ইম্প্রুভমেন্ট প্রিপারেটারি ফ্যাসিলিটি (ডিপিএইচই) প্রকল্পের সমীক্ষার জন্য পরামর্শক ও নকশা তৈরির কাজ পেয়েছে জাপানের এনজেএস কনসালটেন্ট কোম্পানি। সেজন্য তারা ৪৯ কোটি ১৩ লাখ টাকা পাবে।

নাছিমা বলেন, এলেঙ্গা-হাটিকামরুল-রংপুর মহাসড়ক চার লেনে উন্নীকতকরণ প্রকল্পের পঞ্চম লটের পূর্ত কাজের জন্য পুনরায় দরপত্র ডাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অধীনে প্রায় ৫৮৯ কোটি টাকা ব্যয়ের এই প্রকল্পটির কাজ সর্বনিম্ম দরদাতা হিসেবে আব্দুল মোনেম লিমিটেডকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠান এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক পুনরায় টেন্ডার দেওয়ার সুপারিশ করে।

পরিসংখ্যান বিভাগের ‘ন্যাশনাল হাউসহোল্ড ডেটাবেইজ (এনএইচডি)’ প্রকল্পের পরামর্শক ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব ফেরত পাঠিয়েছে ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে এ প্রকল্পের বিষয়ে আরও পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলে জানান নাছিমা।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর এ প্রকল্পে কাজ বেড়ে যাওয়ায় অতিরিক্ত ১৩ কোটি ৩ লাখ ৪ হাজার ৭৪০ টাকা খরচ হয়েছে। ফলে প্রকল্পের মোট ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১২৫ কোটি ৪৭ লাখ ৩০ হাজার ৩৬২ টাকা।