মহিউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার ডাক

২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 15 Dec 2022, 03:51 PM
Updated : 15 Dec 2022, 03:51 PM

পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকীতে প্রয়াত নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীকে স্মরণ করে দলের নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা।

বৃহস্পতিবার নগরীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণসভায় তারা এ আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, “মহিউদ্দিন চৌধুরীর একজন সাহসী ও আপসহীন জননেতা ছিলেন। অধিকার আদায়ে আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সব সময় অগ্রভাগে ছিলেন। কখনও পিছপা হননি। দলীয় ও রাজনৈতিক স্বার্থে তিনি আমাদেরকে এক ও অভিন্ন রেখেছিলেন।

মহিউদ্দিন চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে মোশাররফ বলেন, “আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি সব সময় আস্থা ও ভরসার প্রতীক ছিলেন। তাই আজ বলতে ইচ্ছে হয় আমরা অতীতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর পরামর্শে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের বড় পদবীধারী নেতারা এক ও অভিন্ন ছিলাম।

“আজও সময় এসেছে এক ও অভিন্ন থাকার এবং দলকে শক্তিশালী করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের বিজয় নিশ্চিত করার।”

মহিউদ্দিন চৌধুরীর বড় ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, “বিএনপি-জামাত এবং স্বাধীনতার বিরোধী শক্তি এখন থেকেই তাদের বিদেশি লবিস্টদের দিয়ে কীভাবে শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে ঠেলে ফেলে দেওয়া যায় সেজন্য চক্রান্তের জাল বোনা শুরু করে দিয়েছে। এই চক্রান্তের জবাব দিতে হলে সংগঠনকে নবীন প্রবীণের সমন্বয়ে এক সুতোয় গেঁথে সাংগঠনিক ভিত্তি সুদৃঢ় করতে হবে এবং জনগণের মাঝে দলের পরিধি বিস্তৃত করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে নগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “মহিউদ্দিন চৌধুরী যতটুকু সফল রাজনীতিক ছিলেন, একজন মানবিক মানুষ ছিলেন। মানুষের বিপদে-আপদে সংকটে তিনি সব সময় মানুষের জন্য নিবেদিত ছিলেন। একারণেই মহিউদ্দিন চৌধুরী সর্বজনীন।” 

মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, “প্রয়াত জননেতা মহিউদ্দিন ভাই একজন সফল রাজনৈতিক ব্যক্তি। কেননা তিনি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সময়ের দাবি অনুযায়ী সঠিক রাজনৈতিক সিদ্ধান্তটি গ্রহণ করতে পারতেন।”

সব সংকীর্ণতা ও ব্যক্তি স্বার্থ পরিহার করে দলকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে আহ্বান জানান তিনি।

নগর কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক চৌধুরী হাসান হাসনীর সঞ্চালনায় স্মরণসভায় বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল, খোরশেদ আলম সুজন, জহিরুল আলম দোভাষ ডলফিন ও আলতাফ হোসেন চৌধুরী বাচ্চু, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

এর আগে সকালে চশমা হিল জামে মসজিদের পাশে কবরস্থানে বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন চৌধুরীর কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় দল ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী এবং সাধারণ মানুষ।

১৯৪৪ সালের ১ ডিসেম্বর রাউজানের গহিরায় জন্ম নেওয়া মহিউদ্দিন ৭৪ বছর বয়সে ২০১৭ সালের ১৫ ডিসেম্বর ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

নগর ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মহিউদ্দিন চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখ সমরে অংশ নেন। সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রতিরোধের ডাক দিয়ে ‘চট্টগ্রাম ষড়যন্ত্র মামলার’ আসামি হলে দেশত্যাগে বাধ্য হন।

১৯৯৪ সাল থেকে টানা ১৬ বছর তিনি ছিলেন চট্টগ্রামের মেয়র। প্রায় দুই যুগ নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকার পর ২০০৬ সালের ২৭ জুন নগর কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পান মহিউদ্দিন। মৃত্যু পর্যন্ত এই পদে ছিলেন তিনি।