রিকশা গ্যারেজ হিসেবে ভাড়া নিয়ে ভেজাল প্রসাধনীর কারখানা

সেখানে তৈরি ভেজাল সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট ও ক্রিমের মত সামগ্রীতে ভুয়া লেবেল ও স্টিকার লাগিয়ে রিয়াজুদ্দিন বাজারের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা হত।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Feb 2023, 01:12 PM
Updated : 5 Feb 2023, 01:12 PM

চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে ‘জে বি কেয়ার বাংলাদেশ’ নামের একটি ভেজাল প্রসাধনী তৈরির কারখানায় বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন ও ভেজাল পণ্য ধ্বংস করা হয়েছে। 

রোববার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইয়ের এই যৌথ অভিযানে কারখানার ব্যবস্থাপক মো. খায়রুজ্জামান রাজুকে এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি চার লাখ টাকা জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। 

অভিযান পরিচালনাকারী ম্যাজিস্ট্রেট জানান, কারখানার মালিক বাবুল নামের এক ব্যক্তি। তার বিরুদ্ধে মামলা করবে পুলিশ। ওই কারখানায় কর্মরত তিনজন শ্রমিক অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের মুচলেকা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 

নগরীর বায়েজিদ এলাকার শাহ হাবিবুল্লাহ রোড এলাকায় ওই কারখানা রিকশা গ্যারেজ হিসেবে ভাড়া নিয়ে সেখানে ভেজাল প্রসাধনী উৎপাদন করা হচ্ছিল। সেখানে তৈরি ভেজাল সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট ও ক্রিমের মত সামগ্রীতে ভুয়া লেবেল ও স্টিকার লাগিয়ে রিয়াজুদ্দিন বাজারের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি করা হত। 

ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রতীক দত্ত বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সেখানে অনুমোদন ছাড়াই প্রসাধন সামগ্রী তৈরি করা হচ্ছিল। অথচ ফ্যাক্টরি করতে ফায়ার সার্ভিসের ছাড়পত্র ও কলকারখানা প্রতিষ্ঠান পরিদর্শকের ছাড়পত্র লাগে, সেসব কিছুই তাদের নেই। এমনকী ট্রেড লাইসেন্সও দেখাতে পারেনি। যেসব পণ্য জব্দ করা হয়েছে সেগুলো তৈরির অনুমোদনও তাদের নেই।” 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “টিনশেডের একতলা ওই কারখানার জায়গাটি মালিকের কাছ থেকে রিকশা গ্যারেজ করার কথা বলে ভাড়া নেয়া হয়েছিল।  অভিযানে বিপুল পরিমাণ অনুমোদনহীন সাবান, শ্যাম্পু, ডিটারজেন্ট, গ্লিসারিন, ফেসওয়াশ, ক্রিম, ব্যাথ্যানাশক ক্রিমসহ বিভিন্ন ভেজাল প্রশাধনী সামগ্রী জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে। এসব পণ্য তারা রিয়াজুদ্দিন বাজারের বিভিন্ন দোকানে সরবরাহ করে।” 

অভিযানে ওই কারখানায় পাওয়া বিভিন্ন রকম সাবানে বিএসটিআই এর অনুমতি ছাড়াই বিএসটিআইয়ের লোগো ব্যবহার করতে দেখা গেছে বলেও জানান তিনি। 

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, “মালিককে অভিযানের সময় পাওয়া যায়নি। মালিকের বিরুদ্ধে বায়েজিদ থানা পুলিশ নিয়মিত মামলা করে ব্যবস্থা নেবে।” 

অভিযানের বিষয়ে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “ভেজালবিরোধী এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে। রিয়াজউদ্দীন বাজারসহ অন্য যেসব বাজারে এগুলো বিক্রি হয় সেসব জায়গায় আমরা অভিযান চালাব।” 

এরআগে ১ ফেব্রুয়ারি নগরীর রিয়াজুদ্দিন বাজারে আমতল এলাকার বাহার মার্কেটে জেলা প্রশাসন ও বিএসটিআইয়ে যৌথ অভিযানে শ্যাম্পু, সাবান, বেবি লোশনসহ বিভিন্ন পণ্যের উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের নাম ও মূল্য মেলেনি। 

সেদিন সেখানকার কাজী স্টোরকে ৮০ হাজার টাকা, বশর ট্রেডিংকে ৩০ হাজার টাকা ও ইমারত ট্রেডার্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে অভিযান শেষ করতে হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতকে।