শেষ দিন মঙ্গলবার রাত ৮টার সময়ও রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্মাণাধীন এনবিআর ভবনে মেলায় দেখা যায় শত শত করদাতা বিভিন্ন সেবা নেওয়ার অপেক্ষায়।
যত রাতই হোক রিটার্ন জমা দেওয়ার সুযোগ থাকায় এদিন অফিস শেষ করে মেলায় ছুটে আসেন অনেক করদাতা। মেলায় ঢুকে রিটার্ন ফরম সংগ্রহ করে পূরণ করতে বসে যান তারা। চেয়ার-টেবিল খালি না পেয়ে মেলা প্রাঙ্গনে বিছানো মাদুরে বসেই খুশির মেজাজে কাজ সারেন অনেকে।
করদাতাদের এই কর্মব্যস্থতায় মেলার দরজা খোলা থাকে মধ্যরাত অবধি। রাত পৌনে ১১টার সময়ও রিটার্ন জমা দিচ্ছিলেন অনেকে।
রাত ৮টার দিকে মেলায় একটি লাইনে দাঁড়িয়ে মিরপুরের আজিজুর রহমান বলেন, “আমি ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে চাকরি করি। অফিস শেষ করে রিটার্ন দাখিল করতে এসেছি। ফরম পূরণ করে রিটার্ন জমা দিয়ে ট্যাক্স আইডি কার্ডের জন্য লাইনে দাঁড়িয়েছি এক ঘণ্টা হয়ে গেছে। লাইনের শেষ কোথায় এখনও জানি না। ট্যাক্স কার্ডটা হাতে পেলে বাঁচি।”
তার মতো ট্যাক্স আইডি কার্ডের জন্য লাইনে দাঁড়ানো ষাটোর্ধ্ব মনজুর কাদের তালুকদার বলেন, তিনি একজন লেদার টেকনোলজিস্ট।
“অনেক বছর ধরেই আমি ট্যাক্স দিচ্ছি। এনবিআরে ট্যাক্স দিতে গেলে কর্মকর্তারা আমাদের রিমান্ডের আসামি মনে করে, অনেক প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। আরে বাবা নিজে থেকে কর দিচ্ছি। কিন্তু চোর হিসেবে নানা রকম প্রশ্ন করলে ওখানে কেন যাব? তাই মেলায় এসেছি রিটার্ন দাখিল করতে।”
সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার সময় স্ত্রীকে নিয়ে মেলায় আসেন সিআইডি কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার রহমান।
তিনি বলেন, “অফিস শেষ করে সরাসরি চলে এলাম। এনবিআরে গিয়ে ট্যাক্স দিতে গেলে সকল কিছু এক জায়গায় পাওয়া যায় না। মেলায় সব কিছু এক জায়গায় পাওয়া যায় বলেই এসেছি।”
এনবিআর ভবনের দ্বিতীয় তলায় অনেকগুলো বুথ করে আয়কর জমা নেয় রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সোনালী ও জনতা ব্যাংক।
তবে মেলায় জনসমাগমের তুলনায় টয়লেটের অপ্রতুলতার কথা বলেন তিনি। এজন্য মেলায় নারীদের বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয় বলেও জানান এই ব্যাংক কর্মকর্তা।
মেলায় টয়লেট নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মকর্তা নাজিয়া আফরিন।
তিনি বলেন, অফিস থেকে সরাসরি মেলায় এসে টয়লেট নিয়ে সমস্যায় পড়েছেন।
“আমি আশ্চর্য হয়েছি এত বড় একটা মেলার আয়োজন করে মহিলাদের জন্য মাত্র কয়েকটা টয়লেটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অথচ শত শত মহিলা এখানে এসেছেন। অবশেষ লাইনে দাঁড়িয়ে টয়লেট ব্যবহার করলাম।”