যুদ্ধাপরাধী সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন প্রফুল্ল। সাকা চৌধুরীকে দণ্ড নিয়ে ফাঁসিতে ঝুলতে হয়েছিল।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর বেসরকারি ইম্পেরিয়াল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রফুল্ল সিংহ মারা যান।
তার বয়স হয়েছিল ৮১ বছর। তিনি দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক।
কিডনি রোগে আক্রান্ত প্রফুল্লের কোভিড-১৯ সংক্রমণ ধরা পড়েছিল।
ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “কোভিড-১৯ পজিটিভ আসায় হাসপাতালের কোভিড জোনে রেখেই উনার চিকিৎসা চলছিল।”
রাউজানের শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পদে থাকা প্রফুল্ল রঞ্জন ইম্পেরিয়াল হাসপাতালের পরিচালনা গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন।
মেয়র দেবাশীষ পালিত জানান, প্রফুল্ল সিংহের সৎকারের বিষয়ে পরিবার সিদ্ধান্ত নিলে তা জানানো হবে।
যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদেরকে যে কয়টি অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়, তার মধ্যে রাউজানের কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয় ও কুণ্ডেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা নূতন চন্দ্র সিংহকে হত্যাও রয়েছে।
১৯৭১ সালের ১৩ এপ্রিল সকালে রাউজানের গহিরার কুণ্ডেশ্বরীতে নিজ বাড়ির মন্দিরের সামনে হত্যা করা হয় দানবীর নূতন চন্দ্রকে। পাকিস্তানি বাহিনীর সঙ্গে সালাউদ্দিন কাদের নিজেই নূতন চন্দ্রকে গুলি চালিয়েছিলেন।
১ ডিসেম্বর ছিল শহীদ নূতন চন্দ্র সিংহের ১২০তম জন্মবার্ষিকী। এর একদিন পরই ছেলে প্রফুল্ল মারা গেলেন।
১৯৭০ সালের নির্বাচনের আগে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাউজানে নূতন চন্দ্র সিংহের বাড়িতে গিয়েছিলেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের পর চট্টগ্রামের রাজনীতিবিদ এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষক ও তাদের পরিবারের সদস্যরা কুণ্ডেশ্বরী ভবনে আশ্রয় নেন। পরে তাদের নিরাপদে ভারতে পাঠাতে সহায়তা করে নূতন চন্দ্র সিংহ।
অন্যরা নিরাপদে দেশ ছাড়লেও নিজ বাড়িতেই ছিলেন নূতন চন্দ্র সিংহ। তার বড় ছেলে সত্যরঞ্জন সিংহ এবং ছোট ছেলে প্রফুল্ল রঞ্জন সিংহ ভারতে চলে গিয়েছিলেন।
বাবার হত্যার বিচারসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সোচ্চার ছিলেন প্রফুল্ল সিংহ।