চার দিনেও পুরো নেভেনি চিনির গুদামের আগুন

“গুদামটির ওপরের অংশে বিভিন্ন পকেটে এখনও আগুন রয়ে গেছে। ওইসব আগুন নেভানোর জন্য আমাদের টিম কাজ করছে,” বলেন ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 March 2024, 08:46 AM
Updated : 7 March 2024, 08:46 AM

চট্টগ্রামে কর্ণফুলীর তীরে এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিলের অপরিশোধিত চিনির গুদামে লাগা আগুন চার দিনেও পুরোপুরি নেভেনি।

বৃহস্পতিবার দুপুরেও কর্ণফুলী থানাধীন ইছানগর এলাকায় ওই গুদামে কাজ করে যাচ্ছিলেন ফায়ার সর্ভিসের কর্মীরা। তাদের বিভিন্ন স্টেশনের ১৫টি ইউনিট গুদামের টিনির স্তূপের মধ্যে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছিলেন।

আগ্রাবাদ ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দীনমনি শর্মা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চিনির গুদামের আগুন ৮০ শতাংশ পর্যন্ত নিভেছে, বাকি ২০ শতাংশ নেভানোর কাজ চলছে।”

গত সোমবার বিকাল ৪টার আগে আগে সুগার মিলের চারটি গুদামের মধ্যে একটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিট প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় রাত সাড়ে ১০ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তাতে মূল কারখানা ও অন্য গুদামগুলোতে আগুন ছড়ানো ঠেকানো যায়। কিন্তু ১ নম্বর গুদামের আগুন পুরোপুরি নেভানো যায়নি এখনও।

কর্ণফুলী থানার মইজ্জারটেক সংলগ্ন ইছাপুর এলাকায় ১১ মেগাওয়াটের এস আলম পাওয়ার প্লান্টের পাশেই এস আলম রিফাইন্ড সুগার মিল। পাওয়ার প্ল্যান্টের বিদ্যুৎ দিয়েই চিনি কারখানার উৎপাদন কার্যক্রম চলে।

কোম্পানির কর্মকর্তারা বলছেন, রোজার মাস সামনে রেখে মিলের চারটি গুদামে মোট চার লাখ টন অপরিশোধিত চিনি মজুদ করা হয়েছিল। পরিশোধনের পর ওই চিনি বাজারে যাওয়ার কথা। এর মধ্যে ১ নম্বর গুদামের এক লাখ টন চিনি পুড়ে গেছে।

এক নম্বর গুদামটি ৬৫ হাজার ৭০০ বর্গফুটের। উচ্চতা পাঁচ তলা ভবনের সমান। সেখানে বোঝাই করা ছিল অপরিশোধিত চিনি।

ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা দীনমনি শর্মা বলেন, “গুদামটির ওপরের অংশে বিভিন্ন পকেটে এখনও আগুন রয়ে গেছে। ওইসব আগুন নেভানোর জন্য আমাদের টিম কাজ করছে। রোবট ফায়ার ফাইটার, ফোম, কেমিকেলসহ বিভিন্নভাবে আগুন নেভানোর কাজ হচ্ছে। আজ রাতের মধ্যেই আগুন পুরো নিভিয়ে ফেলার চেষ্টায় আছি আমরা।”

ফায়ার সার্ভিসের উপসহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ হারুন পাশা এর আগে বলেছিলেন, অপরিশোধিত চিনি মূলত কার্বন, হাইড্রোজেন ও অক্সিজেনের একটি যৌগ। কার্বন ও অক্সিজেন দুটোই আগুন জ্বলতে সহায়তা করে। ৩৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রায় অপরিশোধিত চিনি গলে গিয়ে ভোলাটাইল কেমিকেলে (ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিক) পরিণত হয়।

মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে গুদামের সামনের রাস্তায় অপরিশোধিত চিনি গলে লালচে কালো কাদার মত তরল ছড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সেই তরল কর্ণফুলীতে গিয়ে ইতোমধ্যে দূষণ ঘটাতে শুরু করেছে।

পোড়া চিনির বর্জ্য মিশে পানিতে দ্রবিভূত অক্সিজেন কমে যাওয়ায় সোমবার বিকাল থেকেই নদীর দুই তীরে ভেসে উঠতে শুরু করেছে মাছ ও জলজ প্রাণী। ওই বর্জ্য যেন আর নদীতে না যায়, তা নিশ্চিত করার তাগিদ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।