এবার বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার পাচ্ছেন আজিজুর ও মাহবুব

বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিশেষ অবদানের জন্য আজিজুর রহমান খান এবং মাহবুব হোসেনকে (মরণোত্তর) পুরস্কার দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার ২০১৭ নামের এই পুরস্কার রোববার দেওয়া হবে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের নেতৃত্বে দেশের চারজন অর্থনীতিবিদের সমন্বয়ে গঠিত একটি জুরি বোর্ড এই পুরস্কারের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইড এর প্রফেসর এমিরেটাস ড. আজিজুর রহমান খান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক মহাপরিচালক ও বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ব্র্যাকের সাবেক নির্বাহী পরিচালক ড. মাহবুব হোসেনকে (মরণোত্তর) মনোনীত করেছে।

এর আগে ২০০০ সালে অধ্যাপক রেহমান সোবহান, ২০০৯ সালে ড. নুরুল ইসলাম, ২০১১ সালে অধ্যাপক মুশাররফ্ হোসেন এবং ২০১৩ সালে অধ্যাপক মোজাফফর আহমদ (মরণোত্তর) এবং ড. স্বদেশ রঞ্জন বোসকে (মরণোত্তর) বাংলাদেশ ব্যাংক পুরস্কার দিয়েছিল।

রোববার বিকাল সাড়ে ৪ টায় রাজধানীর মিরপুরে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) মিলনায়তনে এই পুরস্কার দেওয়া হবে।

এতে প্রধান অতিথি থাকবেন অর্থমন্ত্রী জনাব আবুল মাল আবদুল মুহিত। পুরস্কারপ্রাপ্তরা সম্মাননা হিসেবে একটি করে স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্রেস্ট এবং নগদ দুই লাখ টাকা পাবেন।

আজিজুর রহমান একজন উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ। বর্তমানে তিনি আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়া, রিভারসাইড এর অর্থনীতি বিভাগের এমিরেটাস প্রফেসর হিসেবে কর্মরত।

উন্নয়ন অর্থনীতিতে বিশেষ করে উন্নয়ন পরিকল্পনা, কৃষিভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ও ভূমি সংস্কার এবং আয় বণ্টন ও অসমতা বিষয়ে গবেষণা কর্মে তার অবদান রয়েছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর এবং যুক্তরাজ্যের কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন।

কর্মজীবনে তিনি বিআইডিএস এর গবেষণা পরিচালক, বাংলাদেশ পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের প্রধান, লন্ডন স্কুল অব ইকনমিক্স এর প্রভাষক, আইএলও’র এশিয়ান এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রামের পরিচালক এবং বিশ্ব ব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

তিনি আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর দ্য অ্যাডভান্সমেন্ট অব সাইন্স’র একজন সম্মানীত ফেলো।

মাহবুব হোসেন গ্রামীণ অর্থনীতি ও শিল্প, কৃষিভিত্তিক কাঠামো, ভূমি সংস্কার, আয় বণ্টন, দারিদ্র্য বিমোচন কৃষিতে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ঋণের প্রভাব ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবনমান উন্নয়নে নিবিড় গবেষণা করে দেশে-বিদেশে ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ও কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি নেন। কর্মজীবনে তিনি বিআইডিএস এর মহাপরিচালক, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (ইরি) সোস্যাল সাইন্সেস ডিভিশনের অর্থনীতিবিদ এবং ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি ও সামাজিক বিজ্ঞান বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

কৃষির উন্নয়নে অবদানের জন্য তিনি ১৯৮৫ সালে বাংলাদেশ কৃষি অর্থনীতিবিদ সমিতি থেকে স্বর্ণপদক লাভ করেন। ২০১৬ সালের ৩ জানুয়ারি মারা যান তিনি।