৪৬৩৫ কোটি টাকার ই-পাসপোর্ট প্রকল্প যাচ্ছে একনেকে

নাগরিকদের হাতে ইলেকট্রনিক পাসপোর্ট তুলে দিতে সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার।

জাফর আহমেদবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 June 2018, 02:26 PM
Updated : 20 June 2018, 04:04 PM

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রকল্পটি এ বছরই বাস্তবায়ন শুরু করে ২০২৮ সালের জুনের মধ্যে শেষ করবে।

সম্পূর্ণ দেশিয় অর্থায়নের এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে চার হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা।

‘বাংলাদেশে ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন’ শীর্ষক প্রকল্পটির চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য বৃহস্পতিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় তোলা হতে পারে।

বৃহস্পতিবার এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে একনেক চেয়ারপারসন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠক হবে।

বৈঠকের কার্যপত্রে বলা হয়েছে, বহির্বিশ্বের সাথে সামঞ্জস্য রেখে সর্বশেষ উন্নত প্রযুক্তি সম্পন্ন পাসপোর্ট ইস্যু, পাসপোর্টের নিরাপত্তা বৃদ্ধি, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশি পাসপোর্টের গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি এবং ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে বাংলাদেশি নাগরিক ও আগত বিদেশি নাগরিকদের সুষ্ঠুভাবে গমনাগমন নিশ্চিত করতেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে সরকার।

এ প্রকল্পের বিষয়ে পরিকল্পনা কমিশনের আর্থ-সামাজিক অবকাঠামো বিভাগের (বিকল্প দায়িত্ব) সদস্য শামীমা নার্গিস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশি পাসপোর্টকে বিশ্বায়ন করার উদ্দেশ্যেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকার।”

পাসপোর্টের বিশ্বায়নের ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, “ধরুন যুক্তরাষ্ট্রে একজন বাংলাদেশির পাসপোর্টের বিষয়ে জানতে চাইলে ওই পাসপোর্টের নম্বরটা সার্চ দিলেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সকল তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যাবেন।

“ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন হলে বিদেশে বাংলাদেশের ইমেজ বৃদ্ধি পাবে।”

একনেক বৈঠকের কার্যপত্রে আরও বলা হয়, ২০১০ সালে আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল সংস্থার (আইসিএও) গাইডলাইন অনুযায়ী বাংলাদেশ মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) ও মেশিন রিডেবল ভিসা (এমআরভি) পদ্ধতি চালু করে।

কিন্তু এমআরপি ব্যবস্থায় দশ আঙ্গুলের ছাপ ডেটাবেজে সংরক্ষণ না থাকায় একাধিক পাসপোর্ট করার প্রবণতা ধরা পড়ে। এর ফলে ই-পাসপোর্টের প্রয়োজনীয়তা ব্যাপকভাবে অনুভব করে সরকার।

এই পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২৪ এপ্রিল পাসপোর্ট সেবা সপ্তাহ উদ্বোধনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ই-পাসপোর্ট প্রবর্তনের নির্দেশ দেন।

পরবর্তীতে প্রধানমন্ত্রীর জার্মানি সফরের সময় ২০১৭ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সে দেশের প্রতিষ্ঠান ভ্যারিডোস জিএমবিএইচ এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মধ্যে ই-পাসপোর্ট চালুর বিষয়ে একটি সমঝোতা চুক্তি হয়।

তারই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পাসপোর্ট অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে ই-পাসপোর্ট চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।