পরামর্শক কমিটির দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়নে নিজেদের ভূমিকা কী হবে, তা নির্ধারণ করতে এ বৈঠকে বসেন এসব কর্মকর্তা।
Published : 22 Jan 2025, 12:26 AM
রাজস্ব সংস্কারে গঠিত পরামর্শক কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে বিভিন্ন সংস্থার ‘প্রেসকিপশন’ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন শুল্ক ও আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
মঙ্গলবার নিজেদের এক বৈঠকের পর বিসিএস ট্যাকসেশন অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা আশঙ্কা করছি এই কারণে যে, বিভিন্ন রকমের ‘প্রেসক্রিপশন’ বিভিন্ন সময়ে হয়েছে। আমাদের বিভিন্ন রকমের অথরিটি, ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও আইএমএফের প্রেসক্রিপশনের কারণে অনেক সময় অনেক কিছু কিন্তু ‘ডেভিয়েটেড’ (ব্যাহত) হয়েছে।”
পরামর্শক কমিটির দেওয়া প্রস্তাব বাস্তবায়নে নিজেদের ভূমিকা কী হবে, তা নির্ধারণ করতে জাতীয় রাজস্ব ভবনে এ বৈঠক করেন তারা।
‘আপসকামিতা ও স্বার্থের সংঘাত’ বন্ধের লক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে নীতি (পলিসি) প্রণয়ন শাখা আলাদা করার সুপারিশ করেছে পরামর্শক কমিটি।
তারা বলেছে, এনবিআর হবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি বিভাগ, যার প্রধান হবেন জ্যেষ্ঠ সচিব পদমর্যাদা একজন চেয়ারম্যান। তাকে নিয়োগ দেওয়া হবে আয়কর বা শুল্ক ক্যাডার থেকে।
রাজস্ব নীতির প্রধান বা চেয়ারম্যানও হবেন শুল্ক বা আয়কর ক্যাডারের কর্মকর্তা; তার পদমর্যাদাও হবে জ্যেষ্ঠ সচিব।
বর্তমানে রাজস্ব নীতি ও প্রশাসন একত্রে কাজ করছে; যার প্রধান করা হয় প্রশাসন ক্যাডারের একজন সচিব বা জ্যেষ্ঠ সচিবকে। এখন যিনি দায়িত্বরত আছেন, তিনি আয়কর ক্যাডারের হলেও উপসচিব হয়ে সচিবালয়ে গিয়ে সেখান থেকেই সচিব হয়েছেন।
ফারুকী বলেন, “কমিটির সংস্কার প্রস্তাবগুলো আমাদের জন্য অত্যন্ত ইতিবাচক। এসব প্রস্তাব যেন কোনো অবস্থায় ব্যাহত না হয়, জাতীয় স্বার্থের বিরুদ্ধে না যায়, সেই বিষয়ে আমাদের করণীয় বিষয়গুলো নির্ধারণে আলোচনা করেছি।”
কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নের আশঙ্কার কথা তুলে ধরেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে টানেন অর্থবছরের মাঝপথে শতাধিক পণ্যে ভ্যাট বাড়ানোর প্রসঙ্গটি।
তিনি বলেন, “রিসেন্টলি কিছু কিছু পরিবর্তন আনা তাদের ‘প্রেসক্রিপশন’ অনুযায়ী, সেটা কিন্তু বুমেরাং হয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই।
“অর্থ বিভাগ তথা প্রসাশন ক্যাডারের কর্মকর্তারা আইএমএফের সঙ্গে মূল নেগোসিয়েশন করায় তারা নিজেদের সুবিধা দেখে থাকেন।”
তিনি বলেন, “এনবিআর কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে আইএমএফের সঙ্গে বাড়তি ১২ হাজার কোটি টাকা আদায়ের শর্ত মেনে আসেন অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা। ফলে শতাধিক পণ্য ও সেবায় হঠাৎ ভ্যাট বাড়াতে হয় এনবিআরকে।”
উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে আইএমএফের সঙ্গে দর কষাকষিতে অর্থ বিভাগের ‘দুর্বলতা’ ছিল বলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে মন্তব্য করেছিলেন বিশ্ব ব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন।
ভ্যাট বাড়ানোর বিষয়ে তিনি বলেন, “অর্থ বিভাগের তো দায়িত্ব নেগোসিয়েশন করার, তারা ঠিকমত করে নাই।”
রাজস্ব নীতি প্রণয়নে কমিশন গঠনের সুপারিশ, চালাবেন শুল্ক-কর ক্যাডাররা