চট্টগ্রামে মেয়েদের জন্য খেলার মাঠ বানানোর পরিকল্পনা

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক বলেছেন, “আমাদের মেয়েরা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে।”

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 March 2023, 01:30 PM
Updated : 8 March 2023, 01:30 PM

মেয়েদেরকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করতে নির্ধারিত স্থানে খেলার মাঠ করার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম শিশু একাডেমি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন ও মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে আন্তর্জাতিক নারী দিবসের আলোচনাসভায় এ পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

চট্টগ্রামে মেয়েদের জন্য আলাদা কোনো খেলার মাঠ না থাকার কথা তুলে ধরে মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “আমাদের মেয়েরা ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় পুরো সমাজকে নাড়া দিয়েছে। তাদেরকে মাঠ দিতে না পারলে খেলবে কোথায়? ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েদেরকে খেলাধুলা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে উদ্বুদ্ধ করতে নির্ধারিত স্থানে খেলার মাঠ করার পরিকল্পনা রয়েছে।”

জেলা প্রশাসক বলেন, সমাজ ও দেশের উন্নয়নে নারীদের অবদান রয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামেও নারীদের অনেক আত্মত্যাগ। নারীরা কখনও পুরুষদের প্রতিদ্বন্দ্বী নয়।

“জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একজন সফল নারী। নারী সমাজের উন্নয়নের জন্য বিশ্বের কাছে তিনি এখন রোল মডেল।”

তিনি বলেন, “দেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় পুরুষদের পাশাপাশি নারীরাও বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে নারীরা কারিগরি প্রশিক্ষণের মাধ্যমে যোগ্যতার প্রমাণ দিয়ে এখন সব পেশায় সর্বক্ষেত্রে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হচ্ছে। দেশে এমন কোনো পেশা নেই যেখানে মেয়েরা কাজ করতে পারবে না।”

বর্তমান সরকার সব জায়গায় নারী-পুরুষের সমান সুযোগ সৃষ্টি করেছে দাবি করে জেলা প্রশাসক বলেন, “মন-মানসিকতার পরিবর্তন ঘটিয়ে নিজের দক্ষতা ও জ্ঞান দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের উন্নত বাংলাদেশ বিনির্মাণে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হলে নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী নির্যাতন, অ্যাসিড নিক্ষেপ, বাল্যবিবাহ ও ইভটিজিং রোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

“এদেশে নারী-পুরুষের সমতা আছে বলেই দেশ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সকলের সম্মিলিত উদ্যোগে ও সমতার ভিত্তিতে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করা গেলে জাতীয় অগ্রগতি আরও ত্বরান্বিত হবে। নারী জাতির ক্ষমতায়ন ছাড়া দেশের কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন সম্ভব নয়। নারীরা নিজেদেরকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে পারলে সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে রক্ষা পাবে।”

‘চট্টগ্রাম হবে দেশের প্রথম স্মার্ট জেলা’

জেলা প্রশাসক বলেন, “চট্টগ্রামকে বাংলাদেশের প্রথম স্মার্ট জেলা করতে চাই। এজন্য ১৫ উপজেলা থেকে তিনটি করে আইডিয়া বা ধারণা এবং মহানগর থেকে পাঁচটি- মোট ৫০টি আইডিয়া নেওয়া হবে। যাদের সঠিক ধারণা ও পরিকল্পনায় স্মার্ট জেলা হবে তাদেরকে পুরস্কৃত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।”

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নেজারত ডেপুটি কালেক্টর মো. তৌহিদুল ইসলাম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে প্রধানমন্ত্রীর চারটি ভিত্তি- স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গর্ভনমেন্ট ও স্মার্ট সোসাইটি বাস্তবায়নে ও সরকারিভাবে যেসব সেবা দেওয়া হয় সেগুলো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে আইডিয়া আহ্বান করা হবে।

আগামী ১০ মার্চ থেকে ১০ এপ্রিল পর্যন্ত উপজেলা পর্যায়ে আইডিয়া পাঠানোর সময় নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান মো. তৌহিদুল।

পরবর্তীতে ইউনিয়ন পর্যায় থেকে বাছাই করে উপজেলা এবং সবশেষ জেলায় প্রস্তাব তৈরি করা হবে; পরে সেটি ঢাকায় পাঠানো হবে বলে জানান তিনি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মু. মাহমুদ উল্লাহ মারূফের সভাপতিত্বে এবং জান্নাতুল ফেরদাউসের সঞ্চালনায় সভায় মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাধবী বড়ূয়া স্বাগত বক্তব্য দেন।

এছাড়া বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা- ইলমা’র প্রধান নির্বাহী জেসমিন সুলতানা পারু, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের এরিয়া ম্যানেজার জনি রোজারিও এবং জেলা শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা মো. মোছলেহ্ উদ্দিন, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইপসা’র আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক ফারহানা ইদ্রিছ বক্তব্য দেন সভায়।

আলোচনাসভার আগে শিশু একাডেমির মাঠে নারী সমাবেশ হয়।