নাশকতা করলে রাজপথেই জবাব: নাছির

২০০৫ সালে দেশজুড়ে সিরিজ বোমা হামলার বার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগ ও তাদের সমমনা সংগঠন।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2022, 03:03 PM
Updated : 17 August 2022, 03:03 PM

বিএনপি-জামায়াত সভা-সমাবেশ করে নাশকতা করলে রাজপথেই তাদের সমুচিত জবাব দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন।

বুধবার বিকালে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদ মার্কেট চত্বরে সিরিজ বোমা হামলার ১৭তম বার্ষিকীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

চট্টগ্রাম সিটির সাবেক মেয়র নাছির বলেন, “বিএনপি মুখে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার কথা বললেও আসলে তারা মুক্তিযুদ্ধের অবিনাশী চেতনাবিরোধী সবচেয়ে ক্ষতিকারক অপশক্তি। এই দলটি ক্ষমতায় থেকে পাকিস্তানি ভাবধারায় দেশকে পরিচালিত করেছে।

“এমনকী এই দলের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান ’৭১ সালে জাতিসংঘে মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে বক্তব্যদানকারী শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছেন এবং কুখ্যাত রাজাকার ক্যাপ্টেন আব্দুল হালিমকে মন্ত্রীত্ব পদ দিয়েছেন। একইভাবে জিয়ার সহধর্মিনী খালেদা জিয়া যুদ্ধাপরাধী মতিউর রহমান নিজামী ও আল মুজাহিদিকে মন্ত্রীত্ব দিয়েছিলেন।”

বিএনপিকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের বিরোধী ‘একটি অপশক্তি’ আখ্যা দিয়ে আ জ ম নাছির বলেন, “এরা কখনও বাংলাদেশ চায় না এবং বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে তাকে বানচাল করতে চায়।

“এদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে। তাদের মিছিল সমাবেশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। কিন্তু মিছিল সমাবেশের নামে নাশকতা করলে জনগণের জানমালের ক্ষতি সাধন করলে রাজপথেই তাদেরকে সমুচিত জবাব দেওয়া হবে।”

সমাবেশে নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দীন চৌধুরী বলেন, “বিএনপি ও জামাতের প্রত্যক্ষ ইন্ধনে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট একমাত্র মুন্সীগঞ্জ জেলা ছাড়া দেশের ৬৩টি জেলায় পরিকল্পিত লাগাতার সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটে।

“এই ঘটনার মধ্য দিয়ে সন্ত্রাসের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যুক্ত হয়। এই অপশক্তির কাছে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে দাঁড়িয়েছে। এই অপশক্তি নির্মূল ছাড়া আমরা কেউ নিরাপদ নই।”

তিনি বলেন, “উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বিএনপি জামাত এখনও জঙ্গিবাদের পৃষ্ঠপোষকতা করে যাচ্ছে। তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল বুনে এদেশকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাই তাদেরকে তিল পরিমাণ ছাড় দেওয়া হবে না।”

নগর কমিটির প্রচার সম্পাদক শফিকুল ইসলাম ফারুকের সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টা সফর আলী, সাংগঠনিক সম্পাদক নোমান আল মাহমুদ ও শফিক আদনান, সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মশিউর রহমান চৌধুরী।

এদিকে বুধবার সকালে নগরীর লালদীঘি চত্বরে সিরিজ বোমা হামলার বার্ষিকীতে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রজন্ম, বৃহত্তর চট্টগ্রাম’।

সভার প্রধান বক্তা সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের কেন্দ্রীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেদারুল আলম চৌধুরী বেদার বলেন, “জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের দোসরদের সাথে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির কোনো কম্প্রোমাইজ হতে পারে না।

“মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লাখ শহীদের রক্তে অর্জিত প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও যুদ্ধাপরাধীদের দোসর সাম্প্রদায়িক অপশক্তির অভয়ারণ্য হতে পারে না। যারা বাংলাদেশকে জঙ্গি রাষ্ট্র বানাতে চেয়েছিল তাদেরকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ঘৃণা করতে হবে।”

সংগঠনের সভাপতি নূরে আলম সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে ও রাজীব চন্দের সঞ্চালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন সহসভাপতি সাইফুন নাহার খুশী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পলাশ বড়ুয়া, চট্টগ্রাম জেলা সভাপতি মোহাম্মদ কামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক দীপন দাশ,মুহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, নবী হোসেন সালাউদ্দিন, ইয়াকুব মুন্না প্রমুখ।