তাদের মুখোশ খুলে দিন: এনবিআর চেয়ারম্যান

যারা সরকারের দেয়া বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা নিয়ে বিদেশ থেকে বিনা শূল্কে সুতা বা কাপড় এনে দেশের বাজারে বিক্রি করছে তাদের ‘মূখোশ উন্মোচন’ করার দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 May 2019, 06:35 PM
Updated : 5 May 2019, 06:35 PM

রোববার ‘শুল্কের আধুনিকায়ন এবং পোশাক শিল্পের বাইরে অন্য রপ্তানিরকারকদেরও বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধার সম্প্রসারণ’ শীর্ষক এক কর্মশালায় বক্তব্যে তিনি গণমাধ্যমের প্রতি এ আহ্বান জানান।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল বা প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে বিদেশ থেকে শুল্কমুক্ত সুবিধা নিয়ে দেশে আমদানি করে আবার ওই পণ্যের শতভাগ রপ্তানি করার শর্তে বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা নিয়ে পণ্য এনে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী দেশের বাজারে সয়লাব করে দিচ্ছে। আপনারা তাদের মূখোশ উন্মোচন করে দেন।”

ইন্টারন্যাশনাল ফাইন্যান্স কর্পোরেশনের (আইএফসি) সহযোগিতায় ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এই কর্মশালার আয়োজন করে।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংক গ্রুপের প্রাইভেট সেক্টর স্পেশালিস্ট নূসরাত নাহিদ ববি কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশের রপ্তানির প্রায় ৮৫ শতাংশই তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে আসে। তাই এই খাতের উন্নয়নের জন্য বন্ডেড ওয়্যারহাউস সুবিধা দেওয়া হলেও তার অপব্যবহার চলছে।

যারা তা করছে, তাদের বিরুদ্ধে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তা নিয়ে অভিযান জোরদার করা হবে বলে জানান তিনি।

“অভিযান চালিয়ে বন্ডেড ওয়্যার হাউসের ১৩টি লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে, ১৭টি কোম্পানিকে শো-কজ এবং ২৯টি লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে।”

ব্যবসায়ীদের এই অপব্যবহার রোধ করতে বন্ডেড ফ্যাসিলিটি অটোমেটেড করা হবে বলে জানান এনবিআর চেয়ারম্যান।

অনুষ্ঠানে জায়েদি সাত্তার বলেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যখন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার জন্ম হয় তখন আমদানিকে প্রাধান্য দিয়ে নীতি প্রণয়ন করা হতো। কিন্তু ওই নীতি বিশ্বের দেশগুলোকে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান করতে পারেনি। ১৯৮০‘র দশকে এসে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা রপ্তানি উন্নয়ন বান্ধব নীতি গ্রহণ করে। মুলত এরপর থেকেই বিশ্ব অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ায়।

তিনি বলেন, “চীন রপ্তানির মাধ্যমেই এই উন্নয়ন করেছে। শুধু অভ্যন্তরীণ বাজার দিয়ে ৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন সম্ভব নয়।”
জায়েদি সাত্তার বলেন, প্রতি বছর আমাদের ২০ লাখ তরুণ শ্রম বাজারে যুক্ত হচ্ছে। এই বিপুল পরিমাণ কর্মসংস্থান একমাত্র রপ্তানি বাড়িয়ে করা সম্ভব। তাই রপ্তানি খাতকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে প্রতিযোগিতা সক্ষম করে তুলতে হবে।

“রপ্তানিতে বাংলাদেশের ১৩ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি। বিশেষ করে আমাদের রপ্তানি প্রতিযোগী দেশগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। এছাড়াও সম্পূরক শুল্কও আমাদের অনেক বেশি।”

অনুষ্ঠানে নুসরাত নাহিদ ববি বলেন, পোশাক শিল্পের বাইরে বন্ডেড ওয়্যার হাউজ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে চামড়া খাত এগিয়ে আছে। এ খাতটিকে পাইলট ভিত্তিতে বন্ডেড ওয়্যার হাউস সুবিধা দেওয়া যায়।