মুদ্রানীতি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত করবে: এফবিসিসিআই

নতুন মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য কমিয়ে আনায় বিনিয়োগ নিরুৎসাহিত ও বাধাগ্রস্ত করবে বলে মনে করছে ব্যবসায়ী শিল্পপতিদের শীর্ষ সংগঠন-এফবিসিসিআই।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 August 2019, 04:58 PM
Updated : 3 August 2019, 05:52 PM

বুধবার মুদ্রানীতি ঘোষণার তিন দিন পর শনিবার এক বিবৃতিতে এফবিসিসিআই বলেছে, ঘোষিত মূদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১৪ দশমিক ৮ শতাংশ। আগের মুদ্রানীতিতে এই লক্ষ্য ছিল ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ।

“উচ্চতর প্রবৃদ্ধি অর্জনে ব্যাপক বিনিয়োগ প্রয়োজন। সহজলভ্য ঋণ প্রবাহ ছাড়া কাঙ্খিত বিনিয়োগ ও শিল্পায়ন সম্ভব নয়। বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে দেয়ায় এ খাতে ঋণপ্রবাহ সংকুচিত হতে পারে, যা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত ও বাধাগ্রস্ত করবে।”

বিভিন্ন সীমাবদ্ধতার কারনে বেসরকারি খাতে ঋন প্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হলেও বিনিয়োগের স্বার্থে এ খাতে ঋণ প্রবাহের প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা হ্রাস করা সংগত নয় বলে এফবিসিসিআই মনে করে।

অন্যদিকে ঘোষিত মূদ্রানীতিতে সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করে ২৪.৩ শতাংশ করা হয়েছে যেখানে গত অর্থবছরে এ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০.৯ শতাংশ। সরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বৃদ্ধি করায় তা বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহের ক্ষেত্রে চাপ সৃষ্টি করতে পারে।

‘এতে উৎপাদনশীল খাত বিশেষ করে ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে’ উল্লেখ করে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণের উচ্চতর প্রবৃদ্ধি সংকুলানের সুযোগ রাখার আহ্বান জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

মূদ্রানীতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নে মনিটরিং জোরদারের জানিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, প্রবৃদ্ধিকে আরও গতিশীল করার স্বার্থে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী সকল ব্যাংকে এক অংকের (সিঙ্গেল ডিজিট) সুদহার নিশ্চিত করা প্রয়োজন বলে এফবিসিসিআই মনে করে।

“এখনো প্রায় সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সুদের হার এক অংকের ওপরে রেখেছে। এফবিসিসিআই মনে করে শিল্পায়নের স্বার্থে ঋণের সুদের হার অবিলম্বে এক অংকে নামিয়ে আনবে।”

এফবিসিসিআই বলেছে, খেলাপি ঋণের বিষয়টি একটি সংবেদনশীল ও গুরুত্বপূর্ন বিষয়। দীর্ঘদিন যাবৎ এ দুর্বিসহ বোঝা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্তরায় হিসেবে কাজ করছে। ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে আরো দক্ষ এবং বিনিয়োগবান্ধব করতে খেলাপি ঋণ কমানোর প্রচেষ্টা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোর ঝুঁকি ব্যবস্থাপনাকে আরো জোরদার করা প্রয়োজন।

সরকারের ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরনের ধারাবাহিকতায় ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে সম্পূর্ন ডিজিটালাইজড এবং পেপারলেস কার্যক্রমে নিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে স্বচ্ছ, যুগোপযোগী ও আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মনিটরিং ও সুপারভিশনকে আরও নিবিড় ও জোরদার করার জানিয়েছে এফবিসিসিআই।

অর্থবছরের সাথে মিল রেখে একবছর মেয়াদি মূদ্রানীতি প্রণীত হওয়ায় মূদ্রানীতি এবং বাজেট ও রাজস্ব নীতির মধ্যে সমন্বয় থাকবে বলে এফবিসিসিআই মনে করে।