অব্যবস্থাপনা-অনিয়মে জর্জরিত বেনাপোল বন্দর: সানেম

বেনাপোল স্থলবন্দর পরিচালনায় বেশ কিছু ‘অব্যস্থাপনা ও অনিয়ম’ উঠে এসেছে বলে নিজেদের এক গবেষণার বরাত দিয়ে জানিয়েছে অর্থনীতিবিদদের সংগঠন এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং-সানেম।

নিজস্ব প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 Oct 2017, 09:24 AM
Updated : 17 Oct 2017, 09:24 AM

মঙ্গলবার রাজধানীর গুলশান-২ নম্বরে সানেম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে বেনাপোল ও পেট্রাপোলের ভূমিকা নিয়ে করা গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য তুলে ধরা হয়।

বন্দর সংশ্লিষ্ট কাজে যুক্ত দুই দেশের সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ের প্রায় একশজন প্রতিনিধির ওপর করা জরিপ থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করে ওই গবেষণা প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে গবেষণার বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকদের সামনে উপস্থাপন করেন সানেমের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান।

এ বছরের জুলাইয়ে করা জরিপে পাওয়া যায়, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী দৈনিক আট ঘণ্টা বন্দর কার্যকর থাকার কথা থাকলেও বন্দরটিতে গড়ে চার ঘণ্টা করে কাজ হয়েছে।

এছাড়া ভারত থেকে যেখানে প্রতিদিন গড়ে ৩২৫-৩৫০টি পণ্যবাহী ট্রাক বাংলাদেশে এসেছে সেখানে বাংলাদেশ থেকে গিয়েছে গড়ে ৭০-৮০টি ট্রাক।

বেনাপোল বন্দরের পণ্য মজুদ ক্ষমতা ৪০ হাজার মেট্রিক টন, একে প্রয়োজনের তুলনায় খুব কম উল্লেখ করে প্রতিবেদনে জানানো হয়, বন্দরটিতে বর্তমানে মোট ৪৩টি পণ্য রক্ষণাবেক্ষণ ছাউনি আছে, যার মধ্যে সাতটি বন্ধ এবং বাকিগুলোও পুরনো-জরাজীর্ণ।

এছাড়া বন্দরের রাস্তা বেশ সরু (সাড়ে পাঁচ মিটার) হওয়ায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

বন্দরে সব কার্যক্রম কাগজে হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীদের পণ্য খালাসে অপ্রয়োজনীয় সময় ব্যয় হয়, যা গড়ে ১৫-২০ দিন বলে সংশ্লিষ্টদের ওপর করা জরিপ থেকে পেয়েছে সানেম।

বাংলাদেশ ও ভারতের বাণিজ্যের ৮০ শতাংশ বেনাপোল ও পেট্রাপোল দিয়ে হয় জানিয়ে সানেমের নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান বলেন, “বর্তমানে বেনাপোল স্থলবন্দর নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, যা দুই দেশের মধ্য দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের জন্য ক্ষতিকর।”

তিনি বলেন, “এই গবেষণায় আমরা আমদানি-রপ্তানিতে যুক্ত ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে দেখেছি, ৮০ থেকে ৯০ শতাংশই বন্দরের অবকাঠামো, কার্যক্রম পরিচালনার ব্যাপ্তি ও উন্নত প্রযুক্তির অপর্যাপ্ততা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।”

বেনাপোল বন্দরের অবস্থার উন্নয়নের জন্য বেশ কিছু সুপারিশও দিয়েছে সানেম। যার মধ্যে রাস্তা প্রশস্তকরণ, যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন, পণ্য মজুদ স্থান (গুদাম ঘর) বৃদ্ধি, আধুনিক প্রযুক্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা, বন্দরটিকে কার্যত সাত দিন ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার বিষয়টি রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে সানেমের জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী নাজমুল অভি হাসান, গবেষণা সহযোগী জাহিদ ইবনে জালাল ও সাদাত আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।