বাজেটে কর্মসংস্থানের রূপরেখা দাবি

আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে কর্মসংস্থানের একটি রূপরেখা রাখার দাবি জানিয়েছে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলন।

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 April 2019, 02:40 PM
Updated : 7 April 2019, 02:40 PM

রোববার এক প্রাক বাজেট আলোচনা সভায় সরকারের কাছে এ দাবি জানায় বেসরকারি সংগঠনগুলোর সমন্বয়ে গঠিত এ সংগঠনটি।

রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে এ সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সঞ্চালনায় ছিলেন একশন এইড বাংলাদেশের আবাসিক পরিচালক ফারাহ্ কবীর।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধে গণতান্ত্রিক বাজেট আন্দোলনের গবেষণা সম্পাদক মনোয়ার মোস্তফা বলেন, “জাতীয় বাজেট কিংবা সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনা এক রাজনৈতিক এলিট, আমলাতন্ত্র ও ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের নিরস্কুশ ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। বাজেটের সাধারণ জনগেণর অংশগ্রহণ সীমিত হয়ে পড়েছে।

“যারা চাকরি করছেন তাদের বেতন বাড়াচ্ছেন। আর যারা বেকার রয়েছেন, তাদের জন্য কী করছেন? তাই আগামী জাতীয় বাজেটে কর্মসংস্থানের একটি রূপরেখা থাকা দরকার।”

তিনি বলেন, “এদেশের  মোট কর্মসংস্থানের ৯৬ শতাংশ ব্যক্তিখাতের। কিন্তু ব্যক্তিখাতে বিনিয়োগ ২২-২৩ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে।”

মনোয়ার বলেন, বাংলাদেশে প্রগতিশীল কর ব্যবস্থার অনুপস্থিতি, সম্পদের উপর যথাযথ কর ধার্য না করা এবং সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ণয়ে সমস্যা সামিগ্রকভাবে বৈষম্য তৈরি করছে।

“বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ কখনোই জিডিপির ১ শতাংশও অতিক্রম করেনি। একই অবস্থা শিক্ষা পরিবহন, নিরাপত্তা খাতে। শিক্ষার গুণগত মান অত্যন্ত নিচুতে।”

আবুল কামাল আজাদ বলেন, “সরকার নির্বাচনী ইশতেহারে জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তা বাজেটের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে কতটুতু প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন হচ্ছে, কতটকু হলো না , সে বিষয় জনগণকে জানাতে হবে।”

সভায় সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, প্রবৃদ্ধি নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। বলা হচ্ছে দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য ভাল হচ্ছে। কিন্তু  সাধারণ জনগণের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটছে না।

“দেশের ওপরের দিকের ৫ শতাংশ পরিবারের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ৮৮ শতাংশ। আর নিচের দিকের ৫ শতাংশ পরিবারের আয় কমেছে ৫১ শতাংশ।  বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশের মতো ভারতও  শীর্ষ  প্রবৃদ্ধি অর্জনকারী দেশের তালিকায় রয়েছে। মজার বিষয় হলো ভারতের ১০১ জন অর্থনীতিবিদ সম্প্রতি বিভ্রান্তির প্রবৃদ্ধি থেকে জনগণকে মুক্ত করার আহ্বান জানিয়েছেন।”

আলোচনায় বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ডা. রশীদ ই মাহবুব বলেন, কমিউনিটি চিকিৎসার সুফল বিশ্বব্যাপী প্রচার করছে সরকার। এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত হয়েছে বলা হচ্ছে। কিন্তু দরিদ্র মানুষ স্বাস্থ্য সেবার ৬৭ শতাংশ অর্থ নিজের পকেট থেকে ব্যয় করছে। এ ব্যয় জোগান দিতে গিয়ে দরিদ্রের সংখ্যা বাড়ছে।

ফারাহ কবীর বলেন, শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আগামী বাজেটে এ  বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। একই সঙ্গে দলিত শ্রেণির জন্যও বাজেটে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।