পাটের অগ্রযাত্রায় অন্তরায় অর্থ মন্ত্রণালয়: পাট প্রতিমন্ত্রী

পাট পণ্যের প্রসারে সরকার সচেষ্ট হলেও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কারণে কাজ আটকে আছে বলে অভিযোগ করেছেন পাট প্রতিমন্ত্রী মির্জা আজম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 March 2018, 11:47 AM
Updated : 7 March 2018, 10:53 AM

তিনি বলেছেন, “আমাদের পাটের বিরুদ্ধে বিশ্ব ব্যাংক, আইএমএফ ও আমাদের দেশের ভেতরেও অনেক ষড়যন্ত্র আছে। আমার বিশ্বাস, বিশ্ব ব্যাংকের কিছু প্রেতাত্মা আমাদের অর্থ মন্ত্রণালয়ে এখনও বসে আছে।”

কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সরকার ২০ শতাংশ ভর্তুকি দিয়ে থাকে। পাটজাত দ্রব্যকে সেই সুবিধা দিতে একে কৃষিপণ্যের তালিকাভুক্ত করতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা দুই বছরেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় এই অভিযোগ মির্জা আজমের।

সাড়ম্বরে পাট দিবস উদযাপনের আগের দিন সোমবার ঢাকার সিরডাপ মিলনায়তনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনার অর্থ মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তিনি।

পাট প্রতিমন্ত্রী বলেন, “মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ২০১৬ সালে নির্দেশনা দিয়েছেন পাটের বহুমূখী প্রক্রিয়াজাত পণ্যকে কৃষি পণ্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করার জন্য। কিন্তু গত দুই বছর যাবত ফাইল চালাচালি হচ্ছে। আমি মন্ত্রী হয়েও অনেক টেবিলে টেবিলে ঘুরি।

“আমাদের মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা আছেন, যিনি সার্বক্ষণিকভাবে দায়িত্ব পালন করেন। (ওই ফাইল) একবার বাংলাদেশ ব্যাংকে, একবার কৃষি মন্ত্রণালয়ে, আবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে। এই ঘুরপাকের মধ্যেই দুই বছর পার হয়ে গেছে।

“গতকাল পর্যন্ত সর্বশেষ সংবাদ নিয়ে আমি এখানে আসছি। এটা (ফাইলটি) এখন অর্থ মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলে আছে।”

পাট দিবস উদযাপন নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে মির্জা আজম (ফাইল ছবি)

পাট প্রতিমন্ত্রী জানান, এ পর্যন্ত কয়েক দফা অর্থ মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে চিঠি চালাচালি হয়েছে।

“ভাবটা এমন বাংলাদেশে প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্যের তালিকায় এই প্রথম মনে হয় একটা পণ্যের তালিকা দিছে, যার জন্য এত গবেষণা করা লাগতেছে। কিন্তু প্রক্রিয়াজাত কৃষি পণ্যের তালিকায় কিন্তু আরও ৪০টি পণ্য আছে।

“বাংলাদেশের সকল কৃষিপণ্য, যেগুলো বেসরকারি খাত রপ্তানি করে, সবগুলোই কিন্তু প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত এবং ২০ শতাংশ ইনসেনটিভ কিন্তু তারা পাচ্ছে। কিন্তু পাটকে প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতেই এত কিছু হচ্ছে।”

পাট প্রতিমন্ত্রীর অভিযোগের বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কোনো বক্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি।

মির্জা আজম বলেন, “মাননীয় অর্থমন্ত্রী (আবুল মাল আবদুল মুহিত), তিনিই আসলে পাটের বিরোধী। তার কাছে পাটের কিছু গেলেই মানসিকভাবে তিনি মনে হয় এটা অপছন্দ করেন। যার কারণে তার কর্মকর্তারা পাটকে কৃষি পণ্যের তালিকায় তুলতে টালবাহানা করছেন।”

তিনি বলেছেন, গত দুই বছর চিঠি চালাচালির সব ‘রেকর্ড-পত্র’ তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবেন।

মঙ্গলবার পাট দিবস উপলক্ষে পাট মন্ত্রণালয়ের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ‘খুব শিগগির’ এই সমস্যা কেটে যাবে বলে আশাবাদী মির্জা আজম।  

তিনি বলেন, “খুব শিগগির এই পরিস্থিতি থেকে আমরা উত্তরণ করতে পারব এবং আমাদের যারা বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করেন, তারা ব্যাংক ফ্যাসিলিটিজ পাবেন। পাট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সবাই বিভিন্ন সুবিধা পাবেন।”