শনিবার ‘ভোলা গ্যাস ফিল্ড ও জ্বালানি নিরাপত্তা’ শীর্ষক এক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এ মত দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্বের অধ্যাপক বদরুল ইমাম।
সেমিনারের আয়োজন করে ‘ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ’ (এফইআরবি)।
বদরুল ইমাম বলেন, “ভোলায় সম্প্রতি গ্যাস আবিষ্কারের ঘটনায় মনে হচ্ছে এর আশেপাশে অনেক প্রাকৃতিক গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তবে এজন্য নিবেদিত অনুসন্ধান কাযক্রম পরিচালনার প্রয়োজন রয়েছে বলে মত দেন তিনি।
সম্প্রতি দেশের দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ভোলার ভেদুরিয়ায় একটি অনুসন্ধান কূপে গ্যাস পাওয়ার খবর দিয়েছে সরকার। গতবছর শেষ দিকে ভোলার
শাহবাজপুরে বাপেক্সের নতুন কূপে গ্যাস পাওয়ার খবর আসে।
সবমিলিয়ে ভোলায় দেড় ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস আছে বলে সরকারের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে; যা দেশের মোট মজুদের দশ শতাংশের কাছাকাছি।
ভোলায় গ্যাস পাওয়ার আগে দেশের প্রায় সব গ্যাসক্ষেত্রই ছিল সিলেট অঞ্চলে সুরমা বেসিনে। ভোলায় গ্যাস পাওয়ার পর দক্ষিণাঞ্চলে মেঘনা বেসিনে গ্যাস পাওয়ার বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আশাবাদী হয়ে উঠেছেন।
দেশের গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধাকারী সংস্থা বাপেক্স রূপকল্পের মাধ্যমে যে অনুসন্ধান চালাচ্ছে তা ‘ধীর ও সুস্থির এবং গভীর মূল্যায়নের’ মাধ্যমে চালানোর পরামর্শ দেন অধ্যাপক ইমাম।
এ দুটি গ্যাসক্ষেত্রের আশপাশে চর জব্বার, চর জব্বার উত্তর, মনপুরা, মহেশখালী ও সন্দীপেও গ্যাস পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
সেমিনারে ভোলার গ্যাসের ব্যবহার ও গ্যাস নিয়ে সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী।
তিনি বলেন, “গ্যাস তুলতে আরো কূপ দরকার। কয়টা লেয়ারে আছে সেটা জানা দরকার। সেই কাজগুলো আমরা করে যাচ্ছি।
ভোলায় এখন দেড় টিসিএফ মজুদ আছে। এটা আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে বলে আমি আশাবাদী।”
তিনি জানান, একদিকে নিজেদের অনুসন্ধান ও উত্তোলন ত্বরান্বিত করা হচ্ছে, অন্যদিকে আমদানি করে গ্যাস সরবরাহ বাড়ানো হবে।
পর্যায়ক্রমে ভোলায় গ্যাসভিত্তিক ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।
ভোলার গ্যাস বরিশাল ও খুলনাসহ মূল ভূখণ্ডে আনার লক্ষ্যে পাইপলাইন স্থাপনেরও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
এসময় ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে গ্যাস সঞ্চালন লাইন স্থাপনের পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন এবং ভোলায় শিল্পাঞ্চল গড়ে তোলা হবে বলেও জানান তিনি।
এফইআরবির চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকারের সভাপতিত্বে সেমিনারে রাশিয়ার তেল-গ্যাস উত্তোলন ও অনুসন্ধানকারী সংস্থা গ্যাজপ্রমের পক্ষ থেকে একটি উপস্থাপনা দেখানো হয়।
গ্যাজপ্রমের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা পরিচালক তুমানভ সার্গেই উপস্থিত ছিলেন।