বেসরকারি খাতকে চালকের আসনে চান নতুন অর্থমন্ত্রী

নতুন সরকারে অর্থমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়া আ হ ম মুস্তফা কামাল অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বেসরকারি খাতের অবদানই বেশি করে চাইছেন।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2019, 04:21 PM
Updated : 8 Jan 2019, 04:21 PM

তিনি বলেছেন, “আগামী ৫ বছর ড্রাইভিং সিটে বসবে আমাদের প্রাইভেট সেক্টর। এরা যে যেখানে চলে গিয়ে থাকুক, আমি বিশ্বাস করি, তাদেরকে আবার ফেরত পাব।”

অর্থমন্ত্রী হিসেবে নিজের প্রথম কার্যদিবসে মঙ্গলবার শেরে বাংলা নগরের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) সাংবাদিকদের একথা বলেন মুস্তফা কামাল।

গত ১০ বছরে আওয়ামী লীগের শাসনামলে বেসরকারি খাতকে আকর্ষণে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও বিনিয়োগ সেভাবে হয়নি বলে হতাশা ছিল।

৫ বছর পরিকল্পনার দায়িত্ব সামলে আসা মুস্তফা কামাল বলেন, “ব্যবসায়ীরা যদি সুযোগ সুবিধা পায়, আমাদের কস্ট অব ডুয়িং বিজনেস যদি কম রাখতে পারি, ইজি ডুয়িং বিজনেস যদি আরও ভালো অবস্থানে নিয়ে যেতে পারি, তাহলে আমি বিশ্বাস করি, শুধু দেশের বিনিয়োগ না, বিদেশি বিনিয়োগও অনেক পাবো।

“বিদেশি বিনিয়োগ অনেক পাব, যেটা আমরা কল্পনাও করতে পারিনি। কারণ আমার সাথে এরমধ্যে অনেকে দেখা করে গেছেন। অনেকে দেখা করেন, এটা সংখ্যায় অনেক।”

আগামী বাজেটের বিষয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “আমার মূল লক্ষ্য হলো এবছরসহ আগামী ৫ বছরের বাজেট হবে উন্নয়ন, প্রবৃদ্ধি, উৎপাদন, রপ্তানি ও কর্মসংস্থানবান্ধব। আমরা প্রত্যেকটা খাতকে বিবেচনায় নিয়ে যে খাতের জন্য যা কিছু প্রয়োজন, আমরা তাদেরকে তাই দিয়ে সাহায্য করব।”

অর্থনীবিদদের আশঙ্কার কথা উড়িয়ে দিয়ে মুস্তফা কামাল বলেন, “আমাদের যারা আছেন তারা সব সময় আশঙ্কার কথা বলেন, আতঙ্কের কথা বলেন, ঝড়-ঝাপ্টার কথা বলেন, টাইফুনের কথা বলেন আর ভূমিকম্পের কথা বলেন। এরকম চিন্তা করলে কেউ কিছু করতে পারবে না।”

ব্যাংক খাত নিয়ে যে সমালোচনা চলছে, বাস্তব চিত্র তত খারাপ নয় বলে দাবি করেন নতুন অর্থমন্ত্রী।

“ততটা খারাপ হলে অর্থনীতিতে এই গতিবেগ থাকত না। আমার অ্যাসেসমেন্ট হল আমাদের আর্থিক খাত, ব্যাংকিং খাত অথবা ফিন্যান্সিয়াল সেক্টর ততটা খারাপ হলে দেশের অর্থনীতির গতিবেগ আসে কোথা থেকে, উন্নয়ন কেমন করে হয়? জিডিপিতে প্রবৃদ্ধি কেমন করে হয়? এটা হতে পারে না।”

অর্থনীতি গতিশীল রাখতে সেসব জায়গায় সংস্কার প্রয়োজন, তা করার কথা বলেন তিনি। 

কর-জিডিপি অনুপাত আরও কমিয়ে আনার উপর জোর দেন নতুন অর্থমন্ত্রী।

“আমি মনে করি, যাদের কর দেওয়া দরকার তাদের সবাইকে করের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। আমি সবাইকে নিয়ে বসব। দুই-তিনটা মিটিং করে এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নিতে পারব। যারা কর দেবেন, তাদের কোনো ক্ষতি না করে কতটা ট্যাক্স আদায় করলে আমাদের জন্য মঙ্গলজনক, সেটাই আমাদের করতে হবে। যদি করের হার কমিয়ে বেশি আহরণ করা সম্ভব হয়, তাহলে সেই কাজটি আমরা করব।”

দারিদ্র্য বিমোচন ও মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে জোর মান্নানের

কাজের ক্ষেত্রে দারিদ্র্য বিমোচন ও সরকারের মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে বেশি গুরুত্ব দেবেন বলে জানিয়েছেন নতুন সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।

গত পাঁচ বছর অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর পূর্ণমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার কাজ শুরু করেন।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী হিসেবে প্রথম দিন অফিস করে মান্নান সাংবাদিকদের বলেন, “দেশের দারিদ্র্য হার কমিয়ে আনতে কার্যক্রম গ্রহণকে আমি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেব। এছাড়াও আমি মেগা প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই।”

তিনি বলেন, “আমাদের চলমান উন্নয়ন প্রকল্পের যথাযথ মান নিশ্চিত করতে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ প্রতিষ্ঠান আইএমইডি শক্তিশালী করার উপর জোর দেবেন। এছাড়াও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোকেও শক্তিশালী করার উপরও তিনি গুরুত্বারোপ করেন।”