পরীর পাহাড় নিয়ে জেদাজেদির কিছু নেই: প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব

চট্টগ্রামের পরীর পাহাড় নিয়ে ‘জেদাজেদির’ কিছু নেই মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেছেন, সবার জন্য যা ভালো হয় তাই করা হবে।

চট্টগ্রাম ব্যুরোবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Sept 2021, 03:16 PM
Updated : 25 Sept 2021, 03:16 PM

শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পরীর পাহাড়ে বিভাগী কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় পরিদর্শন এবং চট্টগ্রাম জেলায় কর্মরত বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাথে এক মত বিনিময় সভায় অংশ নেন মুখ্য সচিব।

এসময় গণমাধ্যমকর্মীরা পরীর পাহাড় নিয়ে প্রশ্ন করতে চান জানালে মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, “ওটা নিয়ে আমি এখন কথা বলতে রাজি না। এই সমস্ত কথা বলে কোনো লাভ আছে নাকি? এখানে কী হচ্ছে, না হচ্ছে সেটা নিয়ে দেখা যাক। সরকার চিন্তা-ভাবনা করছে। যেটা ভালো হয় সেটা হবে।

“এটা নিয়ে আমার বক্তব্য বা কারো বক্তব্য ইমেটেরিয়াল।” 

এসময় প্রশ্নকর্তা সাংবাদিকের উদ্দেশ্যে মুখ্য সচিব বলেন, “আপনার বাড়ি কোথায় ভাই? চট্টগ্রামে তো? তাহলে চট্টগ্রামে যেটা ভালো হয়, সেটাই তো চান। সরকার কী কোনো জনবিরোধী কাজ করে গণতান্ত্রিক সরকার হয়?”

পরীর পাহাড়ে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা বিষয়ে জানতে চাইলে আহমদ কায়কাউস বলেন, “এটা নিয়ে সরকারির বিভিন্ন ডিপার্টমেন্ট আছে তারা দেখবে। এখানে জেদাজেদিরও কিছু নেই। এটা বিভাগীয় কমিশনার বা জেলা প্রশাসক কারো তো এটা পৈত্রিক সম্পত্তি না।

“এটা বাংলাদেশের সম্পত্তি। বাংলাদেশের মানুষের যাতে উপকার হয়, চট্টগ্রামবাসীর যাতে উপকার হয় সেটা হবে। এটা নিয়ে কারো জেদাজেদিরও কিছু নেই।”

আইনজীবীরা নতুন দুই ভবন নিমার্ণের ঘোষণা দিয়েছেন জানিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুখ্য সচিব বলেন, “মানুষের বসবাসের জন্য যেমন বাসস্থান দরকার, অফিস করার জন্যও জায়গা দরকার। এটা নিয়ে এত টানাহেঁচড়ার কিছু নেই।

“আপনি চট্টগ্রামের উপকার চান না অপকার? আমরা চেষ্টা করব, চট্টগ্রামের উপকার করার জন্য। আমারও জন্ম এখানে। আমরা মুসলিম হাইস্কুলের ছাত্র ছিলাম। এদিক দিয়ে উঠে (পরীর পাহাড়ে অন্য পাশ দিয়ে নামার একটা জায়গা ছিল। সেটি আছে এখন? সেই জায়গাটাতো নেই। এখন এটা নিয়ে এত কথা বলার তো দরকার নেই। টেনশন তৈরি করার কোনো মানে হয় না।” 

জেলা প্রশাসন ও আইনজীবী সমিতির পরষ্পর বিরোধী অবস্থানে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে আহমদ কায়কাউস বলেন, “এখানে উদ্ভূত পরিস্থিতির কিছু নেই। কিচ্ছু হবে না। এখানে জেদাজেদির কিছু নেই। আইনজীবীরা কী মঙ্গল গ্রহ থেকে আসছেন নাকি। যেটা সবার জন্য ভালো হবে সেটা করা হবে।”

পরীর পাহাড়ে ওঠার ঢালে আইনজীবীদের বর্তমান পাঁচটি ভবনের পাশে আরও দুটি নতুন ভবন করা নিয়ে আইনজীবী সমিতি ও জেলা প্রশাসনের দ্বন্দ্বের বিষয়টি চলতি সেপ্টেম্বরের শুরুতে সামনে আসে।

এর মধ্যেই পরীর পাহাড়ে নতুন স্থাপনা নির্মাণ না করতে এবং অবৈধ স্থাপনা অপসারণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একটি প্রস্তাব উত্থাপন করা হলে তাতে সায় দেন প্রধানমন্ত্রী।

এরপর পরীর পাহাড়কে প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকা হিসেবে সংরক্ষণে জেলা প্রশাসনের প্রস্তাব বিবেচনা করার কথাও জানিয়েছে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়।

পরীর পাহাড়, আদালত ভবন ও সংলগ্ন এলাকার টিলা শ্রেণির ভূমির বিষয়ে সম্প্রতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে মতামত চাওয়া হলে অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম মহানগর কার্যালয়ের কর্মকর্তারা পরিদর্শন শেষে মতামত দেন। তাতে জাননো হয়, আইনজীবীদের ৫ ভবনের পরিবেশ ছাড়পত্র নেই।

জেলা প্রশাসক বলে আসছেন, পরীর পাহাড়ে সরকারি স্থাপনার বাইরে তিন শতাধিক অবৈধ অনুমোদনহীন স্থাপনা আছে। আইনজীবীদের ভবন নির্মাণে নিয়মনীতির তোয়াক্কা করা হয়নি এবং লিজ নেয়া জমির অতিরিক্ত জমি দখলে নিয়ে ভবনগুলো নির্মাণ করা হয় বলে দাবি জেলা প্রশাসনের।

বিপরীতে আইনজীবী সমিতির দাবি, সিডিএর অনুমোদন নিয়ে তারা ভবনগুলো নির্মাণ করেছেন। নতুন দুই ভবন নির্মাণ কাজ ঠেকাতেই ‘মিথ্যাচারের’ আশ্রয় নিয়ে মন্ত্রীপরিষদ বিভাগে কাছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন প্রতিবেদন উত্থাপন করেছে বলেও দাবি আইনজীবীদের।

আরও পড়ুন