মোংলা বন্দরের উন্নয়নে ৬ হাজার কোটি টাকা

মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বাড়াতে ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকার প্রকল্প চূড়ান্ত অনুমোদন পেয়েছে।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Feb 2020, 11:35 AM
Updated : 18 Feb 2020, 11:38 AM

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এই প্রকল্পের পাশাপাশি আরও আটটি প্রকল্পে সায় দেওয়া হয়েছে।

রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বৈঠকের পর পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, ‘মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ’ শিরোনামের প্রকল্পের জন্য মোট ৬ হাজার ১৪ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

এর মধ্যে ভারতীয় তৃতীয় লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) থেকে ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ১ হাজার ৫৫৫ কোটি ২১ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে। ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।

দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম এই বন্দর উন্নয়ন নিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, “বন্দরটি আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলোর মালামাল পরিবহনের প্রস্তাব রয়েছে সরকারের কাছে। ইতোমধ্যে নেপাল ও ভারতের প্রতিনিধিগণ এই বন্দর পরিদর্শনও করে গেছেন।”

এরমধ্যেই বন্দরটির সক্ষমতা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন,  “সার্বিকভাবে এই বন্দরের আরও সক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আধুনিকায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।”

প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুযায়ী, মোংলা বন্দরের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ১ ও ২ নম্বর জেটিতে কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। সব সুবিধাসহ কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ও ডেলিভারি ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে।

এছাড়াও নির্মাণ করা হবে সার্ভিস ভেসেল জেটি, শেড, কার্যালয়, এমপিএ টাওয়ার, পোর্ট রেসিডেন্সিয়াল কমপ্লেক্স। কমিউনিটি সুবিধা প্রদানেরও ব্যবস্থা করা হবে।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে বন্দর ভবন সম্প্রসারণ, মেকানিক্যাল ওয়ার্কশপ, সরঞ্জাম ইয়ার্ড, সরঞ্জাম শেড এবং সব যন্ত্রপাতিসহ পুল ও স্লিপওয়ে এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতিসহ মেরিন ওয়ার্কশপ কমপ্লেক্স নির্মাণসহ সিকিউরিটি সিস্টেম, রাস্তা, ইয়ার্ড, শেড, নিরাপত্তা প্রাচীর, অটোমেশন ও অন্যান্য অবকাঠামোসহ বন্দরের সংরক্ষিত এলাকা সম্প্রসারণ করা হবে।

মন্ত্রী জানান, বৈঠকে মোংলা বন্দর উন্নয়নসহ মোট ৯টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, যেগুলোতে মোট ১৩ হাজার ৬৩৯ কোটি টাকা ব্যয় হবে।

এই বিপুল ব্যয়ের মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৮ হাজার ৮৮৬ কোটি ৪৪ লাখ টাকা, ভারতীয় ঋণ হিসেবে ৪ হাজার ৪৫৯ কোটি ৪১ লাখ টাকা এবং সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ২৯৩ কোটি ১৬ লাখ টাকা যোগান দেওয়া হবে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হল-

>> ‘নোয়াখালী জেলার বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম হাজী কামাল উদ্দিন সড়ক (বেগমগঞ্জের গ্লোব ফ্যাক্টরি হতে কবিরহাটের ফলাহারি পর্যন্ত ) (জেড-১৪৫৩) উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে ২৮২ কোটি ১১ লাখ টাকা।

>> ‘আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সড়কসহ কর্ণফুলী টানেল সংযোগ সড়ককে চার লেনে উন্নীতকরণ (শিকলবাহা-আনোয়ারা সড়ক)’ প্রকল্প। এতে ব্যয় হবে ৪০৭ কোটি টাকা।

>> ‘শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা ব্রীজ এপ্রোচ) সড়ক উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় এক হাজার ৬৮২ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।

>> ‘পাটুরিয়া এবং দৌলতদিয়ায় আনুসঙ্গিক সুবিধাদিসহ নদী বন্দর আধুনিকায়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় প্রায় এক হাজার ৩৫২ কোটি টাকা।

>> ‘রাজশাহী জেলার চারঘাট ও বাঘা উপজেলায় পদ্মা নদীর বাম তীরের স্থাপনাসমূহ নদী ভাঙ্গন হতে রক্ষা’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৭২২ কোটি ২৪৫ লাখ টাকা।

>> ‘বিলুপ্ত ছিটমহল ও নদী বিধৌত চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১২৯ কোটি টাকা।

>>  ‘হাওর অঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন’ প্রকল্প। এর ব্যয় ১১৮ কোটি টাকা।

>> ‘রাজশাহী মহানগরীর সমন্বিত নগর অবকঠামো উন্নয়ন’ প্রকল্প। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ২ হাজার ৯৩২ কোটি টাকা।