৩৩৬৮ কোটি টাকায় সংস্কার হবে জেলা মহাসড়ক

নির্বাচনের বছরে দেশের ৫ বিভাগীয় জোনের জেলা মহাসড়কের উন্নয়নে তিন হাজার ৩৬৮ কোটি টাকার পাঁচটি প্রকল্প অনুমোদন করেছে সরকার।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 May 2018, 04:44 PM
Updated : 29 May 2018, 04:44 PM

এসব প্রকল্পের মাধ্যমে মহাসড়ক বিভাগ ২০২০ সালের মধ্যে রাজশাহী, খুলনা, রংপুর, চট্টগ্রাম এবং সিলেট জোনের জেলা মহাসড়কগুলোর উন্নয়ন করবে।

মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘জেলা মহাসড়কসমুহ যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ’ শীর্ষক এসব প্রকল্পের অুনমোদন দেওয়া হয়।

একনেক সভার পর এক সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জানান, “গত বছর অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে দেশের প্রায় সকল সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে এসব সড়ক মেরামতের পাশাপাশি প্রস্থ বাড়িয়ে সড়ক নেটওয়ার্কের মানোন্নয়নের জন্যেই এ প্রকল্পগুলো অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।”

নিরাপদ ও আরামদায়ক এবং সময় ও ব্যয় সাশ্রয়ী সড়ক নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠা করাই এসব প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য বলে জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, প্রকল্পগুলোর মধ্যে রাজশাহী জোনের ব্যয় ধরা হয়েছে সবচেয়ে বেশি, প্রায় ৭৬৭ কোটি টাকা।

এছাড়া খুলনা জোনের জন্য ৭৫৭ কোটি টাকা, রংপুর জোনে ৬৫৪ কোটি টাকা, চট্টগ্রাম জোনে ৬৫২ কোটি টাকা এবং সিলেট জোনে ৫৩৮ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বৈঠকে সড়ক উন্নয়নের এ পাঁচ প্রকল্পসহ প্রায় ৯ হাজার ৫১৯ কোটি টাকা ব্যয়ের ১৩টি উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে।

এর মধ্যে ৬ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে আসবে। ২ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা আসবে প্রকল্প সহায়তা থেকে। আর ৭১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা সংস্থার নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থায়ন করা হবে।

ফরিদপুরের মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের অধীনে নির্মিত হবে প্রায় ২৪ কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ। এ প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ হাজার ২০২ কোটি টাকা।

মন্ত্রী বলেন, বাস্তবায়নাধীন পদ্মাসেতুর মাধ্যমে ঢাকা ও দেশের অন্যান্য স্থানের সঙ্গে মাগুরা জেলার রেল সংযোগ স্থাপন করতেই এ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।

এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন হলে ওই অঞ্চলে বাণিজ্যের প্রসার ঘটার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের উন্নয়ন হবে বলে আশা করছে সরকার।

মন্ত্রী বলেন, “২০২২ সালের এপ্রিলের মধ্যে এ রেলপথ বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রায় ৪৬ বছর আগে ফরিদপুর মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত রেলপথ ছিল। কিন্তু এটা এখন আর ব্যবহার হয় না। তবে কামারখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত কোনো রেলপথ নেই। মধুখালী থেকে কামারখালী পর্যন্ত বিদ্যমান রেলপথটি সংস্কার করে ব্রডগেজ এবং কামারখালী থেকে মাগুরা পর্যন্ত নতুন রেললাইন নির্মিত হবে।”

ত্রিপুরা থেকে আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানির জন্য ‘সূর্যমনিনগর (ত্রিপুরা,ভারত) হতে কুমিল্লা উত্তরে (বাংলাদেশ) বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য ৫০০ মেগাওয়াট এইচভিডিসি  ব্যাক টু ব্যাক স্টেশন নির্মাণ’ প্রকল্পও একনেকের অনুমোদন পেয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, “এ প্রকল্পটি অনুমোদনকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশনা দিয়েছেন, এখন থেকে দুই এবং তিন ফসলের জমিতে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা যাবে না।”

দেশের র্পূবাঞ্চলের ক্রমর্বধমান বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করতে ভারতের ত্রিপুরা ও আসাম থেকে বিদ্যুৎ আমদানির এ প্রকল্প বাস্তবায়নে এক হাজার ৩৪২ কোটি টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

বৈঠকে অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হল-

>> উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাট ও পাটবীজ উৎপাদন এবং সম্প্রসারণ প্রকল্প; ব্যয় ৩৭৬ কোটি টাকা।

>> ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প; ব্যয় ৫৯ কোটি টাকা।

>> সৌর বিদ্যুৎ চালিত পাম্পের মাধ্যমে কৃষি সেচ প্রকল্প; ব্যয় ৪০৭ কোটি টাকা।

>> নগরবাড়ীতে আনুষঙ্গিক সুবধিাসহ নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্প; ব্যয় প্রায় ৫১৪ কোটি টাকা।

>> মেইল প্রসেসিং ও লজিস্টিক সার্ভিস নির্মাণ প্রকল্প; ব্যয় ৩৬৫ কোটি টাকা।

>> আইডেন্টিফিকেশন সিস্টেম ফর এনহেন্সিং একসেস টু সার্ভিসেস প্রকল্প; ব্যয় ১ হাজার ৮৮৩ কোটি টাকা।