প্রকল্প বাস্তবায়নে মূল ভূমিকা পিডির: তাজুল ইসলাম

সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সঠিক সময়ে বাস্তবায়নে প্রকল্প পরিচালকদেরই মুখ্য ভূমিকা রাখতে হবে বলে মত দিয়েছেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী তাজুল ইসলাম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Sept 2019, 01:09 PM
Updated : 22 Sept 2019, 01:09 PM

প্রকল্পের সুফল জনগণের কাছে সঠিকভাবে পৌঁছে দিতে কাজের গুণগত মান ও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য নির্ধারিত সময়ের দিকে বেশি নজর দেওয়ার পরামর্শও দেন তিনি।

রোববার হোটেল সোনারগাঁওয়ে এডিবি আয়োজিত ‘দ্রুত প্রকল্প বাস্তায়ন’ শীর্ষক এক কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে এসব কথা বলেন মন্ত্রী।

বাংলাদেশ এডিবির ঋণ নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী দেশগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। আন্তর্জাতিক এই সংস্থার ৬৮টি সদস্য দেশের মধ্যে বাংলাদেশেই সর্বপ্রথম সপ্তাহব্যাপী এধরনের কর্মশালার আয়োজন করল এডিবি। সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্তত ২২০ জন কর্মকর্তা এই কর্মশালায় অংশ নিয়েছেন।

কর্মকর্তাদের উদ্দেশে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, সঠিকভাবে একবার টাকা খরচ করতে পারলে তার সুফল দীর্ঘদিন ধরে পাওয়া যাবে। সেজন্য প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজের মানও নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

এক্ষেত্রে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক, রাজধানীর ফ্লাইওভারসহ এডিবির কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেন তিনি।

এডিবির আবাসিক প্রতিনিধি মনমোহন পারকাশ বলেন, “কার্যকর ও দক্ষ উন্নয়নের জন্য দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যত দ্রুত প্রকল্প বাস্তবায়ন করা যাবে এর সুফল তত দ্রুত জনগণের কাছে পৌঁছাবে আর এভাবেই মানুষকে দ্রুত উন্নয়নের সুফল দেওয়া যাবে।”

এডিবির হিসাবে, গত ১০ বছরে বাংলাদেশ গড়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বৈশ্বয়িক অর্থনীতিতে নানামুখী চ্যালেঞ্জর মধ্যেও এই দেশ ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মডেল হিসাবে বিবেচিত। ২০১৯ সালে ৮ দশমিক ১ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পাশপাশি ২০২০ সালে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকবে বলে আশা করা যাচ্ছে। এর মাধ্যমে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দেশটি থাকবে দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশগুলোর তালিকায়। বর্তমানে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ১৯০৯ ডলার।

এডিবির সঙ্গে বাংলাদেশের অংশীদারিত্ব গত ৪৬ বছর ধরে। এডিবির অর্থিক কর্মকাণ্ডে বাংলাদেশের রয়েছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পোর্টফোলিও। বর্তমানে ১০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে এখানে বাস্তবায়নের পথে রয়েছে অন্তত ৫৪টি প্রকল্প। গত পাঁচ বছরে এডিবির প্রকল্পে অংশীদারিত্ব তিনগুণ বেড়েছে। কেবল ২০১৮ সালে বিভিন্ন প্রকল্পে ৪ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে ৮টি একক প্রকল্পে দেওয়া হয়েছে ঋণ ও অনুদান আকারে ৩ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার।   

বাংলাদেশে এডিবি মূলত ছয়টি খাতে বিনিয়োগ করছে। সেগুলো হচ্ছে জ্বালানি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পানি ও অন্যান্য অবকাঠামো, কৃষি-প্রাকৃতিক সম্পদ এবং গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন, ফিন্যান্স এবং শিক্ষা-স্বাস্থ্য।

এডিবির অর্থায়নে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোর মধ্যে রয়েছে- যমুনা সেতু, আশুগঞ্জ বিদ্যুৎকেন্দ্র, ঢাকা ওয়াসা, খুলনা ওয়াসা, সড়ক ও রেলপথ নেটওয়ার্ক উন্নয়ন ও চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন।

আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উন্নয়ন, জয়দেবপুর-এলেঙ্গা-রংপুর-বুড়িমারি-বাংলাবন্দা মহাসড়ক, ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইন, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, ঢাকা-লাকসাম রেলওয়ে কর্ড লাইন, গাবতলী থেকে পান্থপথ হয়ে আফতাব নগরের এমআরটি লাইন-৫ সহ আরও কয়েকটি প্রকল্পে পাঁচ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানান মনমোহন পারকাশ।