অক্টোবরে রেমিটেন্স বেড়েছে

অক্টোবরে ১১৬ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। এই অংক গত বছরের একই সময়ের চেয়ে প্রায় ১৫ শতাংশ এবং বিগত মাস সেপ্টেম্বরের চেয়ে ৩৫ শতাংশ বেশি।

প্রধান অর্থনৈতিক প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 1 Nov 2017, 02:21 PM
Updated : 1 Nov 2017, 02:24 PM

বাংলাদেশ ব্যাংক বুধবার রেমিটেন্স সংক্রান্ত হালনাগাদ যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যায়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসীরা চলতি ২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) ব্যাংকিং চ্যানেলে ৪৫৫ কোটি ডলার রেমিটেন্স পাঠিয়েছেন।

যা গত বছরের এই চার মাসের চেয়ে প্রায় ৭ শতাংশ বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র শুভঙ্কর সাহা বলেছেন, ঈদের পরের মাসে বরাবরই কম রেমিটেন্স পাঠান প্রবাসীরা। সে কারণে কোরবানির ঈদের পরের মাস সেপ্টেম্বরে কম রেমিটেন্স এসেছিল। অক্টোবর মাসে তা বেড়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত সেপ্টেম্বর মাসে মাত্র ৮৫ কোটি ৩৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। একক মাসের হিসেবে এটা ছিল সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

এর আগে ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৯২ কোটি ৮৮ লাখ ডলার রেমিটেন্স এসেছিল।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন কারণে বেশ কিছু দিন ধরে বাংলাদেশে রেমিটেন্স প্রবাহে ভাটা পড়েছিল। গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরে আগের বছরের চেয়ে প্রায় ১৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ রেমিটেন্স কম আসে।

২০১৭-১৮ অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১১৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার রেমিটেন্স আসে। দ্বিতীয় মাস অগাস্টে আসে ১৪১ কোটি ৮৬ লাখ ডলার।

২০১৪-১৫ অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ (১৫.৩১ বিলিয়ন) ডলারের রেমিটেন্স বাংলাদেশে আসে।

এরপর প্রতিবছরই রেমিটেন্স কমেছে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আড়াই শতাংশ কমে রেমিটেন্স আসে ১ হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার। গত অর্থবছরে তা সাড়ে ১৪ শতাংশ কমে আসে ১ হাজার ২৭৭ কোটি ডলার, যা ছিল আগের ছয় অর্থবছরের মধ্যে সর্বনিম্ন।

 

রেমিটেন্সের উৎস দেশগুলোতে অর্থনৈতিক মন্দা এবং মোবাইল ব্যাংকিংসহ অন্যান্য মাধ্যমে হুন্ডি প্রবণতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বৈধপথে প্রবাসীদের অর্থ কম আসছিল বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

গত ২০১৬-১৭ অর্থবছরের প্রায় পুরো সময় ধরে পড়তির দিকে থাকা রেমিটেন্স চলতি অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-অগাস্ট) কিছুটা ঊর্ধ্বগতি লক্ষ করা যায়। কিন্তু সেপ্টেম্বরে ফের তা কমে যায়।

দেশের অর্থনীতির অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি রেমিটেন্সের নিম্নগতি সরকারের নীতি-নির্ধারকদের কপালে ভাঁজ ফেলেছিল।

রেমিটেন্স বাড়াতে মাশুল না নেওয়াসহ নানা ঘোষণাও দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

অক্টোবরে ১১৫ কোটি ৯০ লাখ ডলারের রেমিটেন্সের মধ্যে সরকারি ছয় বাণিজ্যিক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ২৮ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। দুটি বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে আসে ১ কোটি ৫ লাখ ডলার।

৩৯টি বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৮৫ কোটি ১১ লাখ ডলার। আর নয়টি বিদেশি ব্যাংকের মাধামে আসে ১ কোটি ৩০ লাখ ডলার।

বাংলাদেশের জিডিপিতে ১২ শতাংশ অবদান রাখে প্রবাসীদের পাঠানো এই বৈদেশিক মুদ্রা।

দেশের রেমিটেন্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয়টি দেশ- সৌদিআরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে।