‘প্রবারণা পূর্ণিমা’র দিন রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান

আষাঢ়ী থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত পালনের শেষ দিন হচ্ছে প্রবারণা পূর্ণিমা। ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ পড়েছে এবার ২৮ অক্টোবর।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 Oct 2023, 08:20 AM
Updated : 24 Oct 2023, 08:20 AM

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় উৎসব ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’র দিন রাজনৈতিক দলগুলোকে কর্মসূচি প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদ।

আষাঢ়ী থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত তিন মাস বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বর্ষাব্রত পালনের শেষ দিন হচ্ছে ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’। এবারে ‘প্রবারণা পূর্ণিমা’ পড়েছে ২৮ অক্টোবর।

ওইদিন ঢাকার মহাসামবেশের ডাক দিয়েছে বিএনপি। যে সমাবেশ থেকে আন্দোলের পরবর্তী চূড়ান্ত কর্মসূচি আসার কথা রয়েছে।

অন্যদিকে সেদিন বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেদিন রাজধানী দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন দল।

মঙ্গলবার চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে ২৮ অক্টোবরের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রত্যাহারের দাবি জানান প্রবারণা পূর্ণিমা উদযাপন পরিষদের নেতারা।

পরিষদের সদস্য সচিব সনৎ বড়ুয়া বলেন, “বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের এক গভীর তাৎপর্য্য রয়েছে। এটা আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব। শুধু বৌদ্ধদের নয়, এটা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হয়েছে। সব ধর্মের মানুষ এতে অংশ নেয়।

“সেদিন দূর দুরান্ত থেকে মানুষ মন্দিরগুলোতে আসবে। সকাল থেকেই ধর্মীয় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, যা দিনব্যাপী চলবে। যে সকল রাজনৈতিক দল কর্মসূচি দিয়েছে তারা যদি একদিন পিছিয়ে কর্মসূচি পালন করে তাহলে আমরা প্রতি বছরের ন্যায় নির্বিঘ্নে প্রবারণা পালন করতে পারব।”

পরিষদের নেতা মিথুন রশ্মি বড়ুয়া বলেন, “আমাদের সব রাজনৈতিক দলগুলোই মানবতার কথা বলে। মানবিক দিক বিবেচনা করলে ২৮ অক্টোবর প্রবারণার দিনে কর্মসূচি পালন না করে পরে যে কোনো সময় করতে পারে।

প্রবারণার দিনে রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে বৌদ্ধরা একটু ‘আতঙ্কে আছে’ জানিয়ে রশ্মি ব্ড়ুয়া বলেন, “কেবল

চট্টগ্রামের জন্য নয়। ঢাকাসহ দেশের সব জেলায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা আছে। নানা প্রান্ত থেকে বৌদ্ধরা সেদিন ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতায় অংশ নিতে আসা-যাওয়া করবেন।“

সনৎ বড়ুয়া বলেন, “গুজব ও সাম্প্রদায়িক উসকানিদাতাদের নিবৃত্ত করতে রামুসহ বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান এবং বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ওপর হামলার মামলাগুলো দ্রুত বিচার কাজ শেষ করার জোর দাবি জানাচ্ছি।”

এসব মামলার সর্বশেষ পরিস্থিতি বিষয় নিয়ে রশ্মি বড়ুয়া বলেন, “শুধুমাত্র জ্ঞানজ্যোতি ভিক্ষু হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ হয়েছে। রামুর ঘটান থেকে শুরু করে অন্য বৌদ্ধ ভিক্ষুদের ওপর হামলা, সব মামলার বিচার কাজ ঝুলে আছে। এতে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের মনের মধ্যে ব্যথা আছে, সংশয় আছে।

“হয়ত মামলার সাক্ষীরা যথযাথভাবে উপস্থিত হতে পারছে না। অথবা টেকনিক্যাল কোনো সমস্যা আছে। হয়ত ভিকটিমরাও আদালতে হাজির হতে পারছেন না। আইনগত প্রক্রিয়ায় কিছু নিয়ম কানুন আছে। প্রশাসনের উচিত ভিকটিম ও সাক্ষীরা যাতে হাজির হতে পারে সে বিষয়টা নিশ্চিত করা।”

সংবাদ সম্মেলন থেকে, প্রবারণা পূর্ণিমার দিনে সরকারি ছুটিরও দাবি জানানো হয়।

এছাড়া ফানুস উড়িয়ে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি, সায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক ও সামাজিক কর্মসূচি উদ্বোধন করার চর্চা বন্ধের আহ্বান জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সনৎ বড়ুয়া বলেন, “ফানুস ওড়ানোরেএকটা ধর্মীয় কারণ ও রীতি আছে। এ ধরণের কর্মসূচিতে ফানুস ওড়ানো বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করার শামিল।”

পরিষদের আহ্বায়ক স্বরূপ বিকাশ বড়ুয়া বিতান, প্রধান সমন্বয়কারী অমরেশ বড়ুয়া চৌধুরী, অর্থ সচিব তাপস বড়ুয়া, পরিষদ নেতা আদর্শ কুমার বড়ুয়া, পরিতোষ বড়ুয়া, স্বপন কুমার বড়ুয়া, কানন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।